মণিপুরে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে হামলার চেষ্টার পর কারফিউ জারি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৫৮

মণিপুরে জাতিগত দাঙ্গা চলছে। ছবি: সংগৃহীত
নতুন করে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুরে। মন্ত্রী-বিধায়কদের বাড়িতে হামলার পর মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের বাড়িতেই হামলার চেষ্টা চালিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা। এসময় দরজা ভেঙে জোর করে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করে বিক্ষোভকারীরা।
রাজ্যটির তিনজন মন্ত্রী ও ছয় জন বিধায়কের বাড়িতে হামলার পর এঘটনা ঘটলো।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাজধানী ইম্ফলে অনির্দিষ্টকালের কারফিউ জারি করা হয়েছে। এছাড়া রাজ্যটির বেশ কয়েকটি জেলায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ইন্টারনেটও।
আজ রবিবার (১৭ নভেম্বর) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
বিক্ষোভকারীদের থামাতে কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করেছে পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী। এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ইম্ফলে অনির্দিষ্টকালের কারফিউ জারি করা হয়েছে। সাত জেলায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ইন্টারনেট।
মূলত গত বছরের মে মাস থেকে মণিপুরের অবস্থা বেশ অস্থিতিশীল। তবে গত সপ্তাহ থেকেই নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে উত্তর-পূর্ব ভারতের এই রাজ্যটিতে। কুকি বিদ্রোহীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে এই উত্তেজনা ছড়ায়।
সেই সংঘর্ষে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছিল। এরপরই নিখোঁজ হয়ে যায় ৮ মাসের শিশুসহ ৬ জন। অভিযোগ উঠেছিল অপহরণের। গত শুক্রবার মণিপুরের একটি নদী থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই রাজ্যজুড়ে নতুন করে অশান্তি শুরু হয়। শনিবার সকালেই মণিপুরের তিনজন মন্ত্রী ও ৬ জন বিধায়কের বাড়িতে হামলা করে ক্ষিপ্ত জনতা। এরপরই তড়িঘড়ি প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইম্ফল পূর্ব ও পশ্চিমে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ জারি করা হয়।
এছাড়া রাজ্যের ৭ জেলায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ইন্টারনেট। এরপরে বিকেলে সরকারের ওপরে ক্ষোভ উগরে দিয়েই বিক্ষুব্ধ জনতা মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের বাড়িতে হামলা চালানোর চেষ্টা করে। তবে কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে কোনোমতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে নিরাপত্তা বাহিনী।
এদিকে পূর্ব, পশ্চিম ইম্ফলে কারফিউ জারি করা হয়েছে অনির্দিষ্টকালের জন্য। বিষ্ণুপুর, থৌবাল, কাঙ্কপোকপি, চূড়াচন্দপুরসহ ৭ জেলায় ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মণিপুর সরকারের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের আফস্পা পর্যালোচনা ও প্রত্যাহারের অনুরোধও জানানো হয়েছে।
প্রায় দেড় বছর আগে ২০২৩ সালের মে মাসে কুকি ও মেইতেই উপজাতির মধ্যে সাম্প্রতিক দাঙ্গা শুরু হয়। শেষ কয়েক মাস পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক থাকলেও রাজ্যটি আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। মূলত উপজাতিদের জন্য নির্ধারিত কোটা নিয়ে এই সংঘাতের সৃষ্টি হয়।