জাতিসংঘের প্রতিবেদন
কোটা আন্দোলনে ৬৫০ জনের মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৭ আগস্ট ২০২৪, ০৮:৪৬

গতকাল শুক্রবার (১৬ আগস্ট) জেনেভা থেকে ১০ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তর (ওএইচসিএইচআর)। ফাইল ছবি
সরকারি চাকুরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনে গত ১৬ জুলাই থেকে ১১ আগস্ট পর্যন্ত বিক্ষোভ এবং পরবর্তী সহিংসতায় অন্তত ৬৫০ বাংলাদেশি প্রাণ দিয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তর (ওএইচসিএইচআর)। গতকাল শুক্রবার (১৬ আগস্ট) জেনেভা থেকে ১০ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সংস্থাটি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে বিক্ষোভ ও বিক্ষোভের পর সংঘাত দমনের ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে বলপ্রয়োগের গুরুতর ও বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ রয়েছে। শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ সমাবেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেডের পাশাপাশি নানা রকম প্রাণঘাতী আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করেছেন।
বাংলাদেশের গণমাধ্যম এবং আন্দোলনে যুক্তদের দেওয়া তথ্য উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৬ জুলাই থেকে ১১ আগস্ট পর্যন্ত বিক্ষোভ এবং পরবর্তী সহিংসতায় অন্তত ৬৫০ বাংলাদেশি প্রাণ দিয়েছেন।
জাতিসংঘ বলেছে, বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালানোর জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেলিকপ্টার ব্যবহার সহিংসতার মাত্রাকে তীব্রতর করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ১২ জুলাই থেকে ৩ আগস্ট পর্যন্ত শুধু ঢাকায় ২৮৬টি ফৌজদারি মামলা হয়। এসব মামলায় ২ হাজার জনকে শনাক্ত উল্লেখ করে এবং অন্তত সাড়ে ৪ লাখ অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়, যাদের মধ্যে অনেকেই বিরোধী দলের নেতা-কর্মী। বাংলাদেশে প্রাথমিক তথ্য বিবরণীতে (এফআইআর) প্রায়ই শত শত ব্যক্তিকে ‘অজ্ঞাতনামা’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়, যা নির্বিচার গ্রেপ্তার কিংবা আটকের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে ঢাকাসহ সারা দেশে হাজার হাজার মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়। তল্লাশিচৌকি বসিয়ে মানুষের মুঠোফোন দেখে দেখে পুলিশের সহিংসতার প্রমাণ মুছে ফেলা হয়। গ্রেপ্তার হওয়া বেশির ভাগ মানুষকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে হাজির করা হয়নি, আইনি সুরক্ষা নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়নি, এমনকি তারা কোথায় কীভাবে আছেন, সে তথ্যও পরিবারকে জানানো হয়নি।
প্রসঙ্গত, গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণবিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যেতে বাধ্য হন। পরে ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশের শাসনভার গ্রহণ করে।