প্রধানমন্ত্রী আবদাল্লাহ হামদক
সেনা অভ্যুত্থানের পর সুদানের ক্ষমতাচ্যুত অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী আবদাল্লাহ হামদককে গ্রেফতার করে অজানা জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। পরে গতকাল মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) তিনি বাড়ি ফিরেছেন।
সুদানের সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, গতকাল সেনাই হামদককে বাড়ি পৌঁছে দিয়েছে। কিন্তু তার বাড়ি ঘিরে রেখেছে নিরাপত্তারক্ষীরা। কাউকে ভেতরে যেতে দেয়া হচ্ছে না। হামদকের সঙ্গে বাড়ি ফিরেছেন তার স্ত্রীও।
জাতিসংঘসহ একাধিক দেশ তার দ্রুত মুক্তির দাবি করেছিল। শেষপর্যন্ত চাপের মুখে প্রধানমন্ত্রীকে ছাড়তে বাধ্য হলো সেনা।
গত সোমবার (২৫ অক্টোবর) সকালে হঠাৎই সেনা অভ্যুত্থান হয় সুদানে। প্রধানমন্ত্রীকে ক্ষমতাচ্যূত করে ক্ষমতা দখল করেন সুদান পরিচালনাকারী সভরেন কাউন্সিলের প্রধান জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান। প্রধানমন্ত্রীসহ একাধিক মন্ত্রী ও নাগরিক সমাজের নেতাকে গ্রেফতার করে অজানা জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়।
এরপর থেকেই সুদানের রাস্তায় হাজার হাজার মানুষ নেমে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। বিক্ষোভকারীদের একাংশ সেনাশাসনের পক্ষে, অন্য পক্ষ গণতান্ত্রিক সরকারের পক্ষে।
বুরহান জানিয়েছিলেন, ২০২৩ সালে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচন হবে। কিন্তু তার আগে সেনা শাসন করবে। ক্ষমতা দখল করেই দেশ জুড়ে জরুরি অবস্থাও ঘোষণা করে দিয়েছিলেন বুরহান।
তিনি দাবি করেছেন, সেনা অভ্যুত্থান না হলে সুদানে গৃহযুদ্ধ শুরু হতো। গৃহযুদ্ধ থেকে দেশকে বাঁচাতেই তিনি একাজ করেছেন। তবে ২০২৩ সালে নির্বাচন হবে এবং তার মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকার গঠিত হবে বলে এদিনও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
আন্তর্জাতিক বিশ্ব সুদানে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পক্ষে বিবৃতি দিয়েছে। দ্রুত প্রধানমন্ত্রীসহ সবাইকে মুক্তির দাবি জানানো হয়। চাপের মুখে গতকাল মঙ্গলবার সাংবাদিকদের বুরহান জানান, প্রধানমন্ত্রীকে গ্রেফতার করা হয়নি। নিরাপত্তার কারণে তাকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আমার বাড়িতে আছেন।’ এরপরেই তাকে ছেড়ে দেয়া হয় ও বাড়ি পৌঁছে দেয়া হয়। তবে তাকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে কি না, তা এখনো স্পষ্ট নয়। অন্য মন্ত্রী ও নাগরিক সমাজের নেতাদের এখনো মুক্তি দেয়া হয়নি। তাদের অবস্থানও স্পষ্ট নয়।
এদিকে সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে সুদানে চলমান বিক্ষোভে অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছে। দেশটিতে টেলিফোন ও ইন্টারনেট সেবাও ব্যাহত হচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে। -ডয়চে ভেলে