
করোনার পরও চীনের তরুণদের হোটেলে থাকার অভ্যাস বদলায়নি।
করোনার সময়ে চীনের তরুণ-তরুণীদের মধ্যে ভাড়া বাসার বদলে হোটেলে থাকার একটি প্রবণতা দেখা গিয়েছিল। আর এখন সেটা হয়ে উঠেছে একটি ট্রেন্ড।
বিষয়টি বরং একটু খোলাসা করা যাক। যখন চীনে করোনার কারণে ভ্রমণ সীমিত এবং হোটেলগুলো বেশির ভাগ সময় খালি ছিল, তখন তারা তাদের ব্যবসার মডেল পরিবর্তন করে দীর্ঘমেয়াদি থাকার অফার করতে শুরু করেছিল। সাশ্রয়ী মূল্যে এই সুযোগটা দেয় তারা। করোনার পরও চীনের তরুণদের হোটেলে থাকার অভ্যাস বদলায়নি। কারণ এগুলো খরচে সাশ্রয়ী এবং এটি কোনো ধরনের ঝামেলা ছাড়াই তাদের জীবন উপভোগের সুযোগ তৈরি করে দেয়।
এসব তথ্য জানা যায় চীনা অনলাইন সংবাদমাধ্যম সিক্সথ টোনের এক প্রতিবেদন থেকে।
২৪ বছর বয়সী গেমার হু ওয়েইওয়েই জানান, বাড়ি ভাড়া নেওয়ার পুরো প্রক্রিয়া ছিল তার জন্য এক বড় ধরনের চাপ। বাড়িওয়ালাদের সঙ্গে কথা বলা, ডিপোজিট, এজেন্ট ফি-এগুলো ভীষণ বিরক্তিকর। হোটেলে থাকার সময়ে তিনি এসব কিছু থেকে মুক্ত।
হু নিজের শহর জিলিনে হোটেলে থাকতেন করোনার সময়। হোটেলে মাসিক চুক্তিতে থাকার খরচ ছিল দুই হাজার ৫০০ ইউয়ান, যা এককভাবে অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া নেওয়ার থেকে কম। তিনি বলেন, ‘হোটেলে থাকার পর আমি বুঝতে পারলাম, এটি আমার জন্য আদর্শ। কোনো ডিপোজিট দিতে হয় না, পরিষ্কার করা লাগে না, আর সব সুবিধা মিলছে।’
এদিকে ২২ বছর বয়সী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী তাং মিয়াওমিয়াও তিনিও হোটেলে থাকার সুবিধা উপভোগ করেছেন। করোনার সময়ে পড়াশোনা করতে অন্য শহরে যাওয়ার পর বাসা ভাড়া নিয়ে ঝামেলায় না গিয়ে সরাসরি হোটেলে মাসিক চুক্তিতে থাকেন তিনি। টাং বলেন, ‘হোটেলের স্টাফরা আমার জন্য বিশেষভাবে ডাম্পলিং বানিয়েছিল, আর নাশতার সময়ও তারা জানত, আমি নুডলস খেতে পছন্দ করি।’
করোনার পরও তরুণদের ওই অভ্যাস বদলায়নি। তারা দীর্ঘমেয়াদি হোটেল ভাড়ার দিকে ঝুঁকছেন। হোটেলগুলোও তাই তাদের পরিষেবা আরো গ্রাহক উপযোগী করে তুলেছে। এতে তরুণরা নিজেদের প্রয়োজন অনুযায়ী সুবিধা পাচ্ছেন এবং স্বাচ্ছন্দ্যে হোটেলে থাকতে পারছেন।
এমনকি দামি হোটেলগুলোও কম খরচে মাসিক চুক্তিতে রুম ভাড়া দেওয়া শুরু করায় এদের খরচও অনেক সময় স্বাভাবিক অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়ার চেয়ে কম হয়ে যায়। এতে সবকিছু অন্তর্ভুক্ত থাকে, যেমন- বিদ্যুৎ, পানি, পার্কিং এমনকি জিম সুবিধাও।
করোনার পর হোটেলে থাকা তরুণদের জন্য একটি নতুন জীবনযাপনের ধরন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের জন্য এটা সাশ্রয়ী, সুবিধাজনক ও ঝামেলামুক্ত। এই তিনটি মূল কারণে তরুণরা এখন বাসা ভাড়া না নিয়ে হোটেলকেই বেছে নিচ্ছে। ভবিষ্যতে চীনের কোনো শহরে পড়ালেখা বা চাকরিসূত্রে গেলে এই পথটি আপনার জন্যও এক নতুন বিকল্প হয়ে উঠতে পারে।