কাশ্মীরে ক্রিকেট খেলার ‘অপরাধে’ ১০ তরুণের নামে মামলা

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৩:০০

শোপিয়ানের ক্রিকেট মাঠে এ ক্রিকেট টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হয়। ছবি : দ্য প্রিন্ট
ভারত অধিকৃত জম্মু-কাশ্মীরের শোপিয়ানে সম্প্রতি একটি ক্রিকেট টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হয়। ভারতীয় বাহিনীর হাতে নিহত সশস্ত্র যোদ্ধা সৈয়দ রুবানের স্মরণে এ টুর্নামেন্ট আয়োজন করা হয়। আর এতেই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন।
অংশগ্রহণকারী নয় ক্রিকেটার ও টুর্নামেন্টের আয়োজক রুবানের ভাই সৈয়দ তাজামুল ইমরানের নামে বিতর্কিত ‘বেআইনি কার্যকলাপ দমন আইনে (ইউএপিএ)’ মামলা করা হয়।
কাশ্মীর প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানান, গত ৩ সেপ্টেম্বর ক্রিকেট টুর্নামেন্টটির আয়োজন করা হয়। এরপর আয়োজকসহ ১০ তরুণের বিরুদ্ধে ইউএপিএ আইনে মামলা হয়।
তাদের দাবি, সৈয়দ রুবান সশস্ত্র সংগঠনের সাথে যুক্ত ছিলেন। গত বছর জানুয়ারিতে নিরাপত্তাবাহিনীর অভিযানে তিনি নিহত হন। তার স্মরণে টুর্নামেন্ট আয়োজনের মানেই হলো সশস্ত্রতাকে মহিমান্বিত করা, যা আইনত অপরাধ।
জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ জানায়, শোপিয়ানের নাজনিনপুরা এলাকার বাসিন্দা সৈয়দ রুবান ২০১৮ সালে সশস্ত্র সংগঠন আল-বদরে যোগ দেন। পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়া হিজবুল মুজাহিদিন কমান্ডার সৈয়দ নাভীদ বাবু তার চাচাতো ভাই।
পুলিশ ও প্রশাসন থেকে এ টুর্নামেন্ট আয়োজনকে ‘সন্ত্রাসবাদের পক্ষে প্রচারণা’ বলে উল্লেখ করা হলেও এর আয়োজক সৈয়দ তাজামুলের বক্তব্য ভিন্ন। এক বিবৃতিতে স্থানীয় অ্যাক্টিভিস্ট ও জম্মু-কাশ্মীর পিপলস এসোসিয়েশনের আহবায়ক সৈয়দ তাজামুল বলেন, আমি ক্রিকেট জার্সি বিতরণ করেছি, কারণ এটি ছিল আমার ভাইয়ের প্রিয় খেলা। তিনি ছিলেন একজন প্রতিভাবান ক্রিকেটার। তার বন্ধুরা জানেন, এই খেলাটি তিনি কতটা পছন্দ করতেন আর এতে তার প্রতিভা সম্পর্কেও। এই টুর্নামেন্ট আয়োজনের লক্ষ্য হলো- তরুণদের খেলার প্রতি আকৃষ্ট করা। তারা যেন মাদক বা সামাজিক অপকর্মে জড়িত না হন।
ভারতের ক্রমাগত আগ্রাসনে কাশ্মীরিদের জীবন থেকে যেন বিনোদন, খেলাধুলার মতো স্বাভাবিক বিষয়গুলো হারিয়ে যেতে বসেছে। তাই এ আয়োজনে সাধারণ জনগণের ব্যাপক সাড়া পাওয়া যায়।
উল্লেখ্য গত বছর লোকসভায় পাস হয় ‘বেআইনি কার্যকলাপ দমন আইন ২০১৯’ বা ইউএপিএ সংশোধনী বিল। সংশোধিত আইন অনুযায়ী, শুধু কোনো গোষ্ঠী বা প্রতিষ্ঠানই নয়, কোনো ব্যক্তিকেও সন্ত্রাসবাদী হিসেবে চিহ্নিত করতে পারবে কেন্দ্র সরকার।