
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার সদস্য চন্দনা বাউড়ি
অনেক কষ্টে টেনেটুনে সংসার চালাতেন হতদরিদ্র চন্দনা বাউড়ি। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার সদস্য এখন তিনিই। ভোটে জেতার পরে শপথ নিতে গিয়েছিলেন বিধানসভায়। সেটাই প্রথম বার বিধানসভা দেখা।
শপথ নেয়ার সময় থেকেই করোনার বাড়াবাড়ি আর রাজ্যে লকডাউন পরিস্থিতি। সে কারণে আর যাওয়া হয়নি বিধানসভায়। ফলে এখন পর্যন্ত বিধায়ক হিসেবে প্রাপ্য বেতন পাননি তিনি।
বেতন ও বিভিন্ন ভাতা বাবদ পশ্চিমবঙ্গে একজন বিধায়ক মাসে মোটামুটি ৮২ হাজার টাকা পান। জুন মাসের মধ্যে অ্যাকাউন্ট খোলা হয়ে গেলে যে দিন শপথ নিয়েছেন সে দিন থেকে হিসাব করে পুরো টাকা জুলাইয়ের শুরুতে পাবেন। সেটা এক লাখ টাকার বেশিই হবে। এসব জেনে চন্দনা অবাক। প্রশ্ন, অত্ত টাকা মাইনে পাব?
বাঁকুড়া জেলার শালতোড়া বিধানসভা এলাকার প্রায় পুরোটাই গ্রাম। তার মধ্যে আবার গঙ্গাজলঘাটি ব্লকের যে অংশে চন্দনার বাড়ি সেই কেলাইয়ে একেবারেই নিম্নবিত্তদের বাস। স্বামী রাজমিস্ত্রি এবং চন্দনা নিজে স্বামীর সাথে জোগান দেয়ার কাজ করেন। বাড়িতে নেই শৌচাগারও। আর সেই ভাঙাচোরা জীবনের মাঝেই শালতোড়া কেন্দ্রে বিজেপির প্রার্থী হয়েছিলেন চন্দনা। প্রচারে বেরোনোর সময় বাচ্চাদের শাশুড়ির কাছে রেখে সকালে পান্তা খেয়েই বেরিয়ে পড়তেন চন্দনা। সঙ্গী হতেন স্বামী। এমনকি বাঁকুড়া প্রচারে এসে জনসভায় চন্দনার নাম বলেছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, আগামী দিনে বাংলাকে স্বপ্ন দেখাবে চন্দনা।
চন্দনা বলেন, কোনো দিন এমএলএ হবো, তা তো ভাবিইনি। মোদিজির স্বচ্ছ ভারত কর্মসূচিতে প্রথম বিজেপি অফিসে গিয়েছিলাম। তার পর থেকেই পার্টির হয়ে কাজ করছি। আমায় প্রার্থী করা হবে ভাবিইনি। সবাই চেষ্টা করেছে বলে আমি জিতে গেছি।
বেতনের অঙ্কটা শোনার পর এই টাকা কীভাবে খরচ করবেন সেটাই ভেবে উঠতে পারেন নি চন্দনা। তিনি জানান, কী করব এখন পর্যন্ত ভাবতে পারছি না। কিন্তু মানুষের জন্য ভালো হয় এমন কিছুই করব প্রথম বেতনের টাকায়। তার পরেও বেতনের টাকা ওই কাজেই লাগাব। অত টাকা তো আমাদের লাগবে না।