
ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির (মার্কসবাদী) সিপিএমের পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম।
আসামি ধরতে ব্যর্থতার জেরে পুলিশকে কুকুরের সাথে তুলনা করায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির (মার্কসবাদী) সিপিএমের পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম।
তবে এবার এই মন্তব্যের জেরে কুকুরই অপমান হয়েছে বলে ফের মন্তব্য করে কুকুরের কাছেই ক্ষমা চেয়েছেন বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদ।
মহম্মদ সেলিম বলেন, আমি পুলিশকে কুকুরের সঙ্গে তুলনা করেছি বলে তৃণমূলের লোকেরা নানা কথা বলছে। আমি সাধারণত এরকম কথা বলি না।কিন্তু এবার আমার বক্তব্যের জন্য আমি ক্ষমা চাইছি। পুলিশকে কুকুরের সঙ্গে তুলনা করে আমি কুকুরের অপমান করেছি।
এরপর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, কেন্দ্র আর রাজ্যের পুলিশে কোনও ফারাক নেই। কুকুরকে সঠিকভাবে প্রশিক্ষণ দিলে সে নিশ্চিতভাবে খুনি ধরে দেবে। কিন্তু পুলিশ খুনি ধরতে পারে না। তাই এসপির জায়গায় ২-৩টা বিদেশি কুকুরকে প্রশিক্ষণ দেওয়া ভালো। এসপির কাজ কি শুধু অনুব্রতর কথা মতো মিথ্যা মামলা সাজানো?
গত ৩০ মার্চ দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুরে কোম্পানি পুকুর থেকে সিপিআইএম কর্মী বিদ্যুৎ মণ্ডলের দেহ উদ্ধার করা হয়। তবে গত একমাসের বেশি সময়েও ওই ঘটনায় কোন আসামিকে ধরতে পারেনি পুলিশ।
এরই জেরে গত শনিবার জুলপিয়ার কয়লা মোড়ে সিপিআইএম আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় সেলিম বলেন, এখানে আমরা প্রতিবাদ সভা করছি আর ওরা করে ওখানে গিয়েছে। ঘটনার দিনই তো যাওয়া উচিত ছিল। বয়ান রেকর্ড করা উচিত ছিল। আজ নিহতের মাকে জিজ্ঞাসা করছে কার ওপরে সন্দেহ হয়। যার নাম বলবে তার কাছে যাবে? এর জন্য পুলিশ রাখার কী দরকার ছিল। কয়েকটা কুকুর পুষলেই তো হয়। শুঁকে শুঁকে খুনিকে ধরিয়ে দিতে পারত।
সেলিমের এমন মন্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ।
তিনি বলেন, যারা নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুকে ‘তোজোর কুকুর’ বলতেন, তাদের এই সংস্কৃতি হবেই। এটা তাদের জেনেটিক সমস্যা। সেলিম যা করলেন, তাতে আমাদের উচিত দলমত নির্বিশেষে এই সংস্কৃতির তীব্র নিন্দা করা। কারণ আমাদের ঘরের ছেলেরা পুলিশে চাকরি করেন।
প্রসঙ্গত, পশ্চিমবঙ্গে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির (মার্কসবাদী) নেতৃত্বাধীন বামফ্রন্ট সরকার টানা তিন দশকেরও বেশি সময় (১৯৭৭-২০১১) ক্ষমতায় আসীন ছিল।
বিশ্বের অন্য কোথাও এত সুদীর্ঘ সময় গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে কোনো কমিউনিস্ট পার্টি ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থাকেনি।