শ্রীলঙ্কার এক নাগরিকের বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ এনে তাকে পিটিয়ে খুন করে দেহ পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় ছয়জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের একটি সন্ত্রাসবিরোধী আদালত। এছাড়া আরো ৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। 

গতকাল সোমবার (১৮ এপ্রিল) একই মামলায় অভিযুক্ত ৮৮ জনের মধ্যে বাকি আসামিদের দুই থেকে পাঁচ বছর মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

বিচারক জানিয়েছেন, যাদের বিরুদ্ধে গণপিটুনিতে যুক্ত থাকার যথেষ্ট প্রমাণ মিলেছে, তাদেরই শাস্তি দেওয়া হলো। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ছয়জনই মৌলবাদী দল তেহরিক-এ-লাব্বাইওকের স্থানীয় নেতাকর্মী।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া ৯ জনকে জরিমানা হিসেবে দুই লাখ রুপি করে এবং মৃতের উত্তরাধিকারীর হাতে আরো দুই লাখ রুপি করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।

গত বছরের ৩ ডিসেম্বর শিয়ালকোটের দিয়াওয়াদানাগে একটি পোশাক কারখানার জেনারেল ম্যানেজার প্রিয়ন্ত কুমারাকে (৪৭) পিটিয়ে মারে প্রায় ৮০০ মানুষ। তেহরিক-এ-লাব্বাইক নামে ওই সংগঠন অভিযোগ করেছিল, কারখানার দেওয়ালে একটি পোস্টার প্রিয়ন্ত ছিড়ে ফেলে দিয়েছিলেন, যাতে উর্দুতে কিছু ধর্মীয় কথা লেখা ছিল। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই প্রিয়ন্তকে পিটিয়ে মারা হয়। পুলিশ অভিযুক্ত ৮০ জনেরই মৃত্যুদণ্ডের আর্জি জানিয়েছিল।

ওই ঘটনা গোটা পাকিস্তানে আলোড়ন তোলে এবং তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান একে ‘লজ্জাজনক দিন’ বলে আখ্যা দেন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া হত্যার দিনের ভিডিওতে দেখা যায়, উন্মত্ত জনতা দিয়াওয়াদানাগেকে তার কর্মস্থল থেকে টেনে হিঁচড়ে বের করে এনে পিটিয়ে মেরে ফেলে। তারা মরদেহ পুড়িয়ে দেয়, ভিড়ের অনেককেই পুড়ে যাওয়া মরদেহের সাথে সেলফি তুলতেও দেখা গেছে। -বিবিসি ও আনন্দবাজার পত্রিকা