
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জীবনীকার মাইকেল ডি’অ্যান্টোনিও বলেন, তার মতে- সদ্য নির্বাচনে হেরে যাওয়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট টেলিভিশন কেরিয়ারে নতুন জোয়ার আনতে পারেন।
তিনি করছেন, প্রেসিডেন্ট পদ থেকে সরে যাওয়ার পর নিজের আলাদা টেলিভিশন নেটওয়ার্ক চালু করবেন ট্রাম্প।
ট্রাম্পের জীবনের ওপর ভিত্তি করে দুটি বই লিখেছেন মার্কিন সাংবাদিক ও পুলিৎজার পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখক মাইকেল। বহু বছর ধরে তিনি রীতিমত কাছ থেকে দেখে আসছেন বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্টকে।
দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর ডয়চে ভেলের সাথে কথা বলেন মাইকেল। সেখানে তিনি জানান, ভবিষ্যতে রাজনীতি নয়, টেলিভিশনের পর্দাতেই জমি শক্ত করতে দেখা যেতে পারে ট্রাম্প ও তার পরিবারকে। ২০০০ সাল থেকেই কিন্তু ট্রাম্পের আয়ের মূল উৎস হয়ে উঠেছে টেলিভিশন। তাছাড়া নির্বাচনি প্রচারকালীন ট্রাম্পের অঙ্গভঙ্গি ও প্রচারের ধরন থেকে স্পষ্ট বোঝা যায় যে আসলেই ট্রাম্প কত বড় একজন পারফর্মার।
তাছাড়া ট্রাম্পের টেলিভিশন কেরিয়ারে নতুন জোয়ার আনার পেছনে বড় লাভের হিসাবও থাকতে পারে। মাইকেল মনে করছেন, প্রেসিডেন্ট পদ থেকে সরে যাওয়ার পর নিজের আলাদা টেলিভিশন নেটওয়ার্ক চালু করবেন ট্রাম্প। আর তা অবশ্যই লাভজনক একটি বিনিয়োগ হবে।
ভোটের হিসাব অনুযায়ী, ট্রাম্প মোট সাত কোটি মানুষের ভোট পেয়েছেন, যা প্রায় তিন কোটি পরিবারের মোট ভোটের সংখ্যা হতে পারে। আর এই তিন কোটি পরিবার যদি ট্রাম্পের নতুন টেলিভিশন নেটওয়ার্কের জন্য গড়ে এক ডলারও প্রতিমাসে খরচ করে, তাহলেই স্পষ্ট হয়ে যায় যে, এই উদ্যোগ থেকে ঠিক কতটা লাভ করতে পারবেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট।
এই অনুমানে পৌঁছতে মাইকেল মাথায় রাখছেন ট্রাম্পের ব্যবসায়িক ইতিহাস, যা তিনি গভীরভাবে লক্ষ্য করেছেন।
ইতিহাস বলে, মার্কিন প্রেসিডেন্টরা ক্ষমতা ছাড়ার পরেও জনসাধারণের জন্য তাদের কর্মকাণ্ডকে উন্মুক্ত রাখতে পছন্দ করেন। এজন্য প্রত্যেক প্রেসিডেন্টই তাদের শাসনমেয়াদ শেষে একটি ‘প্রেসিডেন্সিয়াল লাইব্রেরি' বানান ও সেখানে তাদের শাসনকালের সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ নথি রেখে দেন, যেন সেগুলো ভবিষ্যতে গবেষণার কাজে লাগতে পারে।
কিন্তু ট্রাম্পও যে এই পথে হাঁটবেন, তা নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না মাইকেল। তার মতে, ট্রাম্পের জন্য নির্দিষ্ট একটি জাদুঘর বা পাঠাগার তৈরি হলে তাতে কী কী রাখা হবে, সেটা তার কাছে এখনো পরিষ্কার নয়।
তবে মাইকেল এব্যাপারে নিশ্চিত যে শুধু ট্রাম্পই নয়, বরং তার গোটা পরিবারই ট্রাম্প-শাসনের মেয়াদ ফুরোলে ‘পলিটিক্যাল এন্টারটেইনমেন্ট' জগতে পা রাখবেন।
আর যেহেতু ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের একটি অংশের মানুষের মানসিকতার প্রতিনিধিত্ব করে আসছেন, ফলে সেই অংশের কাছে ট্রাম্পের গ্রহণযোগ্যতা কোনোভাবেই কমবে না, মনে করেন মাইকেল। বরং, নির্বাচনে হারকেও নিজের বিরোধীগোষ্ঠীদের চক্রান্ত হিসাবে দেখিয়ে তা আখেরে নিজের টেলিভিশন কেরিয়ারে কাজে লাগাতে পারেন ট্রাম্প।- ডয়চে ভেলে