Logo
×

Follow Us

আন্তর্জাতিক

ভারতে নতুন ধরনের ‘ডবল মিউট্যান্ট’ করোনা শনাক্ত

Icon

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ২৫ মার্চ ২০২১, ০৯:৩৬

ভারতে নতুন ধরনের ‘ডবল মিউট্যান্ট’ করোনা শনাক্ত

ভারতে নতুন ধরনের ‘ডবল মিউট্যান্ট’ করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ ধরনের ভাইরাসে দুইটি মিউটেশন বা ডিএনএ পরিবর্তনের দুই ধরনের ক্ষমতা থাকে, যা শরীরের সাধারণ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে পাশ কাটিয়ে আক্রমণ করে বা রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেক বাড়িয়ে দেয়।

সেইসাথে দেশটিতে ১০ হাজার ৭৮৭টি নমুনা পরীক্ষা করে করোনার আরো ৭৭১টি ধরন শনাক্ত হয়েছে। তার মধ্যে ৭৩৬টি যুক্তরাজ্যে শনাক্ত হওয়া ভাইরাসের ধরন, ৩৪টি দক্ষিণ আফ্রিকায় পাওয়া ধরন আর একটি ব্রাজিলের ভাইরাসের ধরন পাওয়া গেছে।

ভারতে সম্প্রতি করোনাভাইরাসে শনাক্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার খবরের মধ্যেই এসব তথ্য জানা গেল। তবে দেশটির সরকার বলছে, সাম্প্রতিক নতুন শনাক্ত রোগী বৃদ্ধির সাথে ভাইরাসের এসব নতুন ধরন পাওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই।

গতকাল বুধবার (২৪ মার্চ) ভারতে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৪৭ হাজার ২৬২ নতুন রোগী শনাক্ত আর ২৭৫ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়। এই বছরের মধ্যে একদিনে এটাই ভারতে সবচেয়ে বেশি রোগী শনাক্তের রেকর্ড।

ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণে থাকা ১০টি জাতীয় গবেষণাগারের এসব নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সিং করে এসব তথ্য জানা গেছে।

ভাইরাসের মধ্যে থাকা জেনেটিক কোড অনেকটা ব্যবহার বিবরণীর মতো। ভাইরাসের ক্ষেত্রে মিউটেশন বা ডিএনএ’র পরিবর্তন করাও স্বাভাবিক একটি ব্যাপার। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সেগুলো এত বেশি গুরুত্বহীন যে, শরীরের ভেতর বড় কোনো অসুস্থতা বা সংক্রমণ তৈরি করতে পারে না।

কিন্তু যুক্তরাজ্যে বা দক্ষিণ আফ্রিকায় পাওয়া নতুন ধরনের ভাইরাসের কিছু কিছু মিউটেশন আরো বেশি সংক্রামক এমনকি মৃত্যুর কারণ হয়ে উঠতে পারে।

ভাইরোলজিস্ট শহিদ জামিল ব্যাখ্যা করে বলেন, ডবল মিউটেশন মানে হলো- কোনো একটা ভাইরাসে একইসাথে দুইটি মিউটেশন বা পরিবর্তন করার ক্ষমতা রয়েছে। ভাইরাসের স্পাইক প্রোটিনে দুইটি মিউটেশন থাকার মানে হলো- সেটি আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেক বাড়িয়ে দেয় ও ভাইরাসকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেয়। ফলে এটি আরো বেশি সংক্রামক হয়ে ওঠে।

স্পাইক প্রোটিন হলো ভাইরাসের সেই অংশটি, যা মানব কোষের ভেতর প্রবেশ করে থাকে। ড. শহিদ ধারণা করেন, ভারতে হয়তো দুইটি ভাইরাসের আলাদা ধরনের একটি যোগসূত্র তৈরি হয়েছে।

তবে এসব নতুন ধরনের সাথে ভারতে সম্প্রতি করোনাভাইরাস রোগী শনাক্তের হার বৃদ্ধির কোন সম্পর্ক থাকার কথা নাকচ করে দিয়ে ভারত সরকার বলেছে, যদিও নানা ধরনের ভাইরাসের একটি উদ্বেগ রয়েছে ও নতুন ধরনের ডবল মিউট্যান্ট ভাইরাস ভারতে পাওয়া গেছে, কিন্তু সেগুলো এতো বেশি সংখ্যায় পাওয়া যায়নি যাতে বলা যাবে যে, কিছু রাজ্যে হঠাৎ করে শনাক্তের হার বেড়ে যাওয়ার সাথে সম্পর্ক রয়েছে।

জিনোম সিকোয়েন্সিং করার জন্য সরকারের প্রতি বিশেষজ্ঞদের আহবানের পর নতুন এসব তথ্য বেরিয়ে এলো। বিশ্বে ভারত হচ্ছে করোনাভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্সিং করা পঞ্চম দেশ।

গত বছরের জানুয়ারিতে দেশটিতে প্রথম করোনাভাইরাস রোগী শনাক্ত হয়। ভারতে এ পর্যন্ত এক কোটি ১৭ লাখ ৮৭ হাজার ১৩ জন করোনাভাইরাস রোগী শনাক্ত হয়েছে ও এক লাখ ৬০ হাজার ৭২৬ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

চলতি মাস থেকে দেশটিতে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা হঠাৎ করে অনেক বেড়ে গেছে। যদিও এক বছর ধরে করোনাভাইরাস বিপর্যয়ে থাকা দেশটির স্বাস্থ্যখাত অনেকটাই নাজুক হয়ে পড়েছে। ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে অনেক রাজ্য আবার কারফিউ, লকডাউনের মতো কড়াকড়ি পদক্ষেপ নিতে চলেছে।

দিল্লি ও মুম্বাই শহর কর্তৃপক্ষ এর মধ্যেই বিমানবন্দর, রেল স্টেশন ও শপিং মলের মতো জায়গায় গণহারে র‍্যাপিড টেস্ট করার নির্দেশনা জারি করেছে। -বিবিসি

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫