ট্রাম্পের চাওয়া মতো ‘খনিজ চুক্তি’ করেছে ইউক্রেন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০১ মে ২০২৫, ১৪:৫৯

চুক্তিতে সই করেন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট এবং ইউক্রেনের ফার্স্ট ডেপুটি প্রিমিয়ার ইউলিয়া স্ভিরিদেনকো।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেন বুধবার একটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তিতে সই করেছে।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই চুক্তির ফলে ইউক্রেনের খনিজ খাতে বিশেষ সুবিধা পাবে যুক্তরাষ্ট্র। বিনিময়ে ইউক্রেন পুনর্গঠনে অর্থায়ন করবে ট্রাম্প প্রশাসন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চুক্তিটিকে জোরালোভাবে সমর্থন করেছেন।
গত কয়েক মাসের আলোচনা এবং শেষ মুহূর্তের জটিলতা কাটিয়ে ওঠার পর ওয়াশিংটনে চুক্তিটি সাক্ষরিত হয়। এই চুক্তির আওতায় ইউক্রেনের পুনর্গঠনের জন্য একটি যৌথ বিনিয়োগ তহবিল গঠন করা হবে।
ইউক্রেনের কর্মকর্তারা আশা করছেন, এই চুক্তি তাদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বজায় রাখবে।
যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি ছবি পোস্ট করে জানায়, চুক্তিতে সই করেন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট এবং ইউক্রেনের ফার্স্ট ডেপুটি প্রিমিয়ার ইউলিয়া স্ভিরিদেনকো।
পোস্টে বলা হয়, এই চুক্তি ইউক্রেনের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও সমৃদ্ধির অঙ্গীকারের প্রতি ট্রাম্প প্রশাসনের স্পষ্ট বার্তা দেয়।
তবে চুক্তি সাক্ষরের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে স্ভিরিদেনকো জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র শুধু অর্থায়নই করবে না, বরং বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সরবরাহের মতো নতুন সহায়তাও করতে পারে।
যদিও ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে সামরিক সহায়তার বিষয়ে সরাসরি কিছু বলা হয়নি।
রাশিয়া ২০২২ সালে ইউক্রেনে হামলা চালানোর পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র দেশটির সবচেয়ে বড় সামরিক সহায়তাকারী। জার্মানির কিয়েল ইনস্টিটিউটের হিসাবে, যুক্তরাষ্ট্র এরই মধ্যে ৭ হাজার ২০০ কোটি ডলারের বেশি সহায়তা দিয়েছে।
চুক্তি স্বাক্ষরের আগে ট্রাম্প বলেন, ইউক্রেনকে সহায়তার বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কিছু পাওয়া উচিত। সে কারণে ইউক্রেনের দুর্লভ খনিজের ওপর অধিকার নিশ্চিত করতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এসব খনিজ বৈদ্যুতিক যান, ইলেকট্রনিক্স ও সামরিক সরঞ্জামে ব্যবহৃত হবে।
বর্তমানে বিরল খনিজ খাতে চীনের আধিপত্য রয়েছে। ট্রাম্পের শুল্ক নীতির কারণে দেশটির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধ চলছে। ফলে বিরল খনিজের নতুন ও নির্ভরযোগ্য উৎস হিসেবে ইউক্রেন হতে পারে ট্রাম্প প্রশাসনের চমৎকার বিকল্প।
ইউক্রেনের প্রাকৃতিক সম্পদের মধ্যে বিরল খনিজ ছাড়াও রয়েছে বিপুল পরিমাণ লোহা, ইউরেনিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস।
স্ভিরিদেনকো দাবি করেন, চুক্তি হলেও ইউক্রেন নিজেই ঠিক করবে কোন খনিজ কোথায় উত্তোলন হবে এবং এসব ভূসম্পদের মালিকানা ইউক্রেনেরই থাকবে।
তিনি আরও জানান, এই চুক্তির অধীনে ইউক্রেনের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের কাছে কোনও ঋণ পরিশোধের দায় থাকবে না। এটি ছিল দুই দেশের দীর্ঘ আলোচনার অন্যতম বড় বিষয়। এই চুক্তি ইউক্রেনের সংবিধানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগদানের প্রচেষ্টাকে সহায়তা করবে।