
ভারতে ধর্ষণ-হত্যার প্রতিবাদে চিকিৎসকদের শাটডাউন কর্মসূচি। ছবি: সংগৃহীত
পূর্ব ভারতে এক চিকিৎসককে ভয়াবহভাবে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় তীব্র আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলো। ঘটনার পর থেকে সড়কে বিক্ষোভ করছে চিকিৎসা পেশাজীবীরা। তারা দেশব্যাপী কর্মবিরতির আহাবান জানাচ্ছে।
গত সপ্তাহে পশ্চিমবঙ্গের একটি হাসপাতালে ৩১ বছর বয়সী এক নারী চিকিৎসককে ধর্ষণের পর নারকীয়ভাবে হত্যা করা হয়। এরপর থেকেই উত্তাল হয়ে পড়েছে পশ্চিমবঙ্গ সহ গোটা ভারত। এ খবর দিয়েছে অনলাইন জিও নিউজ।
এতে বলা হয়, ভয়াবহ এ ঘটনা কেন্দ্র করে এখন গোটা ভারতের চিকিৎসকরা ক্ষোভে ফেটে পড়ছেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের বরাতে গণমাধ্যমটি জানিয়েছে, ভারতের চিকিৎসকদের বৃহৎ সংগঠন ইন্ডিয়ান মেডিকেল এসোশিয়েশন (আইএমএ) দেশজুড়ে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) থেকে শনিবার (১৭ আগস্ট) সকাল পর্যন্ত জরুরি পরিষেবা ব্যতীত সকল প্রকার মেডিকেল পরিষেবা না দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে সংগঠনটি। গত এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় ধর্মঘটের সম্মুখীন হয়েছে ভারত। মেডিক্যালের অভ্যন্তরে নারী চিকিৎসকদের নিরাপত্তা জোরদার করার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
চিকিৎসকদের চলমান এ বিক্ষোভের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। গতকাল শুক্রবার (১৬ আগস্ট) তারা চিকিৎসকদের সঙ্গে রাস্তায় আন্দোলনে শরীক হওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
এছাড়া এ বিক্ষোভে বলিউড তারকা, অভিনেত্রী সহ দেশের বিভিন্ন শ্রম-পেশাজীবী মানুষও একাত্মতা প্রকাশ করেছে। তারা ধর্ষকদের দ্রুত গ্রেফতার করে শাস্তির আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছে।
নিরাপত্তাহীনতার কারণেই নারীদের প্রতি এমন সহিংস আচরণ করার সুযোগ পাচ্ছে অপরাধীরা বলে দাবি করেছে চিকিৎসক সমাজ। তারা রাজ্য সরকারের ব্যর্থতাকেও দায়ী করছে। ২০১২ সালে দিল্লিতে এক ছাত্রীকে গণধর্ষণের পরে ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তন এনে কঠোর সাজার ব্যবস্থা করে সরকার। কিন্তু চিকিৎসকরা বলছেন কঠোর আইন থাকা সত্ত্বেও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি প্রশাসন।
এ সপ্তাহের শুরুতে এক নারী চিকিৎসককে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় পশ্চিমবঙ্গের আরজি কর মেডিকেলে। গত সপ্তাহের বৃহস্পতিবার রাতে হাসপাতালে নিহত চিকিৎসক দিবাগত রাত দুইটায় নৈশভোজ সেরে জরুরি বিভাগের চারতলায় একটি সম্মেলনকক্ষে বিশ্রাম নিতে যান। পরে গত শুক্রবার সকালে তার মরদেহ পাওয়া যায়।
ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে দেখা গেছে ওই চিকিৎসকের শরীরে বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন। তাকে শ্বাসরোধ করার প্রশাণও পাওয়া গেছে। শরীরে পাওয়া গেছে রক্তক্ষরণের চিহ্ন। মূলত এ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদেই উত্তাল হয়ে পড়েছে পশ্চিমবঙ্গ সহ গোটা ভারত।