সংঘাত, সহিংসতা ও অন্যান্য সংকটের কারণে গত বছর প্রায় তিন কোটি ৬৫ লাখ শিশু বাস্তুচ্যুত হয়েছে, যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর রেকর্ড করা সর্বোচ্চ সংখ্যা। এই সংখ্যা ২০২০ সালের তুলনায় ২২ লাখ বেশি।

এই শিশুদের মধ্যে এক কোটি ৩৭ লাখ সংঘাত ও সহিংসতার কারণে উদ্বাস্তু হয়েছে এবং অন্যান্য দেশে আশ্রয় প্রার্থনা করেছে। এছাড়া প্রায় দুই কোটি ২৮ লাখ শিশু নিজ দেশের ভেতরে বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

তবে এই পরিসংখ্যানের ভেতরে জলবায়ু ও পরিবেশগত বিপর্যয়ের কারণে এবং ইউক্রেন যুদ্ধসহ ২০২২ সালের নতুন বাস্তুচ্যুতদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি বলে ইউনিসেফ গতকাল শুক্রবার (১৭ জুন) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে। 

আগামী ২০ জুন বিশ্ব শরণার্থী দিবসের আগে আশ্রয়প্রার্থী, অভিবাসী ও বাস্তুচ্যুত শিশুদের নিরাপত্তা ও জরুরি সেবাপ্রাপ্তি জোরদার করতে সব দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইউনিসেফ।

শিশুদের কল্যাণে কাজ করা জাতিসংঘের বিশেষ সংস্থা ইউনিসেফ জানায়, বাস্তুচ্যুত শিশুদের সংখ্যার এই রেকর্ড পৃথিবীব্যাপী সংকটের একটি প্রত্যক্ষ ফলাফল। এর মধ্যে আছে আফগানিস্তানের তীব্র ও দীর্ঘস্থায়ী সংঘাত, কঙ্গো বা ইয়েমেনের মতো দেশগুলোর দুর্বল সরকার ব্যবস্থা ও জলবায়ু পরিবর্তনের ধাক্কা।

ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল বলেন, আমরা এই পরিসংখ্যানের তথ্য উপেক্ষা করতে পারি না। সংঘাত ও সংকটের কারণে বাস্তুচ্যুত শিশুদের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। তাই তাদের সহযোগিতা করা আমাদের দায়িত্ব।

তিনি আরো বলেন, আমি আশা করি যে এত সংখ্যক শিশুদের বাস্তুচ্যুত হওয়া থেকে রক্ষা করতে সরকারগুলো অগ্রাধিকারভিত্তিতে প্রতিরোধ ব্যবস্থা নেবে। যখন তারা আশ্রয়হীন হয়, তখন তাদের শিক্ষা, নিরাপত্তা ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সেবাপ্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হবে যা বর্তমানে ও ভবিষ্যতে তাদের সুস্থতা ও উন্নয়নে সহায়তা করে।

ইউনিসেফ জানায়, ইউক্রেনের যুদ্ধের কারণে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০ লাখের বেশি শিশুকে দেশ ছেড়ে পালাতে হয়েছে এবং ৩০ লাখ শিশুকে দেশের ভেতরে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে হয়েছে। এছাড়া আফ্রিকার সাহিল অঞ্চলে খরা এবং বাংলাদেশ, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকায় ভয়াবহ বন্যার মতো চরম প্রাকৃতিক কারণেও শিশুরা ও তাদের পরিবারগুলো বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হচ্ছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরো উল্লেখ করা হয়েছে যে ২০২১ সালে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে নতুন করে ৭৩ লাখ শিশু বাস্তুচ্যুত হয়েছে। -ডেইলি স্টার