রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে কুরস্ক, ইউক্রেন বলছে প্রোপাগান্ডা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ২৭ এপ্রিল ২০২৫, ১৩:০৯

মস্কোর বাইরে নোভো-ওগারিওভো বাসভবনে ভিডিও লিঙ্কে চিফ অব স্টাফ গেরাসিমভের প্রতিবেদন শুনছেন রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন। ছবি: আল জাজিরা
আট মাসের সংঘাতের পর কুরস্ক অঞ্চলের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধারের দাবি করেছে রাশিয়া। তবে রাশিয়ার এমন দাবিকে প্রোপাগান্ডা আখ্যা দিয়ে ইউক্রেন বলেছে, তাদের সেনারা এখনো ওই অঞ্চলের কিছু অংশে অবস্থান করছে।
শনিবার এক ভিডিও কনফারেন্সে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে কথা বলেন দেশটির সেনাবাহিনীর চিফ অব স্টাফ ভ্যালেরি গেরাসিমভ। তিনি জানান, কুরস্কের ইউক্রেনীয় বাহিনীর হাতে থাকা শেষ গ্রাম ‘গর্নাল’ পুনর্দখল করা হয়েছে।
প্রত্যুত্তরে গেরাসিমভকে পুতিন বলেন, “সেখানে (গর্নাল) কিয়েভ কর্তৃপক্ষের অভিযান সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে।”
রাশিয়ার এই দাবির কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী এক বিবৃতি দিয়ে জানায়, তারা কুরস্কের নির্দিষ্ট এলাকায় এখনো সক্রিয় রয়েছে। ইউক্রেনের চিফ অব স্টাফ বলেন, “রাশিয়ার শত্রুপক্ষের ‘পরাজয়ের’ দাবি বাস্তবে প্রোপাগান্ডা ছাড়া আর কিছু নয়।” তবে তিনি স্বীকার করেছেন, কুরস্ক অঞ্চলে ইউক্রেনের সামরিক অবস্থা ‘জটিল’ হয়ে উঠেছে।
গত কয়েক মাস ধরে কুরস্কে রুশ বাহিনী ধীরে ধীরে অগ্রসর হয়েছে। কিয়েভ আশা করেছিল, এই অঞ্চল ধরে রেখে ভবিষ্যত শান্তি আলোচনায় বাড়তি সুবিধা আদায় করা যাবে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার আগ্রাসন শুরুর পর ইউক্রেনের দক্ষিণ ও পূর্বাঞ্চলের একাধিক এলাকা রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে।
গেরাসিমভ তার বক্তব্যে কুরস্কের যুদ্ধে উত্তর কোরিয়ার সেনাদের ভূমিকার আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতিও দেন। তিনি জানান, উত্তর কোরিয়ার সেনারা রুশ বাহিনীকে “উল্লেখযোগ্য সহায়তা” দিয়েছে এবং “অসাধারণ বীরত্ব” দেখিয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়া ও পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, গত বছর রাশিয়ায় অন্তত ১০ হাজার উত্তর কোরিয়ান সেনা মোতায়েন করা হয়েছিল ইউক্রেনীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহায়তা করতে। ইউক্রেন দাবি করেছে, তারা উত্তর কোরিয়ার কয়েকজন সেনাকে বন্দি করে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।
এই ঘোষণার মধ্যেই ভ্যাটিকানে পোপ ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার ফাঁকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। আলোচনায় ছিল “পূর্ণ ও শর্তহীন যুদ্ধবিরতি”র বিষয়টি।
এদিকে ক্রেমলিন শনিবার জানিয়েছে, পুতিনও “কোনো পূর্বশর্ত ছাড়াই” ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনায় বসার জন্য প্রস্তুত।
রাশিয়ান বাহিনী বর্তমানে কুরস্ক সীমান্তে শক্তি জড়ো করছে এবং কাছাকাছি ইউক্রেনের সুমি অঞ্চলে টানা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।