বিবাহবিচ্ছেদের টিকটক বানানোয় প্রাক্তন স্ত্রীকে হত্যা

ডেস্ক রিপোট
প্রকাশ: ০৯ আগস্ট ২০২২, ১৯:৫৮

সানিয়া খান। ছবি- সংগৃহীত
বিবাহ বিচ্ছেদের পরেও শান্তিতে ছিলেন না পাকিস্তানি বংশোদ্ভুত মার্কিন নাগরিক সানিয়া খান। এ নিয়ে সামাজিক মাধ্যম টিকটকে নিজের অভিজ্ঞতা জানিয়ে ভিডিও বার্তা তৈরি করেছিলেন তিনি। বলেছিলেন, বিয়ে ভাঙ্গার পর মনে হচ্ছে তার জীবনটাই ব্যর্থ হয়ে গেছে।
এ কারণে নিজের বাসা শিকাগো ছেড়ে ঘুরতে যেতে চেয়েছিলেন ইলিনয় শহরে। ব্যাগপত্র গুছিয়ে তৈরিও হয়েছিলেন তিনি। তবে ঘর থেকে বের হওয়ার আগেই সেখানে এসে হাজির হয় তার সাবেক স্বামী। এরপর সানিয়াকে মাথার পেছন থেকে গুলি করে হত্যা করে সে। স্ত্রীকে হত্যার পর নিজের বন্দুক দিয়ে আত্মহত্যা করেন স্বামী রাহিলও।
আজ মঙ্গলবার (৯ আগস্ট) শিকাগো সান-টাইম পত্রিকার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সানিয়া খান শিকাগোতে থেকে পেশাদার ফটোগ্রাফার হিসেবে কাজ করতেন।
সানিয়ার বন্ধু শেখ মেহরু বিবিসিকে বলেছেন, সে যখন নিজের ব্যক্তি জীবনে খুব খারাপ সময় পার করছিলেন তখনও নিয়মিত বন্ধুদের খোঁজখবর নিতেন। জিজ্ঞেস করতে, দিনকাল কেমন যাচ্ছে।
বিবিসি বলছে, সামাজিক মাধ্যমগুলোর মধ্যে ইনস্টাগ্রামে প্রথম নিজের একাউন্ট খোলেন সানিয়া। সেখানে নিজের ফটোগ্রাফি সম্পর্কে লিখেছেন, ‘আমি মানুষকে শেখানোর চেষ্টা করি কীভাবে নিজেকে ভালবাসতে হয়। সেটা ক্যামেরার সামনে কীভাবে ফুটিয়ে তুলতে হয়।’
সানিয়া সাধারণত বিয়ে, মাতৃত্ব, বেবি শাওয়ার এর মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে কাজ করতেন। বন্ধু-বান্ধবের ছবি তুলতেও পছন্দ করতেন। এক কথায় ফটোগ্রাফি ভালবাসতেন সানিয়া।
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রায় পাঁচ বছর প্রেমের সম্পর্কের পর ২০২১ সালে সানিয়া রাহিলকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর তারা শিকাগোতে পাড়ি জমান। খুব জাকজমকে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়।
এতে বলা হয়, সানিয়া জানতেন না রাহিলের দীর্ঘ দিনের মানসিক সমস্যা ছিলো। বিয়ের আগে তাদের দীর্ঘদিনের সম্পর্ক থাকলেও তারা দুজন অনেক দূরে বাস করতো। মাঝে মাঝে তাদের দেখা হতো।
গত ডিসেম্বরে সানিয়া বুঝতে পারেন তার স্বামীর মানসিক সমস্যা আছে। সানিয়ার বাল্যবন্ধু বলেছেন, স্বামীর মানসিক সমস্যা আছে বুঝতে পারার পর থেকে নিজেকে অনিরাপদ মনে করছিলেন।
মৃত্যুর ঘটনা জানার পর ফলোয়ারদের একজন বিষয়টি টিকটক এ শেয়ার করেছেন। ওই পোস্টে চলছে দীর্ঘ কমেন্ট এবং পাল্টা কমেন্ট।
কেউ কেউ বলছেন, সবসময় নারীদেরকে নিজের আত্মরক্ষার পরামর্শ দেয়া হয়। কিন্তু সবচেয়ে জরুরি নিজের ছেলে সন্তানকে শেখানো, তারা যেন নারীদের শ্রদ্ধা করে। পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটাতে এই শিক্ষাটা পরিবার থেকেই শুরু করতে হবে।