Logo
×

Follow Us

আন্তর্জাতিক

কাবুল বিমানবন্দরে বিস্ফোরণে জড়িত কারা এই আইএসকেপি?

Icon

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ২৭ আগস্ট ২০২১, ১৯:৫৩

কাবুল বিমানবন্দরে বিস্ফোরণে জড়িত কারা এই আইএসকেপি?

তালেবানের কাছে যুদ্ধে হেরে অস্ত্র সমর্পণ করছে আইএসকেপির কিছু সদস্য

হামলা হতে পারে বলে আশঙ্কা করার পর সত্যিই তা বাস্তবে রূপ নিল। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে বোমা বিস্ফোরণে এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়েছে। হামলার আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কয়েকটি মিত্র দেশ কাবুল বিমানবন্দরে সন্ত্রাসী হামলার ব্যাপারে সতর্ক করেছিল। তালেবান পুনরায় আফগানিস্তানের ‍নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর দেশ ত্যাগের জন্য বিমানবন্দরে অপেক্ষা করছেন হাজার হাজার মানুষ।

তবে হামলা চালানোর ব্যাপারে সতর্ক করা হলেও কে চালাতে পারে সে ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু বলা হয়নি।

ব্রিটেনের সশস্ত্র-বাহিনী বিভাগের উপমন্ত্রী জেমস হিপি বিবিসিকে শুধু এটুকুই বলেছিলেন, এই হুমকি প্রবল, এবং এর ফলে সময়মতো হয়তো সবাইকে কাবুল থেকে বের করে আনা সম্ভব নাও হতে পারে।

আফগানিস্তানে ব্রিটিশ বাহিনীর সাবেক অধিনায়ক কর্নেল রিচার্ড কেম্প বলেছেন, কাবুলে যেদিন থেকে মানুষজনকে সরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে সেদিন থেকেই হামলার হুমকি তৈরি হয়েছে।

‘সন্ত্রাসী হামলার হুমকি এটা যে কারো কাছ থেকে আসতে পারে - তালেবান, ইসলামিক স্টেট কিংবা আল কায়দা। এদের যে কোনোটির কাছ থেকেই আক্রমণ আসতে পারে।’

কিন্তু গত কয়েক দিন ধরে যে গোষ্ঠীটির নাম রাজনীতিক এবং নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের মুখে মুখে ফিরছে সেটি হলো তথাকথিত ইসলামিক স্টেট অফ খোরাসান প্রভিন্স (আইএসকেপি)। এর সদস্যরা এরই মধ্যে কাবুলে অনুপ্রবেশ করেছে বলে খবর দিচ্ছে বিবিসি মনিটরিং বিভাগ।

কারা এই আইএসকেপি

আফগানিস্তানে ইসলামিক স্টেট গোষ্ঠী যে নাম ব্যবহার করে তা হলো ইসলামিক স্টেট অফ খোরাসান প্রভিন্স।

এখানে খোরাসান শব্দটি এসেছে আধুনিক আফগানিস্তান ও পাকিস্তান নিয়ে যে অঞ্চল তার প্রাচীন নাম থেকে।

আইএসকেপি গোষ্ঠীর জন্ম ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসে। মূলত পাকিস্তানি তালেবান এবং আফগান তালেবানের সাবেক সদস্যদের নিয়ে এই গোষ্ঠী তৈরি হয়।

আফগানিস্তানের তালেবানের চেয়ে আইএসকেপি বহুগুণ বেশি কট্টরপন্থী। তারা আফগান তালেবানকে শত্রু বলে মনে করে। ইসলামী বিধানের তাদের ব্যাখ্যা অনুযায়ী মনে করে যে ‘মুরতাদ’ হিসেবে তালেবানকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো ‘জায়েজ’ (বৈধ/আইনসিদ্ধ)।

গত বছর ২৯ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্র এবং আফগানিস্তানের তালেবানের মধ্যে যে শান্তি চুক্তি হয় আইএসকেপি তার নিন্দা জানায় এবং বলে যে তারা আফগানিস্তানে তাদের লড়াই অব্যাহত রাখবে।

এই গোষ্ঠী একইসাথে তালেবানের আফগানিস্তান দখলকে নাকচ করে দিয়ে দাবি করে যে এক গোপন চুক্তির অংশ হিসেবে আমেরিকানরা আফগানিস্তানকে তালেবানের হাতে তুলে দিয়েছে।

২০১৯ সালে আইএসকেপি সামরিকভাবে বড় ধরনের পরাজয়ের মুখোমুখি হয় এবং ২০২০ সালের এপ্রিল মাসে তাদের বেশ কয়েকজন নেতাকে আটক করা হয়।

তবে এরপরও আইএসকেপি তার শক্তি ফিরে পায় এবং কাতারে তালেবানের সাথে শান্তি আলোচনা চলার সময়টিতে আফগানিস্তানে বেশ কয়েকটি হামলার দায়িত্ব স্বীকার করে।

বিবিসির নিরাপত্তা বিশ্লেষক ফ্র্যাংক গার্ডনার জানাচ্ছেন, শুধু গত বছরই আইএসকেপি আফগানিস্তানে ২৪টি হামলা পরিচালনা করেছে।

তারা ২০১৮ সালে ইরানের মধ্যেও একটি হামলা চালায়।

সাংগঠনিক দিক থেকে আইএসকেপি শুরুতে আফগানিস্তান এবং পাকিস্তানকে নিয়ে গঠিত হলেও ২০১৯ সালের মে মাসে ইসলামিক স্টেট ‘পাকিস্তান প্রদেশ’ নামে স্বতন্ত্র একটি গোষ্ঠীর নাম ঘোষণা করে।

আইএসকেপি যাদের বিরুদ্ধে হামলা পরিচালনা করেছে তারা হলো আফগান সামরিক বাহিনী, আফগান রাজনীতিক, তালেবান, শিয়া মুসলমান ও শিখসহ বিভিন্ন ধর্মীয় সংখ্যালঘু, মার্কিন ও নেটো বাহিনী, এবং সে দেশে কর্মরত বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান, এনজিও আর ত্রাণ সংস্থা।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫