পানি না দিলে নদীতে ভারতীয়দের রক্ত বইবে: বিলওয়াল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৩৫

লাহোরে দলীয় সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন পিপিপি চেয়ারম্যান বিলওয়াল ভুট্টো
কাশ্মীর ইস্যুতে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই ‘সিন্ধু পানি চুক্তি’ স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছে ভারত। দেশটির রাজনীতিবিদরা বলছেন, পাকিস্তানে এক ফোঁটা পানিও ঢুকতে দেওয়া যাবে না।
এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এমন পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের ক্ষমতাসীন জোটের শরীক রাজনৈতিক দল পিপিপি’র নেতা বিলওয়াল ভুট্টো জারদারি করাচির জনসভায় দেওয়া এক ভাষণে শুক্রবার বলেছেন, “সিন্ধু আমাদের এবং আমাদেরই থাকবে। যদি পানি না আসে, তাহলে এই নদী দিয়ে তোমাদের (ভারতীয়) রক্ত আসবে।”
এই ভাষণে ভারতের হাজার বছরের সংস্কৃতির যে দাবি নরেন্দ্র মোদি করেন, তাকেও মিথ্যা বলে উল্লেখ করেছেন বিলওয়াল। তিনি বলেন, “তিনি (মোদি) বলেন, হাজার বছরের সংস্কৃতির উত্তরাধিকার আমরা। কিন্তু সভ্যতার বিকাশ হয়েছে পাকিস্তানের লারাকানার মোহেঞ্জোদারোতে। আমরাই এই সভ্যতার অভিভাবক। আমরাই তা রক্ষা করব।”
তিনি আরও দাবি করেন, কেবল পাকিস্তানের জনগণই নয়। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও পাকিস্তান থেকে সিন্ধুর পানি কেড়ে নেওয়া মেনে নেবে না।
বিলওয়াল বলেন, “এখন পাকিস্তানের প্রত্যেকটি রাজ্যকে এক হতে হবে। আমরা বিশ্বকে এই বার্তা দিতে চাই- সিন্ধুর পানি ডাকাতি পাকিস্তানিরা কোনোভাবেই মেনে নেবে না।”
বিলওয়াল ভুট্টো জারদারি পাকিস্তানের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ একজন ব্যক্তি। তিনি পাকিস্তানের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টো ও সাবেক প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারির ছেলে। পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা তার রয়েছে।
বর্তমানে তার দল পাকিস্তান পিপলস পার্টি ক্ষমতাসীন জোটের দ্বিতীয় বৃহত্তম অংশীদার।
কাশ্মীরের পাহালগামে বন্দুকধারীর হামলায় ২৬ পর্যটক নিহত হওয়ার পর থেকেই উত্তেজনা চলছে নয়াদিল্লি ও ইসলামাবাদের মধ্যে। ভারত এই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করেছে, যদিও পাকিস্তান তা অস্বীকার করেছে।
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ হিসেবে ভারত সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করেছে। বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্ততায় ১৯৬০ সালে এই চুক্তি হওয়ার পর দুই দেশ তিনবার যুদ্ধে জড়িয়েছে। কিন্তু তা চুক্তিতে কোনো প্রভাব ফেলেনি। মোদি প্রশাসন যেই সিদ্ধান্ত নিল -তা নজিরবিহীন।
ভারতের চুক্তি স্থগিত করার সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করেছে পাকিস্তান। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ জানিয়েছেন, এমনটা হলে -পাকিস্তান তা যুদ্ধ ঘোষণার শামিল হিসেবে দেখবে।
এরই মধ্যে কাশ্মীর সীমান্ত এলাকা এলওসিতে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। উভয় পক্ষই সেখানে সেনা সমাবেশ করছে। যুদ্ধবিমান দিয়ে টহলও চালাচ্ছে। একাধিক ফ্রন্টে গোলাগুলির ঘটনাও ঘটেছে। তবে হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।