এডানকে মুক্তির সিদ্ধান্ত হামাসের ‘সদিচ্ছার ইঙ্গিত’: ট্রাম্প

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২ মে ২০২৫, ১৮:২৮

গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছানোর প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে এডান আলেকজান্ডারকে মুক্তি দেওয়ার কথা জানিয়েছে হামাস। ছবি: সংগৃহীত
গাজায় আটক থাকা শেষ জীবিত ইসরায়েলি-আমেরিকান বন্দি ২১ বছর বয়সী এডান আলেকজান্ডারকে মুক্তি দিতে সম্মত হয়েছে হামাস। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একে ‘হামাসের সদিচ্ছার ইঙ্গিত’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
রবিবার এক বিবৃতিতে ট্রাম্প বলেন, “আমি আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি, এডান আলেকজান্ডার অবশেষে তার পরিবারের কাছে ফিরছে। এটা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি (হামাসের) সদিচ্ছার বার্তা। আমি সবাইকে ধন্যবাদ জানাই, বিশেষ করে কাতার ও মিশরকে।”
ট্রাম্প আরও বলেন, “এই নিষ্ঠুর যুদ্ধের অবসান ঘটাতে ও বন্দিদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার যে উদ্যোগ চলছে, এটি তারই একটি ইতিবাচক অগ্রগতি।”
হামাস বলেছে, “মানবিক কারণে এবং গাজায় চলমান যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা বিবেচনায় আমরা এডান আলেকজান্ডারকে মুক্তি দিচ্ছি।”
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে হামাসের নেতৃত্বে চালানো হামলার সময় আলেকজান্ডার অপহৃত হন। ওই হামলায় ১২ শ’র বেশি মানুষ নিহত হয় এবং প্রায় ২৫০ জনকে গাজায় জিম্মি করে নিয়ে যাওয়া হয়।
এই মুক্তির তদারকি করতে ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ ইতোমধ্যে ইসরায়েলে পৌঁছেছেন। এনবিসি নিউজকে তিনি বলেন, “সম্ভবত আগামীকালই (সোমবার) আমরা তাকে নিয়ে আসছি।”
তিনি আরও বলেন, “এই দীর্ঘ আলোচনায় অনেক পক্ষ জড়িত ছিল। তবে সবচেয়ে বড় ভূমিকা ছিল প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সদিচ্ছার।”
কাতারের রাজধানী দোহায় ইসরায়েলকে বাইরে রেখেই যুক্তরাষ্ট্র ও হামাসের মধ্যে পরোক্ষভাবে শেষ দফার আলোচনা হয়। এই আলোচনাকে কাতার ও মিশর ‘সদিচ্ছার ইঙ্গিত এবং যুদ্ধবিরতির পথে অগ্রগতি’ বলে বর্ণনা করেছে।
এর আগে মার্চে যুদ্ধবিরতি ভেঙে পড়ার পর ইসরায়েল আবার গাজায় অভিযান শুরু করে। ওই যুদ্ধবিরতির সাফল্যও আগেই নিজের কৃতিত্ব হিসেবে দাবি করেছিলেন ট্রাম্প।
ইসরায়েল জানিয়েছিল, হামাস এখনো ২৪ জন জীবিত বন্দিকে মুক্তি দিতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে।
অন্যদিকে হামাসের অভিযোগ করে, ইসরায়েল ইচ্ছা করে আলোচনা দীর্ঘায়িত করছে।
গাজায় চলমান যুদ্ধের মধ্যে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৫০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক মানুষ।
সম্প্রতি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, তার সরকার হামাসকে ‘সম্পূর্ণ ধ্বংসে’র লক্ষ্য নিয়ে একটি নতুন অভিযান পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনী ইতোমধ্যে গাজার প্রায় ৭০ শতাংশ এলাকাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে চলাচলে কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছে।
এদিকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ট্রাম্প বলেছিলেন—ফিলিস্তিনিদের উচিত ‘স্বেচ্ছায়’ গাজা ছেড়ে জর্ডান বা মিশরের মতো দেশগুলোতে চলে যাওয়া।
তিনি মন্তব্য করেছিলেন, গাজা ফাঁকা হলে ভবিষ্যতে সেটিকে একটি ‘পর্যটন স্বর্গরাজ্যে’ রূপান্তর করা যেতে পারে। সেসময় নেতানিয়াহু এই প্রস্তাবকে ‘অসাধারণ’ বলে উল্লেখ করেন।