হামলা প্রতিহত করে অন্তত ২০ তালেবানকে হত্যার দাবি পাকিস্তানের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ১৭:১১
-68ef8155bea2e.jpg)
আফগান তালেবানদের সেনাচৌকি ধ্বংসের ছবি সরবরাহ করেছে পাকিস্তান।
পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী আফগান তালেবানের একাধিক সীমান্ত হামলা প্রতিহত করেছে বলে দাবি করেছে ইসলামাবাদ। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, বুধবার ভোররাতে আফগান তালেবান বেলুচিস্তানের স্পিন বোলদাক সীমান্তে চারটি স্থানে ‘কাপুরুষোচিত হামলা’ চালায়। পাল্টা অভিযানে পাকিস্তানি সেনারা অন্তত ১৫ থেকে ২০ জন আফগান তালেবানকে হত্যা করেছে।
ডন জানিয়েছে, আইএসপিআরের বিবৃতিতে বলা হয়, হামলার সময় আফগান তালেবান বেসামরিক গ্রামগুলোকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে, যা আন্তর্জাতিক মানবিক নীতির লঙ্ঘন। তারা তাদের দিকের ‘পাক-আফগান ফ্রেন্ডশিপ গেট’ও ধ্বংস করেছে। এটি দুই দেশের পারস্পরিক বাণিজ্য ও সীমান্তবাসীদের চলাচলের অধিকারের প্রতি তাদের মানসিকতা তুলে ধরে।
সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়, একই রাতে খাইবার পাখতুনখোয়ার কুররম সেক্টরেও আফগান তালেবান ও নিষিদ্ধ তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) পাকিস্তানি পোস্টে হামলার চেষ্টা চালায়। তবে নিরাপত্তা বাহিনী দ্রুত প্রতিরোধ গড়ে তোলে। এতে আফগান পক্ষের আটটি পোস্ট ও ছয়টি ট্যাংক ধ্বংস হয়। নিহত হয় আরও ২৫ থেকে ৩০ জন জঙ্গি।
আইএসপিআর অভিযোগ করেছে, আফগানিস্তানের পক্ষ থেকে হামলার উসকানি আসছে, যদিও কাবুল সরকার দাবি করছে, পাকিস্তানই প্রথম আঘাত করেছে। পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী এই দাবিকে ‘পুরোপুরি মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর’ আখ্যা দিয়েছে।
আফগান তালেবানের মুখপাত্র জবিহুল্লাহ মুজাহিদ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দাবি করেন, পাকিস্তান বাহিনী প্রথমে আফগান ভূখণ্ডে হামলা চালায়, যার জবাবে আফগান বাহিনী প্রতিক্রিয়া জানায়। পাকিস্তানি হামলায় ১২ জনের বেশি বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং শতাধিক আহত হয়েছে।
এক সপ্তাহের মধ্যে পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্তে এটি তৃতীয় বড় সংঘর্ষ। এর আগে কুররমে সংঘর্ষে ২৩ জন পাকিস্তানি সেনা নিহত ও ২৯ জন আহত হয়। আইএসপিআর দাবি করেছে, পাল্টা অভিযানে ২০০-র বেশি তালেবান ও সহযোগী জঙ্গিকে হত্যা করা হয়েছে।
কাবুল বলছে, এসব হামলা তারা পাকিস্তানি বিমান হামলার জবাবে চালিয়েছে, যদিও ইসলামাবাদ তা অস্বীকার করছে।
পাকিস্তান বহুবার আফগান কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করেছে যেন তাদের ভূমি পাকিস্তানবিরোধী সন্ত্রাসে ব্যবহার না হয়। তবে আফগান সরকার বলছে, তাদের মাটি কোনো প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হচ্ছে না।
সীমান্ত সংঘর্ষের এই ধারাবাহিকতা দুই দেশের সম্পর্ককে আরও শীতল করে তুলছে। পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী খাজা আসিফ সম্প্রতি বলেন, “বর্তমানে ইসলামাবাদ ও কাবুলের মধ্যে কোনো কার্যকর যোগাযোগ বা সম্পর্ক নেই। পরিস্থিতি শত্রুতাপূর্ণ এবং যে কোনো সময় তা পূর্ণাঙ্গ সংঘর্ষে পরিণত হতে পারে।”