Logo
×

Follow Us

আন্তর্জাতিক

গাজায় নিহত শত শত, নেতানিয়াহু বলছেন ‘কেবল শুরু'

Icon

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ১৯ মার্চ ২০২৫, ১২:২৩

গাজায় নিহত শত শত, নেতানিয়াহু বলছেন ‘কেবল শুরু'

টেলিভিশনে ভাষণ দিচ্ছেন নেতানিয়াহু। সংগৃহীত

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় শত শত ফিলিস্তিনি নিহত হওয়ার ঘটনাকে ‘কেবল শুরু’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় এক টেলিভিশন ভাষণে নেতানিয়াহু বলেন, “ইসরায়েলি বাহিনী হামাসের ওপর ‘ক্রমবর্ধমান শক্তি’ দিয়ে আঘাত হানবে এবং ভবিষ্যতে কোনো যুদ্ধবিরতির আলোচনা ‘শুধুমাত্র আগুনের মধ্যে’ হবে।

নেতানিয়াহু আরও বলেন, “গত ২৪ ঘণ্টাতেই হামাস আমাদের শক্তির ভার অনুভব করেছে। আমি আপনাদের ও তাদের– নিশ্চিত করতে চাই, এটি শুধুমাত্র শুরু। আমরা যুদ্ধের সব লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য লড়াই চালিয়ে যাব। সেগুলো হলো- আমাদের সব বন্দিদের মুক্তি, হামাসের নির্মূল এবং গাজার পক্ষ থেকে ইসরায়েলের জন্য কোনো হুমকি না থাকার নিশ্চয়তা।”

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য এমন সময় এলো যখন ১৯ জানুয়ারি হওয়া যুদ্ধবিরতিকে কার্যত বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে গাজায় হামলা শুরু করেছে তেলআবিব।

গাজার হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলি প্রতিরক্ষাবাহিনী আইডিএফের বিমান হামলায় অন্তত ৪০৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দেড়শতাধিক শিশু রয়েছে। আরও ৫৬০ জন আহত হয়েছেন।

এই হামলা গাজার প্রায় পুরো অংশ জুড়েই চালানো হচ্ছে। যার মধ্যে দক্ষিণের খান ইউনুস ও রাফাহ, উত্তরের গাজা সিটি এবং কেন্দ্রীয় অংশের দেইর আল-বালাহ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। হামলায় বেশ কয়েকটি পরিবার নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। মারা গেছেন অন্তঃসত্ত্বা নারীও।

এর আগে ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনায় অচলাবস্থা দেখা দেয়। যেখানে প্রায় ৬০ জন অবশিষ্ট হামাস বন্দির মুক্তি এবং একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতির প্রতিষ্ঠা নিয়ে আলোচনা চলছিল।

তেলআবিব গত সপ্তাহে হামাসের একটি প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে, যেখানে তারা এক মার্কিন-ইসরায়েলি দ্বৈত নাগরিক ও চারজন মৃত বন্দির দেহ বিনিময়ের শর্তে দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা শুরু করা এবং

চলতি মাসের শুরুতে আরোপিত ইসরায়েলি অবরোধ প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছিল।

হামাস যুদ্ধবিরতির প্রথম পর্যায়ে ৩৬ জন ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে, যার বিনিময়ে প্রায় ২ হাজার ফিলিস্তিনি বন্দি মুক্তি পেয়েছে। ১ মার্চ থেকেই যুদ্ধ বিরতি নিয়ে অচলাবস্থা দেখা দেয়।

যদিও ইসরায়েলের হামলা শুরুর আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ যুদ্ধবিরতি রমজান পর্যন্ত বাড়ানো সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব নিয়ে কাজ করছিলেন বলে জানিয়েছিলেন।

এই প্রস্তাবের আওতায় হামাস আরও জীবিত বন্দি মুক্তি দেবে এবং একই সঙ্গে উভয় পক্ষ স্থায়ী যুদ্ধবিরতির কাঠামো তৈরি করার বিষয়ে আলোচনা চালিয়ে যাবে।

মঙ্গলবারের ভাষণে নেতানিয়াহু আলোচনার অগ্রগতি না হওয়ার জন্য সরাসরি হামাসকে দায়ী করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, স্টিভ উইটকফের প্রস্তাব হামাস প্রত্যাখ্যান করেছে। এই কারণেই তিনি হামাসের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান পুনরায় শুরু করার অনুমোদন দিয়েছেন।

নেতানিয়াহু আরও অভিযোগ করেন যে, গাজায় সব অনিচ্ছাকৃত বেসামরিক হতাহতের জন্য হামাসই দায়ী। ফিলিস্তিনি বেসামরিক জনগণকে হামাস যোদ্ধাদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

তবে নেতানিয়াহুর বক্তব্যের সঙ্গে হাসপাতাল থেকে প্রাপ্ত তথ্য ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবিগুলোর মধ্যে পার্থক্য রয়েছে।

গাজার অধিকাংশ মানুষই এখন বাস্তুচ্যুত। গণমাধ্যম কার্যালয় বলছে, বেসামরিক ও আবাসিক যেসব এলাকায় সাধারণ মানুষ অবস্থান করছে- সেগুলোকেই লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে ইসরায়েলি সেনারা। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, নিহতদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।


 


Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫