বন্দিবিনিময়ে মুক্তি পেলেন মার্কিন সাংবাদিকসহ ২৬ জন

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২ আগস্ট ২০২৪, ০৯:২২

রাশিয়া ও পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে স্নায়ুযুদ্ধের পর সবচেয়ে বড় বন্দিবিনিময় হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত
রাশিয়া ও পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে স্নায়ুযুদ্ধের পর সবচেয়ে বড় বন্দিবিনিময় হয়েছে।তুরস্কের মধ্যস্থতায় এই বন্দি বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের সাংবাদিক ইভান গার্শকোভিচসহ মুক্তি পেয়েছেন উভয় পক্ষের ২৬ জন।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্স জানায়, রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের জেলে আটক তাদের ১০ বন্দির বিনিময়ে মার্কিন ও জার্মানসহ ১৬ জন বন্দি মুক্তি পেয়েছেন। মুক্তি দেওয়ার পর বন্দীদের আঙ্কারার মাধ্যমে নিজ নিজ দেশে পাঠানো হচ্ছে।
রাশিয়ার কারাগার থেকে ছাড়া পাওয়া ১৬ জনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের তিন নাগরিক, একজন মার্কিন গ্রিন কার্ডধারী, পাঁচজন জার্মান ও সাতজন রুশ রাজনৈতিক ভিন্নমতাবলম্বী রয়েছেন।
এর আগে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে এক যুগ ধরে বন্দী থাকা রুশ অস্ত্র ব্যবসায়ী ভিক্টর বাউতের মুক্তি দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। বিনিময়ে রাশিয়াকে মুক্তি দিতে হয় মার্কিন বাস্কেটবল তারকা ব্রিটনি গ্রাইনারকে।
এদিকে তুরস্কের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাশিয়ার ১০ বন্দির মধ্যে দুটি শিশুও রয়েছে। এসব বন্দিরা যুক্তরাষ্ট্র, নরওয়ে, স্লোভেনিয়া, পোল্যান্ড ও জার্মানির কারাগারে ছিলেন।
রাশিয়ায় বন্দি থাকা সাংবাদিক ইভান গার্শকোভিচের সঙ্গে মুক্তি পেয়েছেন সাবেক মার্কিন নৌ সেনা পল হুইলেন, রুশ-মার্কিন দ্বৈত নাগরিক অলসু কুরমাশেভা ও মার্কিন গ্রিন কার্ডধারী কারা মুর্জা। এই চার ব্যক্তির মুক্তির বিষয়টি বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও নিশ্চিত করেছেন। তিনি বন্দিবিনিময়ের এই চুক্তিকে কূটনৈতিক কীর্তি হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
সাংবাদিক ইভান গার্শকোভিচকে গত বছর গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে তাকে ১৬ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। আর সাবেক মার্কিন নৌ কর্মকর্তা হুইলেনকে গ্রেপ্তার করা হয় ২০২০ সালে। মস্কোর অভিযোগ, তিনি গোয়েন্দা কাজে জড়িত ছিলেন। মার্কিন অনুদানে চলা রেডিও ফ্রি ইউরোপ/রেডিও লিবার্টির সাংবাদিক কুরমাশেভাকে গ্রেপ্তার করা হয় গত বছর। এই নারী সাংদিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য প্রচার করেছেন।
সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মী কারা-মুর্জাকে গ্রেপ্তার করা হয় ২০২২ সালে। রাশিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার তৎপরতা চালানো ও অসত্য তথ্য ছড়ানোর অভিযোগে তাঁকে ২৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।
বন্দিবিনিময়ের বিষয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বিরোধী ব্যক্তিত্ব প্রয়াত অ্যালেক্সি নাভালনির ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত লিওনিদ ভলকভ বলেন, ঐতিহাসিক এই বন্দিবিনিময় অনেকের জন্য আনন্দের খবর হলেও তাঁর জন্য কষ্টের। কারণ নাভালনি বেঁচে থাকলে তারও এই চুক্তির আওতায় মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল।
এদিকে এই বন্দিবিনিময় চুক্তির আওতায় মুক্তি পাওয়া রুশ নাগরিকদের মধ্যে অন্যতম হলেন হিতম্যান ভাদিম ক্রাসিকভ। রুশ গোয়েন্দা সংস্থা এফএসবির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এই ব্যক্তি জার্মানির কারাগারে ছিলেন।