যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জিততে গেলে চাই ২৭০টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট। ডোনাল্ড ট্রাম্প বা তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী জো বাইডেন ২৭০ ছুঁতে পারলেই জিতে যাবেন নির্বাচনে।
দেশটির প্রতিটি অঙ্গরাজ্যের জন্য নির্দিষ্ট ইলেকটোরাল কলেজ ভোট আছে। নির্বাচনে ইলেকটোরাল কলেজের মোট ভোটসংখ্যা ৫৩৮। যে প্রার্থী ওই অঙ্গরাজ্যে জিতবেন, তিনি ওই ইলেকটোরাল কলেজ ভোট পাবেন। যেমন ধরা যাক ফ্লোরিডা, সেখানে ২৯টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট আছে। ট্রাম্প জিতলে ওই রাজ্যের ২৭টি ভোটই তিনি পেয়ে যাবেন।
প্রতিটি অঙ্গরাজ্যের আয়তন, জনসংখ্যা ও কংগ্রেসে কতজন প্রতিনিধি আছেন সেই হিসাব করে ঠিক হয় তার ইলেকটোরাল কলেজ ভোটের সংখ্যা। সব মিলিয়ে ২৭০টি ইলেকটোরাল কলেজ জিতলেই পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন ট্রাম্প বা বাইডেন।
কিছু অঙ্গরাজ্যে ইলেকটোরাল কলেজ ভোটের সংখ্যা বেশি, কিছু অঙ্গরাজ্যে কম। এর মধ্যে কিছু অঙ্গরাজ্যকে সুইং স্টেট বলা হয়- যেমন ফ্লোরিডা। যুক্তরাষ্টের কিছু অঙ্গরাজ্য রিপাবলিকানদের ঘাঁটি, কিছু অঙ্গরাজ্যে ডেমোক্র্যাটদের ঘাঁটি। সেই অঙ্গরাজ্যগুলো তারা বরাবর জিতে আসে।
কিছু অঙ্গরাজ্য আছে, যেখানে কখনো রিপাবলিকানরা জেতে, কখনো ডেমোক্র্যাটরা। সেগুলোকে বলে সুইং স্টেট। এই সুইং স্টেটের দিকেই নজর রয়েছে বিশেষজ্ঞদের। যেমন ফ্লোরিডা হলো সুইং স্টেট। এরকম বেশ কিছু সুইং স্টেট আছে, যা জিততে পারলে ট্রাম্প বা বাইডেন এগিয়ে যাবেন।
প্রতিটি অঙ্গরাজ্যের জন্য নির্দিষ্টসংখ্যক ইলেকটোরাল ভোট রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের কথা বলা যায়। ২০১০ সালের সমঝোতা অনুযায়ী- সেখানে রয়েছে সর্বোচ্চ ৫৫টি ইলেকটোরাল ভোট। আবার আলাস্কা, সাউথ ডাকোটা, ভারমন্টের মতো অঙ্গরাজ্যগুলোর প্রতিটিতে রয়েছে তিনটি করে ইলেকটোরাল ভোট।
কথা হলো, একেক অঙ্গরাজ্যের জন্য এই একেক সংখ্যক ইলেকটোরাল ভোট কী করে নির্ধারিত হয়? কোন অঙ্গরাজ্যে কত ইলেকটোরাল ভোট থাকবে, তা নির্ধারিত হয় সেখানে কতটি কংগ্রেসনাল ডিস্ট্রিক্ট রয়েছে, তার মাধ্যমে। প্রতিটি কংগ্রেসনাল ডিস্ট্রিক্টের জন্য একটি করে ভোট ও দুইজন সিনেটরের জন্য দুটি ভোট বরাদ্দ থাকে।
উদাহরণ হিসেবে আবারো ক্যালিফোর্নিয়ার কথা উল্লেখ করা যাক। অঙ্গরাজ্যে ৫৩টি কংগ্রেসনাল ডিস্ট্রিক্ট রয়েছে। অন্য অঙ্গরাজ্যগুলোর মতোই সেখানে রয়েছে দুইটি সিনেট আসন। ফলে অঙ্গরাজ্যটির মোট ইলেকটোরাল ভোটের সংখ্যা ৫৫টি। তবে এই ভোট কিন্তু সিনেটর, নিম্নকক্ষের প্রতিনিধি, গভর্নর বা এমন কেউ দেবে না। এজন্য একেবারে আলাদা একটি ভোটার দলকে নির্বাচন করা হয়।
এই ইলেকটোরাল কলেজ নিয়েই এবার ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। কারণ এই পদ্ধতিতে বেশ কিছু অঙ্গরাজ্য অন্যগুলোর তুলনায় বেশি ক্ষমতা পায়। এর কারণে ক্যালিফোর্নিয়া, টেক্সাস, ফ্লোরিডা, নিউইয়র্ক, ইলিনয়, পেনসিলভানিয়া- এই ছয় অঙ্গরাজ্যের হাতেই রয়েছে ১৯১টি ইলেকটোরাল ভোট। ‘উইনার টেক ইট অল’ নীতির কারণে এই ছয় অঙ্গরাজ্য তাই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।