গত সপ্তাহে বিশ্বব্যাপী করোনভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১৯ শতাংশ কমেছে এবং মৃত্যুর সংখ্যা স্থিতিশীল রয়েছে বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে।

তবে গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে প্রায় ১১ হাজার মানুষ। একই সময়ে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ২১ লাখ। এসময়ে বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে জার্মানিতে। অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রাণহানির তালিকায় এরপরই রয়েছে ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, স্পেন, পোল্যান্ড, মেক্সিকো ও ইউক্রেন।

জরিপ পর্যালোচনাকারী সংস্থা ওয়ার্ল্ডোমিটারের আজ বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সকালের তথ্য অনুযায়ী, মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত ভাইরাসে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪১ কোটি ৭৯ লাখ ৩৩ হাজার ৯৬৭ জনে। আর বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৫৮ লাখ ৬৭ হাজার ৬৪৮ জনে।

মহামারি নিয়ে জাতিসংঘের স্বাস্থ্য সংস্থার গত মঙ্গলবারের (১৫ ফেব্রুয়ারি) প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত সপ্তাহে বিশ্বব্যাপী এক কোটি ৬০ লাখ মানুষ নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে এবং প্রায় ৭৫ হাজার মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরই একমাত্র অঞ্চল যেখানে গত সপ্তাহে করোনা ১৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া প্রায় ৩৭ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে ৩৮ শতাংশ ও পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মৃতের সংখ্যা বেড়েছে।

রাশিয়ায় নতুন করোনা সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে দেশটিতে ও পূর্ব ইউরোপের অন্য কয়েকটি দেশে শনাক্ত দ্বিগুণ হয়েছে, যার অধিকাংশই ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, বিশ্বব্যাপী ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে আতংকের মাঝে করোনার আলফা, বিটা ও ডেল্টাসহ অন্য সব রূপগুলোর হ্রাস অব্যাহত রয়েছে। গত সপ্তাহে বিশ্বের বৃহত্তম ভাইরাস ডাটাবেসে আপডেট করা চার লাখের বেশি করোনাভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্সের মধ্যে ৯৮ শতাংশের বেশি ছিল ওমিক্রন।

ডব্লিউএইচও জানায়, ওমিক্রনের বিএ.২ ধরন ধারাবাহিকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং দক্ষিণ আফ্রিকা, ডেনমার্ক, যুক্তরাজ্য ও অন্যান্য দেশে এর ব্যাপকতা বেড়েছে।

সংস্থাটির আফ্রিকার পরিচালক ড. মাতশিদিসো মোয়েতি গত সপ্তাহে বলেছেন, কম টিকা দেয়ার হার সত্ত্বেও আমরা সুড়ঙ্গের শেষে আলোর পথে রয়েছি এবং আফ্রিকা এর তীব্র মহামারি পর্ব থেকে উত্তরণ করছে।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। চীনে করোনায় প্রথম কোনও রোগীর মৃত্যু হয় ২০২০ সালের ৯ জানুয়ারি। তবে তার ঘোষণা আসে ১১ জানুয়ারি। আর ১৩ জানুয়ারি চীনের বাইরে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় থাইল্যান্ডে। পরে বিভিন্ন দেশে করোনা ছড়িয়ে পড়ে। গত ২ ফেব্রুয়ারি চীনের বাইরে করোনায় প্রথম কোনও রোগীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটে ফিলিপাইনে।

২০২০ সালের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে ‘মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে। এর আগে ২০ জানুয়ারি জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে ডব্লিউএইচও।