ফাইজারের টিকা জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন যুক্তরাষ্ট্রের

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২ ডিসেম্বর ২০২০, ১১:৫৯
ফাইজার-বায়োএনটেকের করোনাভাইরাসের টিকা জরুরি ব্যবহারের জন্য অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন (এফডিএ)।
এর একদিন আগে বিশেষজ্ঞ উপদেষ্টা কমিটির সুপারিশের পর গতকাল শুক্রবার (১১ ডিসেম্বর) রাতে এমন অনুমোদনের কথা জানানো হয়েছে।
বিশ্বব্যাপী যখন চলছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ, সংক্রমণ বৃদ্ধির পাশাপাশি সমানতালে বেড়েই চলেছে প্রাণহানি। কোনোভাবেই লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছিল না এই ভাইরাসের- ঠিক তখনই একের পর এক দেশ এই মহামারি মোকাবিলায় অনুমোদন দিয়ে যাচ্ছে কভিড-১৯ ভ্যাকসিন।
ফাইজারের করোনার টিকার অনুমোদন সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে এফডিএ ও তার উপদেষ্টা কমিটি গত বৃহস্পতিবার (১০ ডিসেম্বর) দীর্ঘ বৈঠক করে। বৈঠকের পর জানানো হয়, বিশেষজ্ঞ কমিটির ১৭ সদস্য করোনা প্রতিরোধে ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকার জরুরি অনুমোদনের সুপারিশের পক্ষে ভোট দিয়েছেন, বিপক্ষে ভোট দেন চারজন আর একজন ভোটদানে বিরত থাকেন।
এফডিএ কমিশনার স্টিফেন হ্যান গতকাল রাতে দেয়া এক বিবৃতিতে ভ্যাকসিন অনুমোদনের কথা জানান। তিনি বলেন, ভ্যাকসিনের জরুরি ব্যবহারের অনুমতি দেয়া একটি মাইলফলক। মহামারি যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের অগণিত পরিবারের ব্যাপক ক্ষতি করেছে।
করোনায় তিন লাখ মানুষের মৃত্যুর পর যুক্তরাষ্ট্র প্রথম ভ্যাকসিনের অনুমোদন করেছে। করোনার সংক্রমণে এখন প্রতিদিন গড়ে তিন হাজার মানুষের মৃত্যু হচ্ছে দেশটিতে।
এফডিএ’র অনুমোদন পাওয়া ফাইজার ও বায়োএনটেকের টিকা খুব শিগগিরই স্বাস্থ্যকর্মী ও নার্সিং হোমে থাকা রোগীদের শরীরে প্রয়োগ করা হবে।
টিকা অনুমোদনে এফডিএ’র সিদ্ধান্ত ব্যাপকভাবে পর্যালোচনা চালানোর পরই এসেছে। এছাড়া এর পেছনে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের রাজনৈতিক চাপও ছিল। ট্রাম্প প্রশাসন এই সংস্থাকে খুবই ধীর বলে অভিযোগ করেন এবং শুক্রবারের মধ্যে টিকার অনুমোদন না দেয়া হলে এফডিএ প্রধান স্টিফেন হ্যানকে সরিয়ে দেয়ারও হুমকি দেয়।
এই পদক্ষেপটি মার্কিন ইতিহাসে সবচেয়ে বড় টিকাদান কর্মসূচি, তবে এটির বৈশ্বিক প্রভাবও রয়েছে কারণ যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্ত অনেক দেশের কাছে রোল মডেল মনে হতে পারে এবং তারাও ভ্যাকসিন নেয়ার কার্যক্রম শুরু করতে পারে।
ফাইজার ও বায়োএনটেকের ভ্যাকসিন ছাড়াও মর্ডানার ভ্যাকসিন অনুমোদনের বিষয়টিও ভাবছে যুক্তরাষ্ট্র। আগামী সপ্তাহেই এই ভ্যাকসিনের অনুমোদন দেয়া হতে পারে। এছাড়া জানুয়ারির শুরুর দিকে জনসন অ্যান্ড জনসনের ভ্যাকসিনও বাজারে আসতে পারে। এটা বর্তমানে চূড়ান্ত ট্রায়ালে আছে।
ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ করা ট্রাম্প প্রশাসনের এক কর্মকর্তার দেয়া তথ্যমতে, ফাইজার-বায়োএনটেকের ৩ মিলিয়ন টিকা প্রথম ধাপে দেশব্যাপী দেয়া হবে। একই পরিমান টিকা দ্বিতীয় ধাপে প্রয়োগের জন্য রিজার্ভ করে রাখা হবে।
এর আগে যুক্তরাজ্য, বাহরাইন ও কানাডা ফাইজারের কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন ব্যবহারের অনুমোদন দেয়।