অনাথ ও পরিত্যক্ত শিশুদের জন্য কাজ করে সংস্থাটি। ফাইল ছবি
ভারতের সরকার মাদার তেরেসার প্রতিষ্ঠিত সাহায্য সংস্থা মিশনারিজ অফ চ্যারিটির বিদেশি অনুদান পাওয়ার লাইসেন্স স্থগিত করে দিয়েছে। এই সংস্থাটি পরিত্যক্ত শিশুদের জন্য হোম ছাড়াও অনেক স্কুল ও হাসপাতাল পরিচালনা করছে।
গতকাল সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় এক ঘোষণায় ওই সংস্থাটির রেজিস্ট্রেশন বিষয়ে নতুন এই সিদ্ধান্তের কথা জানায়।
মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মিশনারিজ অফ চ্যারিটি লাইসেন্স নবীকরণের আবেদন জানিয়েছিল, কিন্তু তা খারিজ করা হয়েছে। মিশনারিজ অফ চ্যারিটির আবেদনপত্র বিবেচনা করার সময় দেখা যায়, তাদের বিরুদ্ধে বেশ কিছু প্রতিকূল ইনপুট আছে।
দেশটির হিন্দু কট্টরবাদীরা এই সাহায্য সংস্থার বিরুদ্ধে সেখানকার লোকজনদের খ্রিস্ট ধর্মে ধর্মান্তরিত করার চেষ্টার অভিযোগ করে আসছিল। যদিও সংস্থাটি বরাবরই এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে আসছে।
সোমবার এক বিবৃতিতে সংস্থাটি তাদের লাইসেন্স নবায়ন আবেদন প্রত্যাখ্যাত হওয়ার কথা জানায় এবং বিষয়টি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তারা কোনও বিদেশি তহবিল সংক্রান্ত অ্যাকাউন্ট পরিচালনা করবে না।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টুইট করে বলেছেন, কেন্দ্রীয় সরকার আসলে মিশনারিজ অফ চ্যারিটির ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করে দিয়েছে। ক্রিসমাসের সময়ে মাদার টেরেসার সংগঠনের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করে দেয়ার খবর শুনে আমি স্তম্ভিত। তাদের ২২ হাজার রোগী ও কর্মীকে এখন খাবার ও ওষুধ ছাড়া থাকতে হবে।
মিশনারিজ অফ চ্যারিটির কয়েক হাজার নান ছয়শটি মিশনে কাজ করেন। তারা অনাথ ও পরিত্যক্ত শিশুদের জন্য কাজ করেন। তারা প্রচুর অনাথাশ্রম চালান।
এই মাসে চ্যারিটির কাজকর্ম নিয়ে গুজরাটে তদন্ত শুরু হয়। কারণ তখন অভিযোগ উঠেছিল, মাদার তেরেসার সংস্থা শিশু মেয়েদের সাহায্য করার নামে বাইবেল পড়াচ্ছে, ধর্মীয় প্রার্থনা করাচ্ছে।
তবে মিশনারিজ অফ চ্যারিটি এই সব অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছিল, তারা সেবা করার ক্ষেত্রে ধর্ম দেখে না।
মেসিডোনিয়া থেকে আসা রোমান ক্যাথলিক মাদার তেরেসা ১৯৫০ সালে কলকাতাভিত্তিক এই সংস্থাটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ক্যাথলিকদের সাহায্য সংস্থার মধ্যে এটি বিশ্বের অন্যতম সবচেয়ে সুপরিচিত একটি। মাদার তেরেসার কর্মভূমি ছিল কলকাতা। কলকাতার গরিব, অসুস্থ মৃত্যুপথযাত্রী, বাচ্চাদের পাশে থেকেছেন সব সময়।
মানবিক কার্যক্রমের জন্য ১৯৭৯ সালে নোবেল শান্তি পুরষ্কার পেয়েছিলেন তিনি। আর তার মৃত্যুর ১৭ বছর পর ২০১৬ সালে পোপ ফ্রান্সিস তাকে সেইন্ট বা সন্ত ঘোষণা করেন। -বিবিসি ও ডয়চে ভেলে