প্যান্ডোরা পেপারস : পুতিনের বান্ধবীর বিলাসবহুল ফ্ল্যাট

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০২১, ১৩:৩২

ছবি- সংগৃহীত
প্যান্ডোরা পেপারসের মাধ্যমে গোপন সম্পদ ও লেনদেনের তথ্য ফাঁস হয়েছে। এতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নাম সরাসরি না থাকলেও ইউরোপের দেশ মোনাকোতে তার বান্ধবীর একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাটের সন্ধান মিলেছে।
নথি অনুযায়ী, রুশ প্রেসিডেন্টের পুতিনের আরও ঘনিষ্ঠজনদের গোপন সম্পদ রয়েছে মোনাকোতে।
২০০৩ সালের সেপ্টেম্বরে মোনাকোতে গোপন লেনদেনের মাধ্যমে একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট কেনা হয়। এর ক্রয়মূল্য ছিল ৩৬ লাখ ইউরো (প্রায় ৩৬ কোটি টাকা)। যেখানে মন্টে কার্লো স্টার কমপ্লেক্সের চতুর্থ তলায় ঝকঝকে একটি ফ্ল্যাট, দুইটি পার্কিং স্পেস, একটি স্টোররুম ও সুইমিং পুল ব্যবহারের সুযোগ রাখা হয়েছে। স্থানীয় একটি নোটারির পক্ষ থেকে ওই চুক্তিতে সই করা হয়েছিল।
তবে ওই ফ্ল্যাট যিনি কিনেছিলেন, তার পরিচয় জানা ছিল না। কাগজপত্রে ফ্ল্যাট মালিক হিসেবে নাম ছিল একটি অফশোর কোম্পানির। ব্রিটিশ ভার্জিনিয়া দ্বীপপুঞ্জে নিবন্ধিত ওই কোম্পানির নাম ব্রুকভিল ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড।
প্যান্ডোরা পেপারসে ওই ফ্ল্যাটমালিকের পরিচয় বেরিয়ে এসেছে। এসব নথি বিশ্লেষণকারী সংবাদমাধ্যমগুলোর একটি গার্ডিয়ান বলছে, ওই ফ্ল্যাটমালিক একজন নারী। তার নাম সভেতলানা ক্রিভোনোগিখ। কয়েক বছরের ব্যবধানে ক্রিভোনোগিখ অনেক বেশি সম্পদের মালিক হয়ে ওঠেন তিনি।
তার নিজের শহর রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গের একটি অভিজাত এলাকায় ফ্ল্যাট, মস্কোতে বাড়ি ও ইয়ট ছাড়াও অন্যান্য সম্পদের হয়েছিল তার নামে। ক্রিভোনোগিখের সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় ১০ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি।
একসময় দোকানে পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ করা ক্রিভোনোগিখ নব্বই দশকের পরে এসে তার একজন শুভাকাঙ্খী জোটে। তিনি আর কেউ নন ভ্লাদিমির পুতিন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট।
২০২০ সালে রাশিয়ার স্বাধীন অনুসন্ধানী ওয়েবসাইট প্রোইক্ট দাবি করে, পুতিন যখন সেন্ট পিটার্সবার্গের মেয়র ছিলেন তখনই তার সাথে বন্ধুত্ব গড়ে তোলেন ক্রিভোনোগিখ। তিনি পুতিনের প্রেমিকা ছিলেন বলেও কথিত আছে। ২০০৩ সালে ক্রিভোনোগিখ একটি সন্তানের জন্ম দেন। তার নাম এলিজাবেথ বা লুইজা। প্রোইক্ট দাবি করে, লুইজার বাবা পুতিন।
ক্রিভোনোগিখের গল্পটি শুধু প্রণয়ের নয়। এর সাথে যুক্ত আছে অর্থের বিষয়টিও। গত দুই দশক ধরে মোনাকোর ওপরে রাশিয়ার প্রভাব বেড়েছে।
স্থানীয় আইনজীবী ডমিনিক অ্যানাসটাসিস বলেন, এখানে ধনী ব্যবসায়ী ও রাশিয়ার নাগরিকদের উষ্ণ অভ্যর্থনা দেয়া হয়। এছাড়া কর স্বর্গ হিসেবে এখানে ট্যাক্স নিয়ে মাথা ঘামাতে হয় না। অর্থ কোথা থেকে এল তা নিয়ে কেউ প্রশ্ন করে না। এখানে খতিয়ে দেখার কোনো সংস্কৃতিই নেই। এখানে ট্যাক্সের কোনো ঘোষণা দেয়া লাগে না।