অস্ত্র ছাড়ব না, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ চলবে: হিজবুল্লাহ প্রধান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০৬ আগস্ট ২০২৫, ১৬:৪৪

হিজবুল্লাহর উপমহাসচিব শেখ নাঈম কাসেম
লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর উপমহাসচিব শেখ নাইম কাসেম স্পষ্ট জানিয়েছেন, ইসরায়েলের আগ্রাসনের মুখে সংগঠনটি অস্ত্র ছাড়বে না।
তিনি বলেন, লেবাননের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা রক্ষায় প্রতিরোধ অব্যাহত রাখা হবে এবং এটি জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে আলোচনার বিষয়। গত বছর ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধে হিজবুল্লাহ উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হলেও, তারা নিজেদের সক্ষমতা পুনরুদ্ধারে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
মঙ্গলবার এক টেলিভিশন ভাষণে কাসেম বলেন, “প্রতিরোধ ভালো আছে, শক্তিশালী এবং লেবাননের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতা রক্ষায় প্রস্তুত। ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে হিজবুল্লাহ অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছে।”
ইসরায়েল ফের পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ শুরু করলে দেশটির ওপর ‘ক্ষেপণাস্ত্র বৃষ্টি’ হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন হিজবুল্লাহর উপমহাসচিব।
কাসেম বলেন, “লেবাননের সেনাবাহিনী, হিজবুল্লাহ এবং জনগণ একসঙ্গে নিজেদের রক্ষা করবে। তারা (ইসরায়েল) গত আট মাস ধরে যে নিরাপত্তা বলয় গড়েছে, তা এক ঘণ্টার মধ্যেই ভেঙে পড়বে।”
এর কয়েক ঘণ্টা পর লেবাননের প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউনের নেতৃত্বে মন্ত্রিসভার ছয় ঘণ্টার বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, চলতি বছরের মধ্যে দেশের সব অস্ত্র রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে আনা হবে।
বৈঠক শেষে লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নাওয়াফ সালাম বলেন, “রাষ্ট্রের দায়িত্ব অস্ত্রের মালিকানা এককভাবে নিজের হাতে রাখা।” খবর লেবাননের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা এনএনএর।
আগের রাতে বৈরুতে হিজবুল্লাহর শত শত সমর্থক দলের নিরস্ত্রীকরণের প্রস্তাবের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেন। মঙ্গলবারের মন্ত্রিসভার বৈঠকে ওই প্রস্তাবই আলোচনার কেন্দ্রে ছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের চাপ, ইসরায়েলের লঙ্ঘন
যুক্তরাষ্ট্র চাচ্ছে হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্র করতে। আর ইসরায়েল প্রায় প্রতিদিনই হিজবুল্লাহর সঙ্গে গত নভেম্বরের যুদ্ধবিরতির শর্ত লঙ্ঘন করছে।
গত বছরের যুদ্ধে হিজবুল্লাহ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়ে। ইসরায়েলের হামলায় সংগঠনটির অধিকাংশ শীর্ষ নেতা নিহত হন, হাজারও যোদ্ধা ও বেসামরিক নাগরিক মারা যান এবং লাখো মানুষ গৃহহীন হন।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ও লেবাননের মধ্যে হিজবুল্লাহ নিরস্ত্রীকরণে একটি রোডম্যাপ নিয়ে আলোচনা চলছে। নতুন সরকার দেশের সব অঞ্চলে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তবে তারা এখনো হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে সরাসরি কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
হিজবুল্লাহর অস্ত্র জমা না দিলে দেশ পুনর্গঠনের জন্য অর্থ সাহায্য পাওয়া যাবে না-এমন চাপের মুখে সংগঠনটি নিজেদের ‘ব্ল্যাকমেইলের শিকার’ বলেও মন্তব্য করেছে।
শর্তসাপেক্ষে নিরস্ত্রীকরণ চায় হিজবুল্লাহ
মন্ত্রিসভার বৈঠকের আগে হিজবুল্লাহপন্থী এমপি আলি ফাইয়াদ বলেন, ইসরায়েলকে লেবাননের দখলকৃত এলাকা ছাড়তে হবে, বন্দিদের মুক্তি দিতে হবে এবং হামলা বন্ধ করতে হবে। এসব দাবির আগে নিরস্ত্রীকরণ নিয়ে কোনো আলোচনা হবে না।