পুতিনের কাছে ছুটে গেলেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ২৩ জুন ২০২৫, ১৩:০৩

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি এখন রাশিয়ায়।
যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর দীর্ঘদিনের মিত্র রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আলোচনা করতে দেশটিতে ছুটে গেলেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি।
সোমবার ক্রেমলিনে দুই নেতার সঙ্গে বৈঠকের কথা আছে। বিবিসি লিখেছে, ইরানি মন্ত্রী বলেছেন, রুশ নেতার সঙ্গে তার ‘গুরুত্বপূর্ণ ও গম্ভীর আলোচনা’ হবে, যেখানে ‘অভিন্ন চ্যালেঞ্জ ও হুমকি’ নিয়ে কথা হবে।
ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের হামলার ঘটনায় রাশিয়া এরই মধ্যে নিন্দা করেছে। জাতিসংঘে রুশ রাষ্ট্রদূত বলেছেন, “আমেরিকা একটি প্যান্ডোরার বাক্স খুলে দিয়েছে।” দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ দাবি করেছেন, একাধিক দেশ ইরানকে পারমাণবিক বোমা সরবরাহে প্রস্তুত আছে।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে ইরান ও রাশিয়া একটি অংশীদারত্ব চুক্তি সই করেছে, তবে গত ১৩ জুন ইসরায়েল পারস্যের দেশটিকে হামলা শুরুর পর রাশিয়া এখন পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
পুতিন বলেছেন, তাদের চুক্তিতে সামরিক সহযোগিতার কথা লেখা নেই। আর ইরানও এমন কোনো সহযোগিতা চায়নি।
বিবিসি লিখেছে, ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলে তিনি ক্রেমলিন নেতার কাছ থেকে জোরালো সমর্থনের বার্তা পেতে পারেন। তবে মস্কো থেকে সরাসরি কোনো সামরিক সহায়তা পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম।
কারণ হিসেবে ইউক্রেন যুদ্ধের কথা তুলে ধরা হয়েছে প্রতিবেদনে। এটিই রাশিয়া কাছে অগ্রাধিকার।
গত ১৯ জুলাই পুতিন বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “জানুয়ারিতে তেহরানের সঙ্গে যে কৌশলগত অংশীদারত্ব চুক্তি হয়েছে, তাতে সামরিক সহযোগিতার কোনো কথা নেই এবং ইরানও আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো সহায়তার অনুরোধ করেনি।”
তার বক্তব্য থেকে পরিষ্কার ছিল যে, তিনি এমন সহায়তা দিতে তাড়াহুড়া করছেন না।
তবে গত বৃহস্পতিবার রুশ সংবাদ সংস্থা তাসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রুশ নেতা বলেন, “আমাদের বন্ধুদের (ইরান) আকাশ প্রতিরক্ষায় কাজ করার বিষয়ে প্রস্তাব দিয়েছিলাম। ওই সময় তারা খুব একটা আগ্রহ দেখায়নি। কৌশলগত অংশীদারত্ব নিয়ে চুক্তিতেও প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত কোনো ধারা ছিল না। এটা দ্বিতীয় বিষয়। তৃতীয় বিষয় হলো, আমাদের ইরানি বন্ধুরাও আকাশ প্রতিরক্ষা চাইছে না। বাস্তবতা হলো, এ নিয়ে আলোচনার মতোও কিছু নেই।”
ইসরায়েল আক্রমণ শুরুর করার পর ইরানের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার দুর্বলতা সামনে চলে আসে। দেশটি বিপুল পরিমাণ ক্ষেপণাস্ত্র মজুত থাকলেও তাদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা একেবারেই অকার্যকর।
ইসরায়েলি ও পরে যুক্তরাষ্ট্রের জঙ্গি বিমানগুলো বিনা বাধায় হামলা করে গেছে।
ক্রেমলিন বরাবরই ইরান ও ইসরায়েল—দুই পক্ষের সঙ্গেই সুসম্পর্ক বজায় রাখতে আগ্রহী ছিল এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ভালো কর্মসম্পর্ক গড়ে তুলতেও আগ্রহী।