গাজায় ফের ইসরায়েলি হামলা, নিহত দুই শতাধিক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৮ মার্চ ২০২৫, ১০:৩৫

ইসরায়েলি হামলায় নিহত এক কিশোরীর মরদেহ নাসের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সংগৃহীত
পবিত্র রমজান মাসকে উপেক্ষা করে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা জুড়ে সোমবার রাত থেকে বিমান হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল। এখন পর্যন্ত ২০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
গাজার হামাস নিয়ন্ত্রিত সরকারি গণমাধ্যম অফিসের বরাতে এমনটাই জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
১৯ জানুয়ারি থেকে যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর গাজায় এটিই ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় বিমান হামলা। নতুন করে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে সমঝোতায় পৌছানো সম্ভব হয়নি। জাতিসংঘে নিযুক্ত ইসরায়েলি প্রতিনিধি ড্যানি ড্যানন জানিয়েছেন, গাজায় আটককৃত ইসরায়েলিদের মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত হামলা চলবে।
ইসরায়েল দাবি করেছে, হামাসের সামরিক ও রাজনৈতিক নেতারা এবারের হামলার লক্ষ্যবস্তু। তবে আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামলাগুলো বেসামরিক এলাকায় হচ্ছে এবং নিহতদের মধ্যে বহু নারী ও শিশুও রয়েছে।
আল জাজিরা অ্যারাবিকের প্রতিনিধি জানিয়েছেন, যুদ্ধবিরতি কার্যত পুরোপুরি ভেঙে ফেলেছে ইসরায়েল। গাজার খান ইউনিসের আবাসান শহরের পূর্বাঞ্চলে ইসরায়েলি ট্যাংক থেকে গোলাবর্ষণ করা হচ্ছে।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীও পুনরায় স্থল অভিযান শুরুর হুমকি দিয়েছে এবং বলেছে, যতদিন প্রয়োজন হবে- ততদিন এই হামলা অব্যাহত থাকবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে।
ইসরায়েলি সংবাদ সংস্থা হারেৎজে প্রকাশ হওয়া ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদের (পিআইজে) এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইচ্ছাকৃতভাবে যুদ্ধবিরতিতে পৌছানোর সব প্রচেষ্টাকে নস্যাৎ করার পর ইসরায়েল গাজায় নির্মূল অভিযান শুরু করেছে।
বিবৃতিতে পিআইজে আরও বলেছে, নেতানিয়াহু ও তার ‘রক্তপিপাসু নাৎসি সরকার’-এর এসব কর্মকান্ড প্রতিরোধের উপর তাদের শ্রেষ্টত্ব দেবে না। তারা ১৫ মাসের অপরাধ ও রক্তপাতের মধ্যে যা অর্জন করতে ব্যর্থ হয়েছে- তা এবারও অর্জন করতে পারবে না।
ইসরায়েল এমন সময় গাজায় হামলা শুরু করল- যখন যুক্তরাষ্ট্রও ইয়েমেনের ইরান সমর্থিত হুতি গোষ্ঠীর উপর একের পর এক হামলা চালিয়ে আসছে। এ ছাড়া হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিভিট জানিয়েছেন, গাজায় হামলা শুরুর আগে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে পরামর্শ করেছিলেন ইসরায়েলি প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজগ।
ফক্স নিউজকে তিনি বলেন, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প স্পষ্ট করেছেন- হামাস, হুতি ও ইরান- যারা কেবল ইসরায়েলকেই নয় বরং আমেরিকাকেও আতঙ্কিত করতে চায়- তাদের মূল্য দিতে হবে এবং সমস্ত নরক তাদের উপর ভেঙে পড়বে।’
এর আগে দেড় বছরের টানা ইসরায়েলি হামলায় অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ৬১ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ১৭ হাজারই শিশু। এ ছাড়া আহত হয়েছেন ১ লাখ ১১ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি। এখনও নিখোঁজ ১৪ হাজারের বেশি।