সুইডেনে কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় বিতর্কিত ব্যক্তি গুলিতে নিহত

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ৩০ জানুয়ারি ২০২৫, ২০:১৮

কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় বিতর্কিত ইরাকি বংশোদ্ভূত সালওয়ান মোমিকা। ছবি: সংগৃহীত
২০২৩ সালে সুইডেনে মুসলিমদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় বিতর্কিত ইরাকি বংশোদ্ভূত সালওয়ান মোমিকা গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
স্থানীয় একাধিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল বুধবার (২৯ জানুয়ারি) গভীর রাতে স্টকহোমের সোদারতালজে এলাকায় তার বাসস্থান থেকে গুলিবিদ্ধ দেহ উদ্ধার করা হয়।
৩৮ বছর বয়সি মোমিকার রহস্যজনক মৃত্যুর খবরে ২০২৩ সালের একটি পুরোনো বিতর্ক আবার সামনে এসেছে। ওই বছর তার একাধিকবার কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় বিশ্বজুড়ে মুসলিম সম্প্রদায়ের তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। বিভিন্ন দেশে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ হয়।
এই ঘটনার জেরে সুইডেনের স্টকহোম আদালতে মামলা হয়। আজ ওই মামলার রায় ঘোষণার কথা ছিল, তবে তার আগেই মোমিকার মৃত্যুর ঘটনা প্রকাশ্যে আসে।
ইরাকি বংশোদ্ভূত সালওয়ান মোমিকা ২০২৩ সালে সুইডেনে মুসলিমদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরআন পুড়িয়ে বিশ্বজুড়ে সমালোচিত হয়।
সুইডেনের পুলিশ প্রশাসন তাকে কোরআন পোড়ানোর অনুমতি দিয়েছিল, যা সে সময় বিতর্কের সৃষ্টি করে। পুলিশের বক্তব্য ছিল, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সবার অধিকার, তাই তারা এতে হস্তক্ষেপ করতে পারেনি। তবে পরবর্তী সময়ে তার বিরুদ্ধে ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগ আনা হয়।
২০২৩ সালের বিতর্কের পর সুইডেনের অভিবাসন কর্তৃপক্ষ তাকে দেশ থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়। তবে ইরাকে ফেরত পাঠানো হলে তার প্রাণনাশের আশঙ্কা ছিল বলে তাকে ২০২৪ সালের এপ্রিল পর্যন্ত অস্থায়ী আবাসিক পারমিট দেওয়া হয়।
সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, মোমিকা উত্তর ইরাকের নিনেভে প্রদেশের কারাকোশ জেলার আল-হামদানিয়া এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। তিনি মুসলমান ছিলেন না, বরং অ্যাসিরিয়ান ক্যাথলিক পরিবারে বড় হয়েছেন।
২০০৬ থেকে ২০০৮ সালের মধ্যে ইরাকে গৃহযুদ্ধ চলাকালে তিনি অ্যাসিরিয়ান প্যাট্রিয়টিক পার্টিতে যোগ দেন এবং মসুলে দলের সদর কার্যালয়ে নিরাপত্তারক্ষী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
২০১৪ সালে মসুল আইএসআইএসের নিয়ন্ত্রণে গেলে তিনি 'পপুলার মবিলাইজেশন ফোর্স' (পিএমএফ)-এ যোগ দেন। পরে ২০১৭ সালে তিনি জার্মানিতে পালিয়ে যান এবং ২০১৮ সালে সুইডেনে আশ্রয়ের আবেদন করেন।