
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফাইল ছবি
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মার্কিন কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে অভিশংসন বিচার শুরু হয়েছে।
এই বিচার নিয়ে বিভক্ত ক্ষমতাসীন রিপাবলিকান ও বিরোধী ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতারা। এসময় ডেমোক্র্যাটরা অভিশংসনের পক্ষে নতুন প্রমাণ সংগ্রহে বারবার প্রচেষ্টা চালালেও তা নাকচ করেছে সিনেট।
অপরদিকে রিপাবলিকান সিনেটরদের চাপের মুখে বিচারের শুনানি দ্রুত শেষ করার প্রস্তাবের পক্ষে সমর্থন দিয়েছেন সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতা মিচ ম্যাককনেল।
ডেমোক্র্যাটরা বলেছেন, এটা ধামাচাপা দেবার ঘটনা ছাড়া আর কিছুই হবে না।
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার ও কংগ্রেসের তদন্তে বাধা দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি। গতকাল মঙ্গলবার সুইজারল্যান্ডের দাভোসে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামে নিজের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগকে ‘ভুয়া’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি।
সিনেটররা নিরপেক্ষ বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালনের অঙ্গীকার করেছেন। মার্কিন প্রধান বিচারপতি জন রবার্টসের নেতৃত্বে এই বিচার প্রক্রিয়ায় সপ্তাহে ছয়দিন ছয় ঘণ্টা করে শুনানি চলবে। এ নিয়ে তৃতীয় কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট অভিশংসন বিচারের মুখে পড়লেন এবং কতদিন ধরে এটি চলবে সেটাও অনিশ্চিত।
ডেমোক্র্যাট নিয়ন্ত্রিত প্রতিনিধি পরিষদে গত মাসে অভিশংসিত হন মিস্টার ট্রাম্প। কিন্তু সিনেটে রিপাবলিকানদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় ধারণা করা হচ্ছে, তারা প্রেসিডেন্টকে দোষী সাব্যস্ত করে তাকে তার দফতর থেকে সরাবে না।
সিনেটে ট্রাম্পের বিচারপ্রক্রিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় গতকাল স্থানীয় সময় বেলা দেড়টার দিকে (বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ১২টা)।
এই বিচার শুরুর জন্য গত সোমবার রিপাবলিকানদের সিনেটর মিচ ম্যাককোনেল নিয়মকানুনের একটি খসড়া প্রকাশ করেন। তাতে দেখা যায়, দুই পক্ষ বিচারের শুনানির জন্য বেশি সময় পাবে না। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তারা দুইদিন মিলে ২৪ ঘণ্টা সময় পাবে।
এছাড়া নতুন করে যাতে সাক্ষ্য গ্রহণ না করতে হয়, সে ব্যাপারে সিনেটকে সুযোগ করে দেয়া হয়েছে এই রিপাবলিকান সিনেটরের প্রস্তাবে।
ম্যাককোনেল বলেছেন, ১৯৯৯ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের অভিশংসনে যে প্রক্রিয়া অবলম্বন করা হয়েছিল, সেখান থেকে এই খসড়াগুলো গ্রহণ করা হয়েছে।
তবে বিশ্লেষকেরা বলেন, ক্লিনটনের অভিশংসন প্রক্রিয়ার সঙ্গে ট্রাম্পের প্রক্রিয়ার পার্থক্য রয়েছে। ক্লিনটনের অভিশংসনের সময় সিনেটরদের যে সময় দেয়া হয়েছিল, তা কীভাবে, কোন কাজে ব্যবহার করবেন, সে ব্যাপারে কোনো বাঁধাধরা নিয়ম ছিল না। কিন্তু এবার সিনেটকে নিয়মের মধ্যে ফেলা হয়েছে।
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ:
প্রথমত, প্রেসিডেন্ট ইউক্রেনের সরকারের কাছে তাকে নভেম্বরে পুনঃনির্বাচিত হতে সাহায্য করতে সহায়তা চাইছে।
অভিযোগ রয়েছে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোডিমির জেলেনস্কির সাথে এক ফোনালাপে, ডেমোক্রেটিক দলের হোয়াইট হাউসের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী জো বাইডেনের বিরুদ্ধে দুর্নীতিবিরোধী তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন। বাইডেনের ছেলে হান্টার ইউক্রেনের জ্বালানি ফার্ম বুরিশমার একজন বোর্ড সদস্য। তা না হলে তিনি সামরিক সহায়তা স্থগিত রাখার কথা বলেন।
দ্বিতীয় অভিযোগটি হচ্ছে, গত বছর অভিশংসন শুনানিতে হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তাদের সাক্ষ্য দিতে অসম্মতি জানান, যার মাধ্যমে মিস্টার ট্রাম্প কংগ্রেসকে বাধা দেন। -বিবিসি