আফগানিস্তান থেকে সৈন্য সরিয়ে নেয়া শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো জোট। ফাইল ছবি
আফগানিস্তান থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সেনা প্রত্যাহার শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো জোট। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, এর মাধ্যমে একটি অন্তহীন যুদ্ধ শেষ হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হলো।
সেপ্টেম্বরের ১১ তারিখের পর্যন্ত সেনা ফিরিয়ে নেয়ার প্রক্রিয়া চলবে। ২০ বছর ধরে আফগানিস্তানে উপস্থিতির রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো জোটের সেনাবাহিনীর।
যদিও এমন এক সময়ে সেনা প্রত্যাহার শুরু হলো যখন আফগানিস্তানে নতুন করে সংঘর্ষ বাড়তে শুরু করেছে।
গত বছর সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে তালেবানের এক চুক্তি অনুযায়ী এ বছর মে মাসের এক তারিখের মধ্যে সেনা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। চুক্তি অনুযায়ী আন্তর্জাতিক সেনাদের উপরে হামলা বন্ধ রাখতে হবে তালেবান বাহিনীকে।
বাইডেন গত মাসে এই সময়সীমা পিছিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তার মতে, সেপ্টেম্বরের ১১ তারিখ পর্যন্ত আফগানিস্তানে সেনা উপস্থিতি থাকা প্রয়োজন।
এই বছর ৯/১১ হামলার ২০ বছর পূর্ণ হতে যাচ্ছে। সেটিকে ঘিরে নিরাপত্তাজনিত হুমকির কথা মাথায় রেখে সেনা প্রত্যাহার সম্পন্ন করার তারিখ বর্ধিত করা হয়।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই সময়ে আফগানিস্তানের অন্য ইসলামপন্থী যোদ্ধাদের হামলা থেকে পশ্চিমা সেনাদের সুরক্ষা দিয়ে আসছে তালেবান বাহিনী। যদিও আফগান নিরাপত্তা বাহিনী ও বেসামরিক নাগরিকদের উপর তালেবানের হামলা বন্ধ হয়নি।
সেনাবাহিনী প্রত্যাহারের সময়ে কোনো ধরনের আক্রমণের ব্যাপারে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মার্কিন জেনারেল স্কট মিলার। তিনি বলেন, ভুলে যাবেন না, যেকোনো ধরনের আক্রমণের জবাব দেবার, আফগান নিরাপত্তা বাহিনীর উপরে আক্রমণে তাদের সহায়তায় সামরিক সক্ষমতা জোটের রয়েছে।
অন্যদিকে চুক্তি সত্ত্বেও তারিখ পিছিয়ে দেয়া সম্পর্কে তালেবানের এক মুখপাত্র বলেন, চুক্তির লঙ্ঘন দখলদার বাহিনীর (পশ্চিমা সেনা) উপর তালেবান যোদ্ধাদের যেকোনো ধরনের পাল্টা ব্যবস্থা নেবার নীতিগত সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। তবে কোনো ধরনের আক্রমণে যাওয়ার আগে তালেবান যোদ্ধারা তাদের নেতাদের নির্দেশের অপেক্ষা করবে।
নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সেনা প্রত্যাহারের নির্ধারিত সময়সীমা বড় ধরনের হামলা এড়ানোর ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। তবে সেনা প্রত্যাহারের ক্ষেত্রে সামরিক সরঞ্জাম সরিয়ে নিয়ার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়েছে মার্কিন বাহিনী। কোন সরঞ্জামগুলো দেশে ফেরত পাঠানো হবে আর কোনগুলো আফগানিস্তানে বাতিল হিসেবে বিক্রি করে দেয়া হবে তার তালিকা তৈরি করছে তারা। -বিবিসি