দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থার (সার্ক) পুনরুজ্জীবন প্রশ্নে ‘সন্ত্রাসবাদ’ নিয়ে বাংলাদেশকে সতর্ক করেছে ভারত। গত সপ্তাহে ওমানের রাজধানী মাস্কাটে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনকে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এ সতর্ক বার্তা দিয়েছেন। 

গতকাল শুক্রবার দিল্লিতে এক সংবাদ সম্মেলনে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়ওয়াল এ তথ্য জানিয়েছেন।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে গতকাল সাংবাদিকেরা নানা বিষয়ে প্রশ্ন করেন। এক প্রশ্নের জবাবে জয়সওয়াল বলেন, ‘মাস্কাটের বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন সার্ক পুনরুজ্জীবিত করার প্রসঙ্গটি তোলেন। তাঁকে বলা হয়েছে, দক্ষিণ এশিয়ার সবাই জানে কোন দেশ ও তার কী ধরনের কর্মকাণ্ড সার্ককে কোণঠাসা করে রেখেছে। সন্ত্রাসবাদের স্বাভাবিকীকরণ করা বাংলাদেশের উচিত নয়।’

ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরে ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে ভারতীয় সেনাশিবিরে ভয়াবহ সন্ত্রাসবাদী হামলা হয়েছিল। এ হামলার পর সার্ক সম্মেলন গতি হারায়। তখন ওই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে ভারত বলেছিল, সন্ত্রাসবাদ ও আলোচনা একসঙ্গে চলতে পারে না।

গতকালের সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের উপদেষ্টাদের বিভিন্ন সময়ে করা ভারত-বিষয়ক মন্তব্য নিয়েও প্রশ্ন করেন সাংবাদিকেরা। তাঁদের প্রশ্নের জবাবে জয়সওয়ার বলেন, ‘বাংলাদেশের উপদেষ্টাদের মন্তব্যের ওপর ভারত নজর রাখছে। এসব মন্তব্য অবশ্যই দুই দেশের কাজকর্ম ও সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে সহায়ক নয়। এসব মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া কী, তা তাদেরই (বাংলাদেশের) ভেবে দেখা উচিত।’

সম্প্রতি দিল্লিতে বাংলাদেশে ও ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি ও বিএসএফের মহাপরিচালক পর্যায়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই বৈঠকের পর বিজিবি মহাপরিচালক বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশে ৫ আগস্টের পালাবদলের পর সংখ্যালঘু নির্যাতনের ব্যাপারে ভারতের অভিযোগগুলো অতিরঞ্জিত ও মিডিয়ার সৃষ্টি।’

গতকাল জয়সওয়ালের সংবাদ সম্মেলনে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘গত কয়েক মাসে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর কী হয়েছে, তা সবাই জানে। সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার ব্যাপারে ভারত বারবার উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।’

জয়সওয়াল আরও বলেন, ‘সম্প্রতি ওয়াশিংটনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকেও বাংলাদেশের সংখ্যালঘু প্রসঙ্গে কথা বলেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি এ বিষয়ে ভারতের উদ্বেগের কথা মার্কিন প্রেসিডেন্টকে অবহিত করেছেন।’