Logo
×

Follow Us

আন্তর্জাতিক

‘নিরপেক্ষ’ সৌদি আরবে ভারতের সঙ্গে বসতে আগ্রহী পাকিস্তান

Icon

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ২২ মে ২০২৫, ১৫:০৭

‘নিরপেক্ষ’ সৌদি আরবে ভারতের সঙ্গে বসতে আগ্রহী পাকিস্তান

ভারত ইস্যুতে মে মাসের শুরুতে ইসলামাবাদে সৌদি রাষ্ট্রদূত নাওয়াফ বিন সাঈদ আল-মালিকির সঙ্গে বৈঠক করেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ।

পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে চলমান উত্তেজনার মাঝে আলোচনার জন্য ‘নিরপেক্ষ মঞ্চ’ হিসেবে সৌদি আরবকে প্রস্তাব দিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ। তিনি বলেছেন, কাশ্মীর, পানি, বাণিজ্য এবং সন্ত্রাসবাদ হবে আলোচনার মূল বিষয়।

বুধবার নিজ সরকারি বাসভবনে সাংবাদিকদের সাথে আরাপচারিতায় শাহবাজ জানান, ভারত কখনও চীনকে আলোচনার জন্য গ্রহণ করবে না, কিন্তু সৌদি আরব উভয় পক্ষের জন্য গ্রহণযোগ্য হতে পারে।

তিনি আরও জানান, পাকিস্তানের হয়ে দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা আলোচনায় নেতৃত্ব দেবেন। ভারতের সন্ত্রাসবাদ নিয়ে আলোচনার আগ্রহ থাকলেও পাকিস্তান কাশ্মীরসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে চায়।

আসিম মুনিরকে ফিল্ড মার্শাল করার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী জানান, এটি তার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত হলেও দলের সভাপতি নওয়াজ শরীফের সঙ্গে পরামর্শ করা হয়েছে।

নওয়াজ পূর্বে সেনাপ্রধানের মেয়াদ বাড়ানোর বিরোধিতা করলেও এই নিয়োগে সম্মতি দিয়েছিলেন বলেও জানান শাহবাজ।

দুই দেশের ডিজিএমওদের মধ্যে যোগাযোগের ফলে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের উত্তেজনা কিছুটা কমেছে বলেও জানান তিনি।

ভারত-পাকিস্তানের সংঘর্ষের পর ১২ দিন পেরিয়ে গেলেও সীমান্তে গোলাগুলির ঝড় এখনও থামেনি। গত ২২ এপ্রিল পেহেলগামে বন্দুকধারীর হামলায় ২৬ জন নিহত হয়।

ভারত ওই হামলার প্রায় ১৫ দিন পর সীমান্ত ও নিয়ন্ত্রণ রেখার ওপারে নয়টি লক্ষ্যবস্তুকে নিশানা করে ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে সামরিক অভিযান চালায়, যা তারা ‘সন্ত্রাসীদের ঘাঁটি’ বলে দাবি করে।

পাকিস্তান সীমান্তের ওপার থেকে ড্রোন হামলা চালিয়ে পাল্টা জবাব দেয়।

পেহেলগাম হামলাকারীদের মধ্যে তিনজনকে চিহ্নিত করেছে জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ, যাদের মধ্যে একজন কাশ্মীরি ও দুইজন পাকিস্তানি বলে জানা গেছে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, সন্ত্রাসীরা ভারতের বোনেদের সিঁদুর মুছে দিয়েছে, তাই সন্ত্রাসের সদর দপ্তরকে ধ্বংস করা হয়েছে।

সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জীবন রাজপুরোহিত বলেছেন, সন্ত্রাসীদের নির্মূল করা কঠিন কারণ তাদের স্থানীয় সমর্থক ও পাকিস্তানের সাহায্য রয়েছে। তাই শুধুমাত্র সন্ত্রাসীদের হত্যা করে এই সমস্যা মুছে ফেলা সম্ভব নয়, মূল কাঠামোই গুঁড়িয়ে ফেলতে হবে।

আন্তঃসীমান্ত সংঘর্ষে বেসামরিক ও নিরাপত্তাকর্মীসহ বহু হতাহত হয়েছে, তবে ভারত সরকার নিহতের পরিসংখ্যান প্রকাশ করেনি। সীমান্ত এলাকার মানুষের নিরাপত্তার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলেও জানান অবসরপ্রাপ্ত এয়ার মার্শাল দীপ্তেন্দু চৌধুরী।

তিনি বলেন, গোলাগুলির আশঙ্কায় স্থানীয় বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়া হয়, কিন্তু এই সংঘর্ষ হঠাৎ শুরু হওয়ায় আগে থেকে সতর্ক করা সম্ভব হয়নি।

জম্মু ও কাশ্মীরের পাম্পোর এলাকায় ধাতব টুকরো পাওয়া গেছে, যার কোনোটাই ভারতীয় বিমানভাগের অংশ বলে নিশ্চিত করা হয়নি। পাকিস্তান দাবি করেছে, তারা ভারতের রাফাল যুদ্ধবিমান গুলি ভূপাতিত করেছে। এ ব্যাপারে ভারত সরকার এখনও কোনো নিশ্চিত তথ্য দেয়নি।

অবসরপ্রাপ্ত এয়ার মার্শাল একে ভারতী বলেন, ক্ষয়ক্ষতি থাকবেই, কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল আমরা আমাদের কৌশলগত লক্ষ্য অর্জন করতে পেরেছি কি না। তিনি যুদ্ধবিরতির আগে তথ্য প্রকাশের ক্ষেত্রে বিভিন্ন মতামতের কথা তুলে ধরেন।

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করার আগেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মধ্যস্থতার দাবি করেন। তিনি বলেন, তার সরকারের মধ্যস্থতায় দুই দেশ অবিলম্বে ও সম্পূর্ণভাবে সংঘাত বন্ধ করতে সম্মত হয়েছে। ভারত এই দাবি প্রত্যাখ্যান না করলেও নিশ্চিত করেনি।

ভারতের সাবেক কূটনীতিক দিলীপ সিং বলেন, পাকিস্তান সম্ভবত যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যোগাযোগ করে, এরপর ভারতও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কথা বলেছে। পাকিস্তান ডিজিএমও ভারতের ডিজিএমও’র সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেয়, এরপরই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। ভারতের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখা গুরুত্বপূর্ণ, যা শুধুমাত্র প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়।





Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫