কেউ চুরি করে ধরা পড়লে আমরা সাধারণত শাস্তি দিয়ে থাকি। কিন্তু চুরি করলে শাস্তি হিসেবে চোরকে খেয়ে ফেলতে হবে- এমন কথা সভ্যসমাজে কেউ কোনো দিন শুনেছে বলে মনে হয় না। তবে অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে, পাপুয়া নিউগিনির কোরোবাই নামে এক আদিবাসী গোষ্ঠী চুরির শাস্তি হিসেবে চোরকে খেয়ে ফেলে!

এই উপজাতির মানুষ নির্জন জঙ্গলে প্রস্তর যুগের মানুষের মতো জীবন যাপন করে। কেউ কেউ পোশাক পরে না। তারা ধনুক ও তীর ব্যবহার করে শিকার করে। ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত নৃতাত্ত্বিকরা ইন্দোনেশিয়ার দক্ষিণ পাপুয়া ও হাইল্যান্ড পাপুয়া প্রদেশে যাওয়ার আগে কোরোবাইরা জানতই না, তারা ছাড়া পৃথিবীতে অন্য কোনো মানুষ আছে।

সম্প্রতি মার্কিন অভিযাত্রী ও ব্লগার ড্রিউ বিনস্কি পাপুয়া নিউগিনির নরখাদক কোরোবাই আদিবাসীদের খোঁজে পৃথিবীর সবচেয়ে বিচ্ছিন্ন জঙ্গল হিসেবে পরিচিত একটি এলাকায় যান। তিনি এর আগে কোরোবাইদের নিকটতম প্রতিবেশী মমুনা উপজাতির সঙ্গেও কিছুদিন ছিলেন। তাদের কাছ থেকেই হিংস্র কোরোবাই মানুষ সম্পর্কে জানতে পারেন।

তিনি জানান, কোরোবাইরা ক্ষুধা বা পুষ্টির জন্য মানুষ খায় না। মূলত কাউকে শাস্তি দিতে তারা এটা করে। আপনি যদি কোনো কিছু চুরি করেন, তা হলে তারা আপনাকে আগুনে ছুড়ে মারবে ও খেয়ে ফেলবে। কোরোবাইদের ধারণা, খাকুয়া নামে একটি দুষ্ট রাক্ষস মানুষের ভেতরে ঢুকে সেই মানুষটিকে ভেতর থেকে খেতে শুরু করে। একসময় ওই মানুষটি ডাইনি বা খারাপ মানুষে পরিণত হয়। এই খারাপ মানুষ আর কারো ওপর ভর করতে পারে। এমনকি তারা বন্ধু বা পরিবারের সদস্যের মতো ছদ্মবেশ ধারণ করতে পারে।

ফলে কেউ চুরি করলে তার ওপর খাকুয়া ভর করেছে বলে বিশ্বাস করে কোরোবাইরা। এ জন্য এমন কাউকে পেলে নিজেদের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষায় অনুষ্ঠান করে ওই অপরাধীকে খেয়ে ফেলে তারা।

কোরোবাইদের ভাষ্য, ‘মানুষের মাংসের স্বাদ অনেকটা বুনো শূকরের মতো। এই উপজাতিরা মানুষের চুল, নখ ও যৌনাঙ্গ ছাড়া শরীরের প্রতিটি অংশ খায়। তবে ১৩ বছরের কম বয়সীরা এই মাংস খেতে পারে না। কারণ কোরোবাইদের ধারণা, খাকুয়া খেলে শিশুদের শরীরে এটি ভর করতে পারে।’