
নাইজেরিয়ায় মুক্তি পেলো ৩৪৪ জন স্কুল ছাত্র। তবে বোকো হারাম তাদের অপহরণ করেছিল কি না, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
গত ১১ ডিসেম্বর উত্তর-পশ্চিম নাইজেরিয়ার কানকারার সরকারি আবাসিক স্কুল থেকে অপহরণ করা হয়েছিল ওই স্কুল ছাত্রদের। পরে চরমপন্থি গোষ্ঠী বোকো হারাম এই অপহরণের দায় স্বীকার করেছিল। তবে তারাই অপহরণ করেছিল না কি অন্য কেউ এই কাজ করেছে, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে সরকারি কর্তাদের মনে।
গত ১১ ডিসেম্বর যখন ওই আবাসিক স্কুলে চরমপন্থিরা হানা দেয়, তখন সেখানে আটশর বেশি ছাত্র ছিলেন। অনেকেই পাশের জঙ্গলে পালিয়ে যায়। ৩৪৪ জনকে ধরে নিয়ে যায় জঙ্গিরা। কাটসিনার গভর্নর মাসারি জানিয়েছেন, পাশের রাজ্যে গিয়ে অধিকাংশ ছাত্রকে মুক্তি দিয়েছে জঙ্গিরা। তাদের এখন ডাক্তারি পরীক্ষা করা হচ্ছে। তারপর তাদের পরিবারের হাতে তুলে দেয়া হবে।
নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্টের টুইট, গোটা দেশ খুবই উদ্বেগের মধ্যে ছিলো। এখন সকলে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে। গভর্নর মাসারি, গোয়েন্দা, সেনা ও পুলিশের কাছে আমরা সকলেই কৃতজ্ঞ।
ছাত্রদের মুক্তির আগে সামাজিক মিডিয়ায় একটি ভিডিও আসে। সেখানে দেখা গেছে, বোকো হারামের কিছু সদস্য ওই স্কুল ছাত্রদের সঙ্গে। তাদের অনুরোধ, নিরাপত্তা বাহিনী যেন এলাকা ছেড়ে চলে যায়। স্থানীয় সংবাদপত্র কাটসিনা পোস্টের রিপোর্ট হলো, সরকারের সঙ্গে অপহরণকারীদের চুক্তি হয়। তারপর ছাত্রদের ছেড়ে তারা পালায়।
ডিডাব্লিউর পশ্চিম আফ্রিকার সংবাদদাতা ফ্লোরিশ চুকুউরা জানিয়েছেন, সেনা, পুলিশ ও আরো দুইটি নিরাপত্তা সংস্থা একযোগে কাজ করছিল। তাদের প্রয়াস সফল হয়েছে।
ডিডাব্লিউর সংবাদদাতা জানাচ্ছেন, বোকো হারাম এই অপহরণের দায় স্বীকার করেছিল। কিন্তু পুলিশ ও স্থানীয় মানুষের দাবি, স্থানীয় অপরাধীরা এই কাজের পিছনে ছিলো। কিছুদিন হলো, তারা বোকো হারামের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেছে। অনেকে তাদের বোকো হারামের শাখা সংগঠন বলেন। তবে যারাই অপহরণ করুক না কেন, ছাত্ররা মুক্তি পেয়েছে এটাই বড় কথা।
তবে বোকো হারাম যদি এই অপহরণের পিছনে থাকে, তা হলে বুঝতে হবে, তারা এই অঞ্চলেও তাদের প্রভাব বাড়াবার চেষ্টা করছে।
গভর্নর মাসারি জানিয়েছেন, তিনি ওই আবাসিক স্কুলের নিরাপত্তা নিয়ে পুলিশের সঙ্গে আলোচনা করছেন। বেসরকারি নিরাপত্তা রক্ষী নিয়োগ করা হবে। গত কয়েকদিনের অভিজ্ঞতা ও আতঙ্ক থেকে শিক্ষা নিয়ে তিনি একগুচ্ছ ব্যবস্থা নিতে চান।
কাটসিনা হলো প্রেসিডেন্টের হোম স্টেট। ক্ষমতায় আসার পর নিজের রাজ্যে জঙ্গিদের কার্যকলাপ বন্ধ করতে না পারায় প্রেসিডেন্টেরও প্রবল সমালোচনা হচ্ছে।