স্টেম সেল প্রতিস্থাপনে বিশ্বে প্রথম নারী এইচআইভি মুক্ত

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৯:৪৮

প্রতীকী ছবি
বিশ্বের প্রথম নারী ও তৃতীয় ব্যক্তি হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের এক নাগরিক প্রাণঘাতী এইডস রোগমুক্ত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা। এই রোগের জন্য দায়ী এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত এক নারীর লিউকোমিয়া চিকিৎসার জন্য স্টেম সেল প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল।
এতে ওই ভাইরাসের কার্যক্ষমতা কমে গেছে। এরপর গত ১৪ মাস ধরে ওই নারী এইচআইভি সংক্রমণমুক্ত আছেন।
গতকাল মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) যুক্তরাষ্ট্রের ডেনভারে এক মেডিকেল কনফারেন্সে বিষয়টি উত্থাপন করা হয় এবং প্রথমবারের মতো এই পদ্ধতি এইচআইভির কার্যকরী নিরাময় হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।
এইচআইভি রোগী নিয়ে কাজ করা সংস্থা এইডস সোসাইটির প্রেসিডেন্ট শ্যারন লিউইন বলেন, এ ধরনের সেরে ওঠার ঘটনা তৃতীয়বারের মতো ঘটল। আর কোনও নারীর ক্ষেত্রে এটাই প্রথম।
এর আগে স্টেম সেল প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে এইচআইভি থেকে সেরে ওঠা দুইজনই ছিলেন পুরুষ। তাদের ক্ষেত্রে অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপনে প্রাপ্তবয়স্ক স্টেম সেল ব্যবহার করা হয়েছিল। কিন্তু এবারে নাভিরজ্জুর রক্ত ব্যবহার করা হয়।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই প্রতিস্থাপন পদ্ধতি নাভিরজ্জুর রক্তের সঙ্গে সম্পর্কিত। যা এইচআইভি আক্রান্ত বেশিরভাগ রোগীর ক্ষেত্রে উপযোগী হওয়ার বিষয়টি ঝুঁকিপূর্ণ।
ক্যান্সারের চিকিৎসার অংশ হিসেবে ওই রোগীর নাভিরজ্জুর রক্ত প্রতিস্থাপন করা হয় এবং এরপর থেকে তাকে আর এইচআইভি চিকিৎসার অ্যান্টিরেট্রোভাইরাল থেরাপি নেওয়ার প্রয়োজন হয়নি।
বিজ্ঞানীদের ধারণা, প্রাকৃতিকভাবে এইডসপ্রতিরোধী ব্যক্তিদের কাছ থেকে স্টেম সেল ট্রান্সপ্ল্যান্ট করা হলে গ্রহীতাদের ইমিউন সিস্টেম এইচআইভি প্রতিরোধের বিকাশ ঘটাতে পারে।
এই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ক্যালিফোর্নিয়া, লস অ্যাঞ্জেলেস ও জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা। তারা ক্যান্সার ও অন্যান্য গুরুতর অবস্থার চিকিৎসার জন্য স্টেম সেল প্রতিস্থাপন করা হয়েছে, এমন ২৫ রোগী পর্যবেক্ষণ করেন।
পর্যবেক্ষণে থাকা রোগীদের প্রথমে ক্যান্সার কোষ ধ্বংস করতে কেমোথেরাপি দেওয়া হয়। এরপর নির্দিষ্ট জেনেটিক মিউটেশনসহ ব্যক্তিদের কাছ থেকে ট্রান্সপ্ল্যান্ট স্টেম সেল গ্রহণ করে তা প্রতিস্থাপন করা হয়। এতে রোগীর শরীরে এইচআইভি প্রতিরোধী ক্ষমতা তৈরি হয়।
এইচআইভি ভাইরাসটি প্রথম শনাক্ত করা হয় ১৯৮১ সালে। এতে আক্রান্ত ব্যক্তির রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায় এবং নিউমোনিয়া বা অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঝুঁকি বেড়ে যায়।
বর্তমানে সারাবিশ্বে তিন কোটি ৭০ লাখ মানুষ এইচআইভিতে আক্রান্ত, যাদের অধিকাংশই সাব-সাহারান আফ্রিকায় বসবাস করেন। -বিবিসি ও ডেইলি স্টার