Logo
×

Follow Us

আন্তর্জাতিক

জেন-জির আন্দোলনে আরেক দেশের সরকার পতন

Icon

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৬:৪২

জেন-জির আন্দোলনে আরেক দেশের সরকার পতন

জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক প্রধান ভলকার তুর্ক নিরাপত্তা বাহিনীর ‘অতিরিক্ত ও অপ্রয়োজনীয় বলপ্রয়োগ’-এর নিন্দা করে জানান, বিক্ষোভে অন্তত ২২ জন নিহত ও ১০০ জন আহত হয়েছেন।

বাংলাদেশ ও নেপালের মতো আফ্রিকার দেশ মাদাগাস্কারেও জেন-জির আন্দোলনে সরকার পতন হয়েছে। বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশটিতে টানা বিদ্যুৎ ও পানির সংকটে ক্ষুব্ধ তরুণদের আন্দোলনের মুখে সরকার ভেঙে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড্রি রাজোয়েলিনা।

সোমবার টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রেসিডেন্ট বলেন, “সরকারের কেউ যদি দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়ে থাকেন, আমরা তা স্বীকার করছি এবং এজন্য দুঃখিত।”

গত বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া এ আন্দোলন দ্রুত দেশের আটটি শহরে ছড়িয়ে পড়ে। রাজধানী আন্টানানারিভোতে প্রথমে বিক্ষোভ শুরু হলেও পরে তা গণআন্দোলনের রূপ নেয়।

তরুণদের মূল স্লোগান ছিল: “আমরা বাঁচতে চাই, শুধু টিকে থাকতে নয়।”

জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক প্রধান ভলকার তুর্ক নিরাপত্তা বাহিনীর ‘অতিরিক্ত ও অপ্রয়োজনীয় বলপ্রয়োগ’-এর নিন্দা করে জানান, বিক্ষোভে অন্তত ২২ জন নিহত ও ১০০ জন আহত হয়েছেন।

তিনি আরও অভিযোগ করেন, বিক্ষোভকারীদের ওপর রাবার বুলেট ও টিয়ারগ্যাস ছাড়াও সরাসরি গুলি চালানো হয়েছে, অনেককে নির্বিচারে আটক ও প্রহার করা হয়েছে।

তবে মাদাগাস্কারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জাতিসংঘের এই হিসাবকে ‘গুজব ও ভুল তথ্যের ওপর ভিত্তি করে’ করা হয়েছে বলে প্রত্যাখ্যান করেছে।

জাতিসংঘ জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে বিক্ষোভকারী ছাড়াও পথচারী ও লুটপাটে নিহতরা রয়েছেন। আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করেছেন, তাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে ভাড়া করা গুন্ডারা বিভিন্ন বাড়িঘরে লুটপাট চালিয়েছে।

সরকারের পতন

এর আগেই ব্যর্থতার দায়ে জ্বালানি মন্ত্রীকে বরখাস্ত করেছিলেন প্রেসিডেন্ট রাজোয়েলিনা। তবে জনরোষ থামেনি; আন্দোলনকারীরা প্রেসিডেন্টসহ পুরো সরকারের পদত্যাগ দাবি করে।

অবশেষে সোমবার তিনি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বসহ পুরো সরকার ভেঙে দেওয়ার ঘোষণা দেন। তিনি জানান, আগামী তিন দিনের মধ্যে নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দেওয়া হবে এবং নতুন মন্ত্রিসভা গঠিত হবে।

এর আগে বিদায়ী মন্ত্রীরা অন্তর্বর্তীকালীন দায়িত্ব পালন করবেন।

রাজোয়েলিনা বলেন, “বিদ্যুৎ ও পানি সংকট মানুষের জীবনে যে দুঃখ ও কষ্ট সৃষ্টি করেছে, তা আমি বুঝি। তরুণদের সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় বসতে চাই।”

প্রেক্ষাপট

১৯৬০ সালে মাদাগাস্কারের স্বাধীনতার পর দেশটিতে একের পর এক রাজনৈতিক অস্থিরতা হয়েছে। ২০০৯ সালের গণবিক্ষোভে সাবেক প্রেসিডেন্ট মার্ক রাভালোমানানাকে ক্ষমতাচ্যুত হতে হয় এবং তখনই রাজোয়েলিনা প্রথম ক্ষমতায় আসেন।

২০২৩ সালের নির্বাচনে তিনি তৃতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।

এবার তরুণ প্রজন্মের এই আন্দোলন তার জন্য সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আন্দোলনকারীদের হাতে থাকা এক ব্যানারে লেখা ছিল: ‘আমরা ঝামেলা চাই না, শুধু আমাদের অধিকার চাই।’ -এই বার্তাই মাদাগাস্কারের ‘জেন-জি আন্দোলনের’ সারমর্ম।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫