ভেন্টিলেশনে সালমান রুশদি, হারাতে পারেন একটি চোখ

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১৩ আগস্ট ২০২২, ০৯:০১

ব্রিটিশ ভারতীয় ঔপন্যাসিক ও প্রাবন্ধিক সালমান রুশদি। ছবি: সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে এক অনুষ্ঠানের মঞ্চে ছুরিকাঘাতে আহত ব্রিটিশ ভারতীয় ঔপন্যাসিক ও প্রাবন্ধিক সালমান রুশদি বর্তমানে ভেন্টিলেটর সাপোর্টে আছেন এবং কথা বলতে পারছেন না। আজ শনিবার (১৩ আগস্ট) বিবিসির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সালমান রুশদির ব্যক্তিগত কর্মকর্তা অ্যান্ড্রু ওয়াইলি জানান, ‘তার অবস্থা তেমন একটা ভালো না। তিনি এক চোখ হারাতে পারেন। তার বাহুতে থাকা স্নায়ুগুলো কেটে ফেলা হয়েছে। ছুরিকাঘাতে তার লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
১৯৮৮ সালে প্রকাশিত ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’ বই লেখার কারণে বহু বছর ধরেই মৃত্যুর হুমকির মুখে রয়েছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত লেখক সালমান রুশদি। তার ওপর হামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে হাদি মাতার (২৪) নামে নিউ জার্সির এক বাসিন্দাকে আটক করা হয়েছে।
নিউইয়র্ক স্টেট পুলিশ জানিয়েছে, গতকাল শুক্রবার( ১২ আগস্ট) সন্দেহভাজন ওই ব্যক্তি মঞ্চে উঠে হামলা চালায়।
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) একজন প্রতিবেদক জানিয়েছেন, চৌতাকুয়া ইনস্টিটিউশনের মঞ্চে বক্তৃতা করার সময় একজন দৌঁড়ে এসে সালমান রুশদিকে ঘুষি ও ছুরিকাঘাত করতে থাকে। তিনি মেঝেতে পড়ে গেলে লোকটি ক্ষান্ত হন।
ধর্ম অবমাননার অভিযোগে ১৯৮৮ সাল থেকে ইরানে সালমান রুশদির উপন্যাস ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ ঘটনার এক বছর পর ইরানের প্রয়াত নেতা আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনি রুশদির মৃত্যুদণ্ডের হুকুম দিয়ে ফতোয়া জারি করেন।
এমন কি তাকে হত্যা করতে পারলে তিন মিলিয়ন ডলারের বেশি পুরস্কারও ঘোষণা করা হয়।
ইরানের সরকার অনেক আগেই খোমেনির ওই ঘোষণা থেকে বেরিয়ে আসলেও রুশদিবিরোধী মনোভাব বজায় ছিল। ২০১২ সালে দেশটি একটি আধা-সরকারি ধর্মীয় ফাউন্ডেশন রুশদির জন্য ঘোষণা করা অর্থের পরিমাণ ২ দশমিক ৮ মিলিয়ন থেকে বাড়িয়ে ৩ দশমিক ৩ মিলিয়ন করে।
রুশদি সে সময় ওই হুমকি প্রত্যাখ্যান করে বলেছিলেন, মানুষের পুরস্কারে প্রতি আগ্রহী হওয়ার কোনো প্রমাণ নেই।
প্রসঙ্গত, ভারতীয় বংশোদ্ভূত লেখক সালমান রুশদি ১৯৮১ সালে ‘মিডনাইট’স চিলড্রেন’ লিখে খ্যাতি অর্জন করেন। কেবল যুক্তরাজ্যেই বইটির দশ লাখের বেশি কপি বিক্রি হয়। তবে নিজের চতুর্থ বই ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’ লেখার পর প্রায় দশ বছর পালিয়ে থাকতে হয় তাকে। উত্তরাধুনিক এই উপন্যাসটিকে ধর্ম অবমাননাকারী বলে মনে করেন মৌলবাদীরা।