Logo
×

Follow Us

আন্তর্জাতিক

যুক্তরাজ্যে ঢুকলে গ্রেপ্তার হতে পারেন নেতানিয়াহু

Icon

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১৫:০২

যুক্তরাজ্যে ঢুকলে গ্রেপ্তার হতে পারেন নেতানিয়াহু

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাজ্যে গেলে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে। নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়ার পর যুক্তরাজ্য এ ইঙ্গিত দিল।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন ডাউনিং স্ট্রিটের একজন মুখপাত্র এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট করে কিছু বলতে রাজি হননি। তবে তিনি বলেছেন, সরকার তার ‘আইনি বাধ্যবাধকতা’ পূরণ করবে।

যুক্তরাজ্যসহ আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের অন্য সদস্যদেশগুলো চুক্তি অনুযায়ী এ আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কার্যকর করতে বাধ্য।

গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের অভিযোগে গত বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত নেতানিয়াহু এবং ইসরায়েলের সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় নেতা মোহাম্মদ দেইফের বিরুদ্ধেও।

যুক্তরাজ্যসহ আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের অন্য সদস্যদেশগুলো চুক্তি অনুযায়ী এ আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কার্যকর করতে বাধ্য। এ অবস্থায় নেতানিয়াহু যদি যুক্তরাজ্যে যান, তবে তিনি আটক হবেন কি না, তা ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল। জবাবে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের মুখপাত্র বলেন, তিনি ‘অনুমানমূলক’ বিষয় নিয়ে মন্তব্য করতে চান না।

তবে মুখপাত্র বলেন, ব্রিটিশ সরকার তার আইনি বাধ্যবাধকতা পূরণ করবে।

যুক্তরাজ্যের ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্ট অ্যাক্ট ২০০১ অনুযায়ী, সর্বোচ্চ এ আদালত যদি কোনো গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন, তাহলে একজন মনোনীত মন্ত্রী অনুরোধটি একজন উপযুক্ত বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তার কাছে পাঠান। ওই বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা পরোয়ানাটি যুক্তরাজ্যে কার্যকর করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেন।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর মুখপাত্র নিশ্চিত করেছেন যে দেশের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক আইনের অধীন থাকা বাধ্যবাধকতাগুলো সব সময়ই মেনে চলে যুক্তরাজ্য সরকার।

এ প্রক্রিয়ায় কোন মন্ত্রীকে নিযুক্ত করা হবে, সে বিষয় নিশ্চিত করতে পারেননি মুখপাত্র। যুক্তরাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল লর্ড হারমারের কাছ থেকে কোনো আইনি পরামর্শ চাওয়া হয়েছে কি না, সে ব্যাপারেও জানতে চাওয়া হয়েছিল। তবে মুখপাত্র এর জবাব দেননি।

সাধারণত যুক্তরাজ্যে সারা বিশ্ব থেকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ও প্রত্যর্পণের যেসব অনুরোধ আসে, সেগুলো কার্যকর করার আগে প্রাথমিক যাচাই–বাছাইয়ের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি বিশেষ দলের কাছে পাঠাতে হয়। যুক্তরাজ্যের আইসিসি–সংক্রান্ত আইন অনুযায়ী, সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার ও হস্তান্তর করা উচিত কি না, সে বিষয়ে আদালতই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। 

আইসিসির পরোয়ানা জারির পর ডাউনিং স্ট্রিট বলেছে, যুক্তরাজ্যের সরকার আইসিসির স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠা চায় তারা।

ইতোমধ্যে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে জারি হওয়া এ গ্রেপ্তারি পরোয়ানার নিন্দা জানিয়েছেন। তাঁর মতে, ইসরায়েল ও হামাস ‘সমতুল্য’ নয়।

অবশ্য কয়েকটি ইউরোপীয় দেশের কর্মকর্তারা আদালতের ওই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। তারা সিদ্ধান্ত কার্যকর করার ঘোষণা দিয়েছেন।

এদিকে হামাসের সামরিক কমান্ডার মোহাম্মদ দেইফের বিরুদ্ধেও আইসিসি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলেও তাঁকে গত জুলাইয়ে হত্যা করার দাবি করেছে ইসরায়েল। তিনি আদৌ বেঁচে আছেন কি না, সেটি স্পষ্ট নয়।

প্রসঙ্গত, আইসিসির প্রধান কৌঁসুলি করিম খান প্রথম গত মে মাসে নেতানিয়াহু ও গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করতে আন্তর্জাতিক এই সর্বোচ্চ আদালতের কাছে অনুরোধ জানিয়েছিলেন। আদালত বলছেন, গাজাবাসীকে গণহারে ক্ষুধায় রাখার পেছনে নেতানিয়াহুর ‘অপরাধমূলক দায়’ থাকার গ্রহণযোগ্য ভিত্তি রয়েছে।

নেতানিয়াহু ও গ্যালান্ট—দুজনকেই গাজায় ‘ক্ষুধাকে যুদ্ধাস্ত্র’ হিসেবে ব্যবহার করায় অভিযুক্ত করেছেন আদালত। এ বক্তব্যের মধ্য দিয়ে মূলত আদালত গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত উপত্যকাটিতে খাদ্যসামগ্রী ও মানবিক ত্রাণ সরবরাহে পদ্ধতিগত উপায়ে বাধা দিয়ে চলার ঘটনাকে বুঝিয়েছেন। এর বাইরে আদালত এ দুই নেতাকে ‘হত্যা, নির্যাতন ও অন্যান্য অমানবিক কর্মকাণ্ডে’ যুক্ত থাকায় অভিযুক্ত করেন।


Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫