ইরানে ‘হিজাববিরোধী’ বিক্ষোভে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩১

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২২, ২২:৩৫

বিক্ষোভে উত্তাল ইরানের বিভিন্ন শহর। ছবি: সংগৃহীত।
ইরানে নৈতিকতা পুলিশের হেফাজতে এক তরুণীর মৃত্যুর প্রতিবাদে শুরু হওয়া বিক্ষোভে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১ জনে। আজ বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) ওসলোভিত্তিক একটি এনজিও এ দাবি করে। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি’র এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানা গেছে।
এদিকে চলমান বিক্ষোভের ষষ্ঠ দিনেও উত্তাল ইরান। জাতিগত কুর্দি অধ্যুষিত উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে প্রথমে প্রতিবাদ শুরু হলেও তা এখন দেশটির ছোট বড় অনেক শহরেই ছড়িয়ে পড়েছে।
ছয় দিনের বিক্ষোভে নিহতের সংখ্যা উল্লেখ করে ইরান হিউম্যান রাইটস (আইএইচআর) পরিচালক মাহমুদ আমিরি-মোগাদ্দাম এক বিবৃতিতে বলেছেন, মৌলিক অধিকার ও মানবিক সম্মান ও শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে গুলির প্রতিবাদে ইরানের জনগণ রাজপথে নেমে এসেছেন।
সংস্থাটি বলছে, ৩০টি নগর ও শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। এতে করে বিক্ষোভকারী ও সামাজিক অ্যাক্টিভিস্টদের গণগ্রেপ্তারের আশঙ্কা বাড়ছে।
আইএইচআর বলছে, বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত নিহতদের মধ্যে গতকাল বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাতে নিহত হয়েছে ১১ জন। মাজানদারান প্রদেশের আমোল শহরে এই হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। একই প্রদেশের বাবোল শহরে নিহত হয়েছেন আরও ছয় জন। এছাড়া তাবরিজ শহরে আরেকজন নিহত হয়েছেন বলে উল্লেখ করেছে সংস্থাটি।
এর আগে, কুর্দিদের মানবাধিকার সংস্থা হেনগাও গণমাধ্যমকে জানায়, অন্তত ১০ বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) ৩ জন নিহত হন। সংস্থাটির দাবি, এর আগে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে আরো ৭ জন নিহত হয়েছেন। ইরানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যমের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছিল বার্তা সংস্থা এএফপি।
ইরানি কর্তৃপক্ষ বিক্ষোভকারীদের মৃত্যুর সাথে সরকারের জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেছে। ইতোমধ্যে ১৫টি শহর থেকে হাজারেরও বেশি বিক্ষোভকারীকে আটক করেছে নিরাপত্তা বাহিনী।
জানা যায়, যথাযথভাবে হিজাব না পরার অভিযোগে মাহসা আমিনিকে (২২) আটক করে ইরানের নৈতিকতা পুলিশ ‘গাশত-ই এরশাদ’। এরপরই তিনি অসুস্থ হয়ে কোমায় চলে যান। পরে গত শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) হাসপাতালের চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
এ ঘটনায় গত শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) থেকে ইরানের পশ্চিমাঞ্চলে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়। মাহসা আমিনিকে পুলিশি হেফাজতে মারধর করে হত্যা করার অভিযোগ আনেন বিক্ষোভকারীরা।
মাহসা আমিনির মৃত্যুতে ইরানিদের মনে নানা বিষয় নিয়ে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। যার মধ্যে আছে স্বাধীনতা ও অর্থনৈতিক বিধিনিষেধ। বিক্ষোভে নারীদের অংশগ্রহণ ছিল লক্ষণীয়। অনেকেই বিক্ষোভের সময় হিজাব ঝাঁকান। কেউ কেউ হিজাবে আগুন ধরিয়ে দেন। আবার কয়েকজন নারী জনসম্মুখে নিজের মাথার চুল কেটে ফেলেন।