Logo
×

Follow Us

আন্তর্জাতিক

পাকিস্তানের পাল্টা হামলার তীব্রতায় যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয় ভারত: সিএনএন

Icon

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ১১ মে ২০২৫, ১২:৪৩

পাকিস্তানের পাল্টা হামলার তীব্রতায় যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয় ভারত: সিএনএন

দিল্লি ও ইসলামাবাদের মধ্যে যুদ্ধবিরতির ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা পরই চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করলেন সিএনএনের সাংবাদিক নিক রবার্টসন।

চ্যানেলটিতে দেওয়া এক বক্তব্যে শনিবার তিনি জানান, পাকিস্তানের শক্তিশালী পাল্টা হামলায় ভারত তড়িঘড়ি করে পিছু হটতে বাধ্য হয় এবং সেই কারণেই যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় দুই দেশ।

রবার্টসন বলেন, “যখন ভারত তিনটি পাকিস্তানি বিমানঘাঁটিতে হামলা চালায়- এরপরই পাকিস্তান একটানা ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র ও রকেট হামলার মাধ্যমে জবাব দেয়। যেগুলো ভারতীয় সামরিক স্থাপনা, বিমানঘাঁটি ও অস্ত্র সংরক্ষণাগার লক্ষ্য করে ছোড়া হয়।”

তিনি আরও বলেন, “এই পাল্টা আঘাত এতই তীব্র ছিল যে ভারত পুরোপুরি চাপে পড়ে যায়। তারা বুঝতেই পারেনি কী ঘটেছে।”

পাকিস্তানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শুক্রবার রাতে ভারত পাকিস্তানের একাধিক বিমানঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। যার মধ্যে ছিল নূর খান, মুরীদ ও শোরকোট ঘাঁটি।

এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো বিমান থেকে ছোড়া হয় বলে জানিয়েছিলেন দেশটির আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের মহাপরিচালক (আইএসপিআর) লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী।

এর জবাবে পাকিস্তান শনিবার ভোরে ‘অপারেশন বুনিয়ান উল মারসুস’ শুরু করে।

দেশটির নিরাপত্তা সূত্রের বরাতে শনিবার জিও নিউজের প্রতিবেদনে শনিবার বলা হয়েছিল, এই অভিযানে ভারতের অভ্যন্তরে ২৬টি সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানা হয়েছে। এর মাধ্যমে দেশটির উচ্চমূল্যের সামরিক সম্পদ ধ্বংস করা হয়েছে।

ভারতের সুপারসনিক ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্রের একটি মজুদ ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। এ সংক্রান্ত একটি বিস্ফোরণের ভিডিও প্রকাশ করেছে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী। তবে স্বাধীনভাবে ভিডিওটির সত্যতা নিশ্চিত করা যায়নি।

এ ছাড়াও উধমপুর ও পাঠানকোটের বিমানঘাঁটিতে হামলা চালানো হয়েছে। আদমপুর বিমানঘাঁটি পুরো ধ্বংসের দাবি করেছে পাকিস্তান। জেএফ-১৭ যুদ্ধবিমান থেকে ছোড়া হাইপারসনিক মিসাইলে আদমপুরে থাকা রুশ নির্মিতি আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এস-৪০০ ধ্বংসেরও দাবি করেছে ইসলামাবাদ।

উধমপুর বিমানঘাঁটিতে তিনটি পাকিস্তানের নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি ‘ফতেহ-১’ ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছিল।

পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনীর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, উরিতে একটি ভারতীয় সেনা ব্রিগেড সদর দপ্তর ও সরবরাহ ডিপো ধ্বংস করা হয়েছে।

রাজৌরিতে ভারতীয় সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার একটি প্রশিক্ষণকেন্দ্রও ধ্বংস করার দাবি করেছে পাকিস্তান।

এ ছাড়াও ডন নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতে সাইবার হানাও দিয়েছে পাকিস্তান। এর ফলে দেশটির ৭০ শতাংশ বিদ্যুৎকেন্দ্র অকেজো হয়ে যায়।

‘বুনিয়ান উল মারসুস’ শব্দটি পবিত্র কুরআনের একটি আয়াত থেকে নেওয়া হয়েছে। যার অর্থ ‘গলিত সীসা দিয়ে তৈরি প্রাচীর’। যা ভাঙা যায় না। এটিকে শক্তি ও সংহতির প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

এখন পর্যন্ত ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্রের ডিপো ও এস-৪০০ ধ্বংসের পাকিস্তানি দাবির বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি ভারত।

এই হামলার পর সেদিনই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানান, টানা চার দিনের হামলা-পাল্টা হামলার পর ভারত ও পাকিস্তান একটি ‘সম্পূর্ণ ও তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতিতে’ সম্মত হয়েছে।

তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে লেখেন, “যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় দীর্ঘ রাতের আলোচনার পর আমি আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি যে ভারত ও পাকিস্তান একটি সম্পূর্ণ ও তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। উভয় দেশকে অভিনন্দন — তারা সাধারণ বোধ ও গভীর বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়েছে।”

সিএনএনের সাংবাদিক নিক রবার্টসন আরও জানান, তিনি এক উচ্চপর্যায়ের আলোচনার সময় উপস্থিত একটি সূত্রের বরাত দিয়ে শুনেছেন, পাকিস্তান শুরুর দিকে ‘সামরিক বিরতি’ অবস্থানে ছিল কূটনৈতিক সমাধানের সুযোগ দেওয়ার জন্য।

তিনি বলেন, “আমার সেই সূত্র বলেছে, এই কৌশল তখনই ব্যর্থ হয়ে যায় যখন ভারত তিনটি বিমানঘাঁটিতে হামলা চালায়। এই হামলার জবাবে পাকিস্তান তার সম্পূর্ণ সামরিক শক্তি প্রয়োগ করে। এর পরপরই ভারত তড়িঘড়ি করে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও, সৌদি আরব ও তুরস্কের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে মধ্যস্থতা চায়।”

দিনজুড়ে বহুবার সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়লেও, শেষ পর্যন্ত তীব্র আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক চাপের মুখে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।

সূত্র বলেছে, এই যুদ্ধবিরতি ছিল এক ‘এখন না হলে আর কখনো নয়’-মুহূর্ত।’ যোগ করেন রবার্টসন।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, “ভবিষ্যতে পাকিস্তানের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হচ্ছে পানির অধিকার। তবে আপাতত, এটা একটি যুদ্ধবিরতি — এখান থেকেই সবকিছু এগোবে।”

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫