Logo
×

Follow Us

আন্তর্জাতিক

হত্যা ও দুর্ভিক্ষের ছায়ার নিচেই গাজাবাসীর ঈদ

Icon

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ০৬ জুন ২০২৫, ১৮:৩৪

হত্যা ও দুর্ভিক্ষের ছায়ার নিচেই গাজাবাসীর ঈদ

ধ্বংসস্তূপের মধ্যেই ঈদের নামাজে অংশ নেয় গাজার পুরুষ ও শিশুরা।

ধ্বংস হয়ে যাওয়া মসজিদ আর বাড়ির সামনে খোলা আকাশের নিচে শুক্রবার ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করেছেন গাজার বাসিন্দারা। ইসরায়েলের হামলায় ফিলিস্তিনের এই উপত্যকা পরিণত হয়েছে মৃত্যুর ময়দানে। চলমান যুদ্ধ শিগগিরই থামবে এমন কোনো আশা নেই। এরপরেও যৎসামান্য আয়োজনেই ঈদ পালন করছেন গাজার বাসিন্দারা। খাদ্য সরবরাহ কমে যাওয়ায় পরিবারগুলো তিনদিনের এই উৎসবের জন্য যা পেয়েছে, সেটি দিয়েই কোনোভাবে চলার চেষ্টা করছে।

খান ইউনিস শহরে নামাজ শেষে কামেল এমরান দি ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেন, “এটি ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য সবচেয়ে কঠিন ঈদ। কারণ ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর অন্যায় যুদ্ধ চলছে। এখানে কোনো খাবার নেই, ময়দা নেই, আশ্রয় নেই, মসজিদ নেই, ঘর নেই, বিছানাও নেই। পরিস্থিতি খুবই, খুবই ভয়াবহ।”

ইসলামের চন্দ্র মাস জিলহজের ১০ তারিখে এই ঈদ শুরু হয়, যখন সৌদি আরবে হজ পালিত হয়। টানা দ্বিতীয় বছরের মতো গাজার মুসলমানরা হজ পালনের জন্য সৌদি আরবে যেতে পারেননি।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস-নেতৃত্বাধীন যোদ্ধারা ইসরায়েলে আকস্মিক হামলা চালিয়ে প্রায় ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যা করে ও ২৫১ জনকে জিম্মি করে। এখনও ৫৬ জন জিম্মি রয়েছে, যাদের এক-তৃতীয়াংশ জীবিত বলে ধারণা করা হচ্ছে। বাকিদের বেশিরভাগকে যুদ্ধবিরতির সময় বা অন্য চুক্তিতে মুক্তি দেওয়া হয়। ইসরায়েলি বাহিনী এখন পর্যন্ত আট জন জীবিত জিম্মিকে উদ্ধার করেছে এবং বহু মৃতদেহ ফিরিয়ে এনেছে।

এরপর থেকে ইসরায়েল গাজায় সামরিক অভিযান চালিয়ে ৫৪ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। এই হামলায় গাজার বিশাল অংশ ধ্বংস হয়ে গেছে এবং প্রায় ২০ লাখ ফিলিস্তিনির মধ্যে ৯০ শতাংশ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

ইসরায়েল দুই মাসের বেশি সময় ধরে গাজায় সব খাদ্য ও ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ রাখার পর সম্প্রতি জাতিসংঘের জন্য সীমিত পরিমাণ ত্রাণ প্রবেশ করতে দিয়েছে। তবে জাতিসংঘ বলছে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর চলাচলে নিষেধাজ্ঞা ও সেনাবাহিনীর নির্ধারিত রাস্তাগুলোর অনিরাপত্তার কারণে তারা বেশিরভাগ ত্রাণ বিতরণ করতে পারছে না।

রোমে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা বৃহস্পতিবার জানায়, গাজার মানুষ সেপ্টেম্বর নাগাদ চরম খাদ্য অনিশ্চয়তায় পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ চরম খাদ্য সংকটে থাকবে, যা পুষ্টিহীনতা ও অনাহারে রূপ নিতে পারে।

সংস্থাটির জরুরি বিভাগের পরিচালক রেইন পলসন এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “এর মানে হলো দুর্ভিক্ষের ঝুঁকি এখন পুরো গাজা উপত্যকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে।”

গত দুই সপ্তাহে গাজার নতুন ত্রাণকেন্দ্রগুলোর আশপাশে প্রায় প্রতিদিনই গুলি বর্ষণের ঘটনা ঘটেছে, যেখানে ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিদের ত্রাণ নিতে বলা হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, আশপাশে অবস্থানরত ইসরায়েলি সেনারা গুলি চালিয়েছে এবং গাজার হাসপাতাল সূত্র বলছে, এতে ৮০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫