বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা সাক্ষাৎকার স্থগিত করল ট্রাম্প প্রশাসন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ২৮ মে ২০২৫, ১৫:০৫

ফিলিস্তিনিপন্থী আন্দোলন হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর ওপর ক্ষুব্ধ ট্রাম্প
ট্রাম্প প্রশাসন বিশ্বজুড়ে মার্কিন দূতাবাসগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে, যেন তারা অবিলম্বে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা ও শিক্ষার্থী বিনিময় কর্মসূচির ভিসা (এফ, এম ও জে ক্যাটাগরি) সাক্ষাৎকার নেওয়া বন্ধ করে দেয়।
দেশটির প্রশাসন এখন থেকে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কী ধরণের পোস্ট করে- তার কঠোর যাচাই প্রক্রিয়া চালু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের (পররাষ্ট্র বিভাগ) একটি বার্তায় জানানো হয়, কনস্যুলার শাখাগুলোকে পরবর্তী নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত আর কোনো সাক্ষাৎকারের সময় নির্ধারণ না করতে বলা হয়েছে।
নতুন এই নির্দেশনা প্রথমে পলিটিকো প্রকাশ করে, পরে গার্ডিয়ান তা নিশ্চিত করে।
এতে বলা হয়, এই স্থগিতাদেশ ভিসা প্রক্রিয়ায় মারাত্মক বিলম্ব ঘটাতে পারে। যার প্রভাব পড়বে মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওপর—যেগুলো আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ওপর আর্থিকভাবে অনেকটাই নির্ভরশীল।
ট্রাম্প প্রশাসন এসব প্রতিষ্ঠানকে ‘চরম বামপন্থী’ বলেও অভিযুক্ত করেছে। হার্ভার্ড সহ বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে তিনি এরই মধ্যে দ্বন্দ্বেও জড়িয়েছেন।
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে ১০ লাখেরও বেশি বিদেশি শিক্ষার্থী রয়েছে, যারা শুধু ২০২৩-২৪ অর্থবছরেই দেশটির অর্থনীতিতে ৪৩ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার অবদান রেখেছে এবং প্রায় ৩ লাখ ৭৮ হাজার চাকরিতে অবদান রেখেছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম হবে নজরদারির কেন্দ্রবিন্দু
স্টেট ডিপার্টমেন্ট জানিয়েছে, বিভাগটি এখন এফ, এম ও জে ভিসা আবেদনকারীদের জন্য ‘বিস্তৃত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম যাচাই’ ব্যবস্থা চালু করতে যাচ্ছে।
এর আওতায় কনস্যুলার কর্মকর্তারা আবেদনকারীদের ইনস্টাগ্রাম, টিকটক, এক্স-এর মতো প্ল্যাটফর্মে দেওয়া পোস্ট, লাইক, শেয়ার ও মন্তব্য খতিয়ে দেখবেন।
এমনকি, যদি কোনো পোস্ট পরে মুছে ফেলা হয়, তবুও কর্মকর্তাদের স্ক্রিনশট নিয়ে স্থায়ীভাবে সংরক্ষণ করতে বলা হয়েছে।
মার্চ মাস থেকেই প্রো-প্যালেস্টাইন বিশ্ববিদ্যালয় আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের ওপর নজরদারি বাড়ানো হয়। সেসময় সন্ত্রাসী কার্যকলাপ বা সংশ্লিষ্ট মতাদর্শ সমর্থনের প্রমাণ খুঁজে বের করতে বলা হয়েছিল।
হাজারো ভিসা ইতিমধ্যেই বাতিল
সিনেটর রুবিও সম্প্রতি জানিয়েছেন, এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে এখন পর্যন্ত এক হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী ভিসা বাতিল করা হয়েছে—যা মার্চে রিপোর্ট হওয়া ৩০০ সংখ্যার তুলনায় অনেক বেশি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নতুন এই কঠোরতা উচ্চশিক্ষা খাতকে আরও চাপের মুখে ফেলবে, যেখানে আগে থেকেই দেশটিতে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ভর্তির হার কমে যাচ্ছে।