Logo
×

Follow Us

আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশ প্রশ্নে বিজেপির পথেই হাঁটল কংগ্রেস

Icon

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ১৬:৫৭

বাংলাদেশ প্রশ্নে বিজেপির পথেই হাঁটল কংগ্রেস

ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খারগে। ফাইল ছবি।

বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ নিয়ে ভারতে ক্ষমতাসীন দল বিজেপির কণ্ঠে সুর মেলাল বিরোধী দল কংগ্রেস।

আওয়ামী লীগের সাড়ে আট মাস পর দলটির সভাপতি মল্লিকার্জুন খারগে সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ তুলে বাংলাদেশের সরাসরি সমালোচনা করলেন।

সামাজিক মাধ্যম এক্সে শনিবার হিন্দিতে দেওয়া এক পোস্টে তিনি লেখেছেন, “বাংলাদেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা, বিশেষ করে আমাদের হিন্দু ভাই-বোনেরা প্রতিনিয়ত নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।”

বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর ‘নৃশংসতা’ চলছে অভিযোগ এনে তিনি বলেন, “মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে”

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন হচ্ছে- এমন অভিযোগ আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নিয়মিত করে আসছেন বিজেপি নেতারা। বাংলাদেশ সরকার এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, কিছু হামলা হলেও তার বেশিরভাগই রাজনৈতিক, এসব ঘটনা ‘ধর্মীয় নয়’।

প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস একাধিকবার ভারতীয় সংবাদকর্মীদেরকে বাংলাদেশে এসে সশরীরে সংবাদ সংগ্রহের আহ্বান জানিয়েছেন, যে আহ্বানে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমগুলো সেভাবে সাড়া দেয়নি।

বহু জল্পনা কল্পনার পর চলতি মাসের শুরুতে ব্যাংককে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠকেও এই বিষয়গুলো নিয়ে কথা হয়।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নির্যাতনের অভিযোগ তুলে হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যরা রাজধানী ঢাকাসহ বড় বড় শহরে একাধিকবার বিক্ষোভ করেছে। তবে সরকারের তরফে বেশিরভাগ অভিযোগকে অতিরঞ্জিত বলে দাবি করা হয়েছে।

ভারত সরকার ও বিজেপির নেতারা এই বিষয়টি নিয়ে সোচ্চার হলেও এতদিন বাংলাদেশ সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ নিয়ে মন্তব্য করা থেকে বিরতই থেকেছেন কংগ্রেস নেতারা।

ভারতে বিরোধী দলটি নেই নিরবতা ভেঙে এবার দেশের প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগও তুলেছে। কংগ্রেস সভাপতি লেখেন, “হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন বিশিষ্ট নেতা শ্রী ভবেশ চন্দ্র রায়ের নৃশংস হত্যাকাণ্ড এই সত্যই প্রমাণ করে যে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মোদির সাক্ষাৎ ব্যর্থ হয়েছে।”

বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে দিনাজপুরের বিরলে বাড়ি থেকে অপহরণ করা হয় ভবেশকে। তিনি বাংলাদেশের পূজা উদযাপন পরিষদের 'বিরল' শাখার সহ-সভাপতি ছিলেন। তাকে মারধর করে রাত ১০টার দিকে মুমূর্ষু অবস্থায় একটি ভ্যানে বাড়ির পাশের স্থানীয় ফুলবাড়ী হাটে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

স্বজনরা তাকে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্য চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

ভবেশের হত্যার ঘটনায় ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিন্দা জানিয়েছে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল একটি বিবৃতিতে ইউনূস প্রশাসনকে হিন্দু-সহ দেশের অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকার রক্ষার ‘দায়িত্ব’র কথা স্মরণ করিয়েছেন।

সংসদে ভারত সরকারের দেওয়া তথ্য তুলে ধরে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খারগে বলেন, “গত দুই মাসেই হিন্দুদের ওপর ৭৬টি আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে। এসব হামলায় ২৩ জন হিন্দু নিহত হয়েছেন।”

অন্যান্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপরও হামলা অব্যাহত আছে- অভিযোগ তার।

চীন সফরে ভারতের পূর্বঞ্চলীয় সাত রাজ্য নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে অসন্তোষ জানিয়েছে ভারতীয় কংগ্রেসের সভাপতি।

প্রধান উপদেষ্টার ইউনূসের চীন সফরে বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়াতে দেশটিকে আহ্বান জানিয়ে ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় সাত রাজ্য নিয়ে যে কথা বলা হয়, তারও সমালোচনা করেন কংগ্রেস নেতা।

তিনি বলেন, “সম্প্রতি বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলো সম্পর্কে অত্যন্ত নিন্দনীয় ও হতাশাজনক মন্তব্য করেছেন।”

ইউনূস বলেছিলেন, ‘‘ভারতের পূর্বাঞ্চলের সেভেন সিস্টার্স নামে পরিচিত সাতটি রাজ্য। এই রাজ্যগুলো ভারতের স্থলবেষ্টিত অঞ্চল। সমুদ্রে পৌঁছানোর জন্য তাদের যোগাযোগের কোনও উপায় নেই। এই অঞ্চলের জন্য সমুদ্রের একমাত্র অভিভাবক বাংলাদেশ।

‘‘এটি বিশাল এক সম্ভাবনা উন্মোচন করে। এটি চীনা অর্থনীতির একটি সম্প্রসারণও হতে পারে।”

বাংলাদেশে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিও মুছে ফেলার চেষ্টা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন কংগ্রেস সভাপতি। তবে এ বিষয়ে কোনো পক্ষকে দায়ী করেননি তিনি।

তার দাবি “এটি ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্কে দুর্বল করে দেওয়ার প্রচেষ্টার অংশ।”

“উপমহাদেশের স্বার্থে, ১৯৭১ সাল থেকে আজ পর্যন্ত- ভারত সবসময় বাংলাদেশের জনগণের জন্য শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করেছে”, লেখেন তিনি।



Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫