ভারত-পাকিস্তান সংঘাতে অপ্রত্যাশিত বিজয়ী কি চীন?

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২০ মে ২০২৫, ১৬:৫২

চীনের নির্মিত জে-১০সি যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে থাকে পাকিস্তান বিমান বাহিনী
চলতি মাসে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চার দিনব্যাপী সংঘাত শেষ হয়েছে যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে। উভয় দেশই নিজেদের জয়ী দাবি করলেও বিশ্লেষকরা বলছেন এই সংঘাত চীনের প্রতিরক্ষা শিল্পের জন্য হয়ে উঠেছে ‘সাপে বর’।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সংঘাতে ভারত তাদের ফরাসি ও রুশ-নির্মিত যুদ্ধবিমান ব্যবহার করেছে। অন্যদিকে, পাকিস্তান ব্যবহার করে চীনের সঙ্গে যৌথভাবে নির্মিত জে-১০সি ও জেএফ -১৭ যুদ্ধবিমান।
সংঘাতে পাকিস্তান ব্যাপকভাবে চীনা যুদ্ধবিমান ও অস্ত্র ব্যবস্থার ওপর নির্ভর করে যে সামরিক সাফল্য দাবি করেছে, তা বেইজিংয়ের প্রতিরক্ষা শিল্পের জন্য এক বড় অর্জন হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা।
চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র কর্নেল ঝৌ বো বলেন, “এই আকাশযুদ্ধ ছিল চীনা অস্ত্রশিল্পের জন্য এক বিশাল বিজ্ঞাপন। যুদ্ধক্ষেত্রে নিজেদের সামরিক প্ল্যাটফর্মের কার্যকারিতা যাচাইয়ের এমন সুযোগ চীনের আগে কখনো হয়নি।”
তিনি আরও বলেন, “এই সংঘাত দেখিয়েছে যে চীনের এমন কিছু সামরিক ব্যবস্থা রয়েছে, যেগুলোর কার্যকারিতা তুলনাহীন।”
সম্প্রতি পাকিস্তানে ব্যবহৃত জে-১০সি যুদ্ধবিমান নিয়ে ইতিবাচক প্রতিবেদন প্রকাশের পরপরই বিমানটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ‘অ্যাভিক চেংদু এয়ারক্রাফট’-এর শেয়ারের মূল্য এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় ৪০ শতাংশ বেড়ে যায়।
তবে অনেক সব বিশ্লেষকই চীনা অস্ত্রের সাফল্য নিয়ে এখনই সিদ্ধান্তে আসতে চান না।
লন্ডনের কিংস কলেজের অধ্যাপক ওয়াল্টার ল্যাডউইগ বলেন, “চীনা যুদ্ধবিমানগুলো ভারতীয় বিমানবাহিনীর বিমান বিশেষ করে রাফালের চেয়ে কৌশলে শ্রেষ্ঠ কি না- তা এখনো নিশ্চিতভাবে বলা যায় না। চূড়ান্ত মূল্যায়নের জন্য আরও নিরপেক্ষ তথ্য প্রয়োজন।”
এই সংঘাত চীনা সামরিক প্রযুক্তির জন্য এক পরীক্ষামূলক ক্ষেত্র হয়ে উঠলেও, এখনই তাদের শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা দেওয়ার সময় হয়নি। তবে দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের প্রতিরক্ষা শিল্প যে ক্রমেই প্রভাব বিস্তার করছে, এ বিষয়টি এখন অস্বীকার করার উপায় নেই।