
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
প্রার্থী স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। স্বাভাবিকভাবেই ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ভবানীপুর উপনির্বাচন আর পাঁচটা সাধারণ উপনির্বাচনের মতো নয়। বরং তা পরিণত হয়েছে মহারণে।
মমতা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন কিনা তা নির্ভর করছে ভবানীপুরে উপনির্বাচনের ওপর। হিসাব সহজ, জিতলে থাকবেন, হারলে বিদায়। ফলে রাজ্যের আরো দুটি কেন্দ্রে বিধানসভার উপনির্বাচন হলেও সবার নজর এখন ভবানীপুরের দিকেই।
আর এই মহারণে তৃণমূল বা বিজেপি কেউ কাউকে এক ইঞ্চি জমিও ছাড়তে নারাজ। সম্ভবত সেকারণেই ভোটের দিন কার্যত ভোরবেলা থেকেই আসরে নেমে গিয়েছেন দুই শিবিরের নেতানেত্রীরা।
আজ বৃহস্পতিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় সকাল ৭টা থেকে এসব কেন্দ্রে শুরু হয়েছে ভোটগ্রহণ। উপনির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা হবে আগামী ৩ অক্টোবর।
প্রচার পর্বের শুরু থেকেই ভবানীপুর কেন্দ্রে তৃণমূলের অন্যতম সেনাপতি হিসাবে উঠে এসেছেন রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। প্রচার চলাকালীন প্রায় প্রতিদিনই বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে জনসংযোগ করতে দেখা গেছে তাকে। ভোটের দিন সকালেও সেই একই ছবি দেখা গেল।
এর আগে, বিধানসভা নির্বাচনে ভবানীপুর থেকে জিতেছিলেন তৃণমূলের প্রবীণ নেতা শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। মমতার জন্য কেন্দ্রটি থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন তিনি। সেই নির্বাচনে শোভনদেবের জয়ের ব্যবধান ছিল ২৭ হাজারের বেশি। এবার উপনির্বাচনে মমতার জয়ের ব্যবধান তার চেয়েও বেশি রাখতে চায় তৃণমূল।
ভবানীপুরে মমতার বিরুদ্ধে বিজেপির হয়ে লড়ছেন প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল, সিপিএমের প্রার্থী শ্রীজীব বিশ্বাস। তারা দুজনেই পেশায় আইনজীবী। সব মিলিয়ে ১২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন এ উপনির্বাচনে। এছাড়া শমসেরগঞ্জে প্রার্থীর সংখ্যা সাত ও জঙ্গিপুরে নয়।
প্রসঙ্গত, ভবানীপুর কেন্দ্রে প্রথমে ১৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন। শেষ মুহূর্তে বিরোধী শিবিরের অনুরোধে বাহিনীর পরিমাণ বাড়িয়ে করা হয় ৩৫ কোম্পানি। অর্থাৎ রাতারাতি ২০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী বাড়ানো হয়েছে।
চলতি বছরের এপ্রিলে পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে মমতার দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেও তিনি মেদিনীপুরের নন্দীগ্রাম আসন থেকে লড়াই করে পরাজিত হন। এরপরও ভারতীয় সংবিধান মেনে তাকে মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসিয়েছিল তৃণমূল। তবে সাংবিধানিক বিধি অনুযায়ী, মমতার মুখ্যমন্ত্রীর পদ ধরে রাখতে বিধানসভা নির্বাচনের হারের ছয় মাসের মধ্যে তাকে রাজ্যের যেকোনো একটি বিধানসভা আসনে নির্বাচন করে জিতে আসতে হবে। তাই গত বিধানসভা নির্বাচনে ভবানীপুর আসনে জয়ী হওয়া তৃণমূল কংগ্রেসের শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় পদত্যাগ করেন। এতে আসনটি শূন্য হয়। এরপরই সেখানে ডাকা হয় উপ-নির্বাচন। তাতেই মুখ্যমন্ত্রী পদ টেকাতে লড়াইয়ে নেমেছেন মমতা।