Logo
×

Follow Us

আন্তর্জাতিক

ল্যামডা ভ্যারিয়েন্ট কি করোনার তৃতীয় ঢেউ

Icon

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ২৯ জুলাই ২০২১, ১৪:০১

ল্যামডা ভ্যারিয়েন্ট কি করোনার তৃতীয় ঢেউ

প্রতীকী ছবি

করোনাভাইরাসের টিকা দুই ডোজ নেয়া থাকলেও ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট থেকে সুরক্ষিত নয়; এই ধরন আক্রমণ করতে পারে শরীরে। এরই মধ্যে নতুন আতঙ্ক ল্যামডা ভ্যারিয়েন্ট। 

কারণ ল্যাটিন আমেরিকা ও উত্তর আমেরিকায় দ্রুত ছড়াচ্ছে করোনার এই ল্যামডা ধরন। আর এই ধরন কতটা ভয়ংকর, তার গবেষণা শুরু হয়েছে।

বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ল্যাটিন আমেরিকায় পাওয়া এই ধরন দক্ষিণ আমেরিকাতে তো বটেই, উত্তর আমেরিকাতেও ছড়িয়ে পড়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দাবি, এখনো পর্যন্ত ২৯টি দেশে এই ধরনের ভাইরাস মিলেছে। ল্যামডা দ্রুত ছড়াচ্ছে। পেরুতে এপ্রিল মাস থেকে প্রায় ৮১ শতাংশ মানুষই ল্যামডা স্ট্রেনে আক্রান্ত হয়েছে। এদিকে গত ৬০ দিনে চিলিতে ল্যামডা স্ট্রেনে আক্রান্তের হার ৩২ শতাংশ। ব্রাজিলে গামা স্ট্রেনের থেকেও বেশি সংক্রামক হয়ে গেছে এই নয়া স্ট্রেন। এছাড়া আর্জেন্টিনা, ইকুয়েডোরেও এই ভ্যারিয়েন্টের খোঁজ মিলেছে।

২০২০ সালে পেরুতে প্রথম এই ধরন পাওয়া যায়। তবে তখনো বিশেষজ্ঞরা এই নতুন সংস্করণটিকে ততটা গুরুত্ব দেননি। গত কয়েকমাসে ল্যামডা ছড়াতে শুরু করেছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মতে, নয়া এই স্ট্রেন বেশি সংক্রামক ও বিপজ্জনকও। অভিযোজিত হয়ে আরো মারাত্মক হয়ে উঠেছে ল্যামডা স্ট্রেন। অ্যান্টিবডিকে দুর্বল করে দিতে পারে এই ভ্যারিয়েন্ট। তবে এখনই নিশ্চিতভাবে এ বিষয়ে কিছু বলা যাবে না। তবে উদ্বেগ যে রয়েছে তাও উড়িয়ে দিচ্ছে না বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

ল্যামডা ভ্যারিয়েন্ট টিকা প্রতিরোধী হতে পারে বলে এক গবেষণায় আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, এটি ডেল্টা, আলফা ও গামা ভ্যারিয়েন্টের তুলনায় বেশি সংক্রামক হতে পারে। করোনা টিকায় এর বিরুদ্ধে পর্যাপ্ত সুরক্ষা হয়ত পাওয়া যাবে না।

বিশেষজ্ঞরা বলেছিলেন, কয়েকমাসের মধ্যেই করোনার তৃতীয় ঢেউ আসতে চলেছে। বহু দেশ এখনো দ্বিতীয় ঢেউয়ের রেশ কাটিয়ে উঠতে পারেনি। তারই মধ্যে এশিয়ায় ডেল্টা ও ডেল্টা প্লাস ধরনের হদিস মেলে। দুইটি ভ্যারিয়েন্ট নিয়েই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন গবেষকরা। এই ল্যামডা ধরন দ্রুত ছড়ায় ও ভয়ংকর। ল্যামডা যে দ্রুত ছড়াচ্ছে, বিজ্ঞানীরা তা বুঝতে পারছেন। তবে এই সংস্করণটি কতটা ভয়ংকর, তা এখনো বোঝা যায়নি।

তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ভারত, যুক্তরাজ্য ও ব্রাজিলে প্রথম শনাক্ত হওয়া ভ্যারিয়েন্ট যথাক্রমে ডেল্টা, আলফা ও গামার তুলনায় ল্যামডা সম্ভবত বেশি ছোঁয়াচে। এই ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে টিকায় হয়ত কার্যকর সুরক্ষা পাওয়া যাবে না। পাবলিক হেলথ ইংল্যান্ড (পিএইচই) গত ২৩ জুন ল্যামডাকে উদ্বেগজনক হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে।

সান্তিয়াগোভিত্তিক ইউনিভার্সিটি অব চিলির গবেষকদের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রথমবারের মতো আমাদের তথ্যে দেখা যাচ্ছে ল্যামডা ভ্যারিয়েন্টের স্পাইক প্রোটিন নিউট্রাইলাইজিং অ্যান্টিবডিকে ফাঁকি দিতে ও অকার্যকারিতা বাড়াতে পারে।

চীনা টিকা করোনাভ্যাক নেয়া স্বাস্থ্যকর্মীদের রক্তের নমুনা পর্যালোচনার পর এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন গবেষকরা।

যুক্তরাজ্যের ওয়েলকাম সাঙ্গার ইন্সটিটিউটের কোভিড-১৯ জিনোমিক্স ইনিশিয়েটিভ জানায়, অন্যান্য ভ্যারিয়েন্টের তুলনায় ল্যামডার অস্বাভাবিক মিউটেশনের কারণে এই স্ট্রেইনের হুমকি সঠিকভাবে নিরূপণ করা কঠিন।

ল্যামডার বৈজ্ঞানিক নাম C.37। এটি করোনার সপ্তম ভ্যারিয়েন্ট। মূল ভাইরাসের চেয়ে এটি অনেক বেশি সংক্রামক বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ল্যামডাকে ‘ভ্যারিয়েন্ট অব ইন্টারেস্টের’ তকমা দেওয়া হয়েছে। এর অর্থ‌ সংক্রমণের ক্ষমতা ভালই। আক্রান্ত হলে সমস্যা যথেষ্ট। এই ভ্যারিয়েন্ট শরীরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিতে পারে। তবে এই ভ্যারিয়েন্ট সম্পর্কে জ্ঞান সীমিত। এজন্য আরো গবেষণা প্রয়োজন। পুরো চরিত্রটা বেরিয়ে এলেই একে নিয়ন্ত্রণের রাস্তা মিলবে। এটির প্রভাব আরো স্পষ্ট হয়ে যাবে। 

দক্ষিণ ও উত্তর আমেরিকায় ল্যামডাই তৃতীয় ঢেউ নিয়ে আসবে বলে কোনো কোনো বিশেষজ্ঞ মনে করছেন। আমেরিকায় নতুন করে করোনা ছড়াতে শুরু করেছে। নতুন করে কড়াকড়িও শুরু হয়েছে। 

ডাব্লিউএইচও জানিয়েছে, গোটা পৃথিবীতে আশি শতাংশ মানুষের টিকাকরণ না হওয়া পর্যন্ত করোনার আতঙ্ক কাটবে না। একের পর এক ঢেউ আসতেই থাকবে।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫