ইরানে কুদস ফোর্সের ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেওয়ার দাবি ইসরায়েলের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৬ জুন ২০২৫, ১২:৩৭

ইরানের পরমাণু স্থাপনাতেও হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।
ইরান ও ইসরায়েলের পাল্টাপাল্টি হামলার মধ্যেই ইসরায়েলি বিমান বাহিনী সোমবার তেহরানে ইসলামি বিপ্লবী রক্ষী বাহিনী আইআরজিসির অধীনে থাকা কুদস ফোর্সের কমান্ড সেন্টারে হামলা চালিয়েছে।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে এমনটাই দাবি করেছে।
আইডিএফ পোস্টে লিখেছে, “সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এই হামলা চালানো হয়েছে। এই সদর দপ্তর থেকেই মধ্যপ্রাচ্যে ইরানি শাসকদের বিভিন্ন শাখার মাধ্যমে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিকল্পনা করা হতো।”
কুদস ফোর্স হচ্ছে আইআরজিসির একটি অভিজাত শাখা, যা বিদেশে সামরিক অভিযানে নিয়োজিত এবং লেবাননের হিজবুল্লাহসহ বিভিন্ন গোষ্ঠীর প্রতি সমর্থনের জন্য পরিচিত।
তবে কুদস ফোর্সের সদরদপ্তরে হামলার বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করেনি আইআরজিসি।
এদিকে ইসরায়েলি হামলার জবাবে শনিবারও ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়েছে ইরান। এতে অন্তত ৫ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছন প্রায় একশ।
দেশটির জরুরি সেবা সংস্থা মাগেন ডেভিড আদম (এমডিএম) জানিয়েছে, আহত ৮৭ জনকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। আহতদের মধ্যে একজন নারীর মুখে গুরুতর জখম রয়েছে, পাঁচজনের অবস্থা মাঝারি এবং বাকি ৮১ জনের আঘাত তুলনামূলকভাবে হালকা।
চার রাত ধরে চলা ইসরায়েলি বিমান হামলায় ইরানে বেসামরিক প্রাণহানির সংখ্যা বাড়ছে। ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, এখন পর্যন্ত অন্তত ২৩০ জন নিহত হয়েছেন, যাদের প্রায় ৯০ শতাংশই বেসামরিক নাগরিক।
এদিকে ইসরায়েলের টানা বিমান হামলার মধ্যে তেহরান যুদ্ধবিরতির কোনো আলোচনায় রাজি হয়নি।
কাতার ও ওমানের মাধ্যমে দেওয়া বার্তায় তারা জানায়, ইসরায়েলের ‘প্রাথমিক আগ্রাসনের পূর্ণ জবাব’ না দেওয়া পর্যন্ত তারা কোনো আলোচনায় বসবে না।
ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের দাবি, তাদের হামলায় শুধু সামরিক স্থাপনাই নয়, ইরানের পারমাণবিক অবকাঠামোতেও বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে। হামলায় একাধিক শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা ও পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত হয়েছেন বলে দাবি করা হয়।
রবিবার রাতে তেহরানে ৮০টিরও বেশি স্থানে হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনা, কিন্তু পরে তা বিস্তৃত হয়ে জ্বালানি অবকাঠামো ও সরকারি ভবন পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে।
রাজধানী তেহরানে দুটি প্রধান জ্বালানি ডিপো ধ্বংস করা হয়, এবং খুজেস্তানের তেলসমৃদ্ধ শহর আহভাজেও হামলা চালানো হয়।
এ ছাড়া, তেহরানের পুলিশ সদর দপ্তর, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইসফাহানের একটি প্রতিরক্ষা-সম্পর্কিত স্থাপনাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।