গাজার খাদ্য গুদামে ক্ষুধার্ত মানুষের ঢল, নিহত ২

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৯ মে ২০২৫, ১৫:৫৮

গাজার গুদাম থেকে খাদ্য ছিনিয়ে নেয় হাজার হাজার মানুষ।
গাজার মধ্যাঞ্চলে একটি খাদ্য গুদামে ক্ষুধার্ত মানুষরা হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)। এসময় গুলির ঘটনায় দুইজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও কয়েকজন।
বৃহস্পতিবার বিবিসির এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, দেইর আল-বালাহ এলাকার আল-গাফারি গুদামে ভিড় করে মানুষ ঢুকে পড়ছে। তারা ময়দার বস্তা ও খাবারের বাক্স নিয়ে যাচ্ছে। এ সময় গুলির শব্দ শোনা যায়। তবে কোথা থেকে গুলি ছোড়া হয়েছে তা স্পষ্ট নয়।
গুদামটি আগে সংরক্ষিত খাদ্যসামগ্রী বিতরণের জন্য রাখা হয়েছিল।
এক বিবৃতিতে ডব্লিউএফপি জানিয়েছে, প্রায় তিন মাস পর অবরোধ কিছুটা শিথিল করেছে ইসরায়েল। ইতোমধ্যে গাজার মানবিক চাহিদার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। গাজায় অবিলম্বে খাদ্য সহায়তা ব্যাপকভাবে বাড়ানো প্রয়োজন। এটাই একমাত্র উপায় মানুষকে আশ্বস্ত করার যে তারা না খেয়ে মারা যাবে না।
ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ বুধবার জানায়, জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ১২১টি ট্রাক গাজায় প্রবেশ করেছে। এগুলোতে ময়দা ও খাদ্যসহ বিভিন্ন মানবিক সহায়তা ছিল।
ইসরায়েল গত সপ্তাহ থেকে সীমিত পরিমাণে গাজায় সহায়তা প্রবেশ করতে দিচ্ছে। তবে জাতিসংঘের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক দূত সিগরিড কাগ জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদকে বলেন, এই সহায়তা ‘ডুবে যাওয়া জাহাজের পর একটি লাইফবোটের মতো’, যেখানে গাজার সবাই দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে আছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল সমর্থিত একটি বিতর্কিত গোষ্ঠী-গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) সাহায্য বিতরণ ব্যবস্থা চালু করেছে। এটি জাতিসংঘকে এড়িয়ে মার্কিন ঠিকাদারদের মাধ্যমে কার্যক্রম চালাচ্ছে। বিষয়টিকে ‘অকার্যকর ও অনৈতিক ব্যবস্থা’ বলে অভিহিত করেছে জাতিসংঘ।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল সরকার বলেছে, জিএইচএফ গাজার দক্ষিণ ও মধ্যাঞ্চলে চারটি বিতরণ কেন্দ্র চালু করেছে। তারা হামাসের কাছ থেকে সহায়তা ছিনতাই ঠেকাতে সহায়তা করছে। তবে হামাস এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি অঞ্চলের মানবিক কার্যালয়ের প্রধান জোনাথন হুইটল বলেন, বিশ্বাসযোগ্য মানবিক চ্যানেলের মাধ্যমে পরিচালিত সহায়তা হামাস ছিনিয়ে নিচ্ছে-এমন কোনো প্রমাণ নেই।
তিনি বলেন, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে প্রকৃত লুটপাট করেছে অপরাধী চক্রগুলো। এদেরকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী কেরেম শালোম সীমান্ত ক্রসিংয়ের কাছাকাছি কাজ করতে দিয়েছে।
জাতিসংঘ বলেছে, ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে সাম্প্রতিক যুদ্ধবিরতির সময় যেভাবে ব্যাপক সাহায্য প্রবেশ করেছিল, সেরকম আরেকটি উদ্যোগ নিলে ক্ষুধার্ত মানুষের লুটপাট ঠেকানো সম্ভব হবে। একই সঙ্গে গাজাজুড়ে জাতিসংঘের প্রতিষ্ঠিত বিতরণ নেটওয়ার্ককে পুরোপুরি কাজে লাগানো যাবে।